ক্রীড়া প্রতিবেদক : ২০১২ বিপিএলের প্রথম আসরে সাত ম্যাচ হেরেছিল সিলেট রয়্যালস। সাত ম্যাচ হেরে একই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছিল সিলেটের আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজি সিক্সার্স। তাদের ছাড়িয়ে বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারার রেকর্ড নিজেদের করে নেয় সিলেট সানরাইজার্স। ২০২১-২২ মৌসুমে এক জয় পাওয়া সানরাইজার্স হেরেছিল ৮টি ম্যাচে। ঢাকা পর্বের শেষে দিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে হেরে তাদের সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছিল দুর্দান্ত ঢাকা। এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে গেলেন তাসকিন আহমেদরা।
কুমিল্লার বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করা ঢাকার হেরেছে সবশেষ ৯ ম্যাচের সবকটিতে। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে বড় রান তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ঢাকায়। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় তামিম ইকবালের দলের বিপক্ষে হারতে হয়েছে তাসকিনের দলকে। ২৭ রানের হারে বিপিএলের এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি হারের রেকর্ড গড়লো ঢাকা। তাদের এমন হতাশার রেকর্ড থেকে মুক্তি পেল সানরাইজার্স।
চট্টগ্রামে ১৮৭ রান তাড়ায় ছক্কা মেরে রানের খাতা খুললেন নাইম শেখ। কেশভ মহারাজের ঝুলিয়ে দেয়া স্লগ ছক্কা মারার পরের বলে মিড অফ দিয়ে মারলেন চার। নিজের জোনে পেয়ে চতুর্থ বলেও উড়িয়ে মারতে গেলেন নাইম। ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে দারুণ এক ক্যাচ নিলেন আহমেদ শেহজাদ। ছন্দে থাকা বাঁহাতি নাইমকে তাই ফিরতে হলো ইনিংসের প্রথম ওভারে, মাত্র ১০ রান করে। পরের ওভারে আরেক ওপেনার ফিরেছেন সাইফউদ্দিনের বলে।
ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন। বিপিএলের প্রথম ম্যাচে ৪ রানের বেশি করতে পারলেন না অ্যাডাম রসিংটন। একই ওভারে সাইফ হাসানকেও ফিরিয়েছেন সাইফউদ্দিন। শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে কভারে ক্যাচ দিয়েছেন ২ রান করে। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে শন উইলিয়ামসকেও হারায় ঢাকা।
সাইফউদ্দিনের বলে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে থার্ডম্যানে থাকা খালেদ আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। জিম্বাবুয়েল এই ব্যাটার এদিন করেছেন মাত্র ১২ রান। একপ্রান্তে অ্যালেক্স রস থাকতেই বিদায় নেন এসএম মেহেরব এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা। ৮ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটারের সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচ খেলে কেবল দুটি ম্যাচে দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন।
বাকিরা আসা-যাওয়ার মিছিলে এদিন ঢাকার একমাত্র ব্যাটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন রস। ৩৬ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এই ব্যাটার। বরিশালের বিপক্ষে ঢাকা হারলেও শেষ পর্যন্ত রস অপরাজিত ছিলেন ৪৯ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলে। বরিশালের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন ও খালেদ।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে খানিকটা ধুঁকেছেন তামিম ও শেহজাদ। প্রথম রান ওভারে প্রত্যাশিত রান তুলতে না পারলেও পঞ্চম ওভারে আরাফাত সানিরে বিপক্ষে চড়াও হোন তামিম। দুই চার ও দুই ছক্কায় সানির সেই ওভার থেকে এসেছে ২১ রান। পাওয়ার প্লে শেষে বরিশালের রান দাঁড়িয়েছে তাই বিনা উইকেটে ৫৪। শেহজাদ ছন্দ না পেলেও বরিশালকে এগিয়ে নিতে থাকেন তামিম।
ধুঁকতে থাকা শেহজাদকে ফিরিয়েছেন আলাউদ্দিন বাবু। এদিকে শেহজাদ ফেরার পর ৩৪ বলে এবারের আসরে আসরে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। যদিও বরিশালের অধিনায়ককে সেঞ্চুরি করতে দেননি আলাউদ্দিন। ডানহাতি এই মিডিয়াম পেসারের স্লটে পড়া স্লোয়ার ডেলিভারিতে লং অফে ক্যাচ দিয়েছেন ৪৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি আলাউদ্দিন।
মাঝে দ্রুত বেশ কয়েকটি হারিয়ে বিপাকে পড়ে বরিশাল। শোয়েব মালিক, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ফিরলে দেড়শতে আটকে যাওয়ার শঙ্কা জাগে। তবে শেষ ওভারে শরিফুল ইসলামের বিপক্ষে দুই ছক্কা ও দুই চার মেরে বরিশালের পুঁজি ১৮৬ রানে নিয়ে যান। ঢাকার হয়ে একাই ৩ উইকেট নিয়েছেন আলাউদ্দিন।