জন্মভূমি ডেস্ক : কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার সময় নিজ বাসা-বাড়ি বা আঙিনা/বারান্দায় হেলিকপ্টার থেকে করা গুলিতে ১০ শিশু নিহতের ঘটনায় কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) এ বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিকে গুলিতে শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের দ্বৈত বেঞ্চে রিটটির ওপর শুনানি হয়। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৫ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এরপর বিচারপতি আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
রিটে ১০ শিশু নিহতের বিষয়টি তদন্তের পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথাও বলা হয়। সেইসঙ্গে পরবর্তীতে যদি অন্য কোনো শিশু মৃত্যুর সন্ধান পাওয়া যায়, তবে তাকেও এই ক্ষতিপূরণের আওতাভুক্ত করার কথা বলা হয়।
শুনানির সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি আদালতকে বলেন, শিশুরা ঘরের ভেতর থেকে গুলিতে মারা গেছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে। রাষ্ট্রকে এর ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে। এটা রাষ্ট্রের দায়। আমাদের সবারই সন্তান আছে। যে শিশু সন্তানেরা মারা গিয়েছে ক্ষতিপূরণ দিয়ে তা পূরণ করা সম্ভব না। তবুও কিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।
মামলার শুনানির সময় গতকাল আদালত বলেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হেলিকপ্টার থেকে যারা গুলি করেছেন তারা শুধু একাই অপরাধী নন, যারা হেলিকপ্টার থেকে গুলির হুকুম দিয়েছেন তারাও সমানভাবে অপরাধী। এর দায় কেউই এড়াতে পারেন না।
গত ১ আগস্ট বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার অংশবিশেষ সংগ্রহ করে রিটটি করেছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন চেয়ে দাখিল করা রিটটি ৪ আগস্ট বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়। ওই সময় তারা শুনানি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৬ জুলাই থেকে দেশে ব্যাপক সহিংসতা হয়। একে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও আছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।