
জন্মভূমি ডেস্ক : টানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার (০১ সেপ্টেম্বর) থেকে আবারো দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে ওয়ার্ল্ডহ্যরিটেজ সাইড সুন্দরবন। রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রানী ও ২৯১ প্রজাতির মৎস্য সম্পদের প্রজনন নির্বিঘœ করতে ১ জুনথেকে ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। এই নিষেধাজ্ঞার সময়েপর্যটকসহ বনজীবীদের কোলাহল মুক্ত থাকায় সুন্দরবনে বন্যপ্রানী অবাধ বিচারনের পাশাপাশি নির্বিঘœ প্রজনন করতে পেরেছে। ম্যাগগ্রোভ এই বনেরবন্যপ্রানী ও মৎস্য সম্পদসহ জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার শেষ মুর্হুতে বন বিভাগের কাছ থেকেপাশ-পারমিট নিয়ে সুন্দনবনে প্রবেশে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে ট্যুর অপারেটরসহ সব ধরনের বনজীবীরা। সুন্দরবন উন্মুক্ত করে দেয়া হলেও পর্যটকসহবনজীবীদের জন্য পানির বোতল, চিপসের প্যাকেটের মতো সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জীববেচিত্র্যে ভরপুর সুন্দরবনে বর্তমানে ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, দুই লাখ হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রানী, সুন্দরীসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড ও ৩০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এই ম্যানগ্রেভ বনের ৩টি এলাকা ১৯৯৭ সারের ৬ ডিসেম্বর ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ডহ্যরিটেজ সাইড। সুন্দরবনে মধ্যের ১৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার জলভাগে কুমির, ৬ প্রজাতির ডলফিনসহ ২৯১ প্রজাতির মাছ রয়েছে। অক্সিজেনের অফুরন্তভান্ডার সুন্দনবনে বাংলাদেশ অংশের আয়তন প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটর। সুন্দরবনের এই বিশাল জলভাগ বিশে^র বৃহৎ জলাভূমি রামসার এলাকাহিসেবেও ¯^ীকৃত।
সুন্দরবন লাইভ ট্যুর অপারেটরের মালিক গোলম রহমান বিটু জানান, টানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর ) থেকে আবারো সুন্দরবনউন্মুক্ত হবার খবরটি ট্যুর অপারেটরদের জন্য আনন্দের। ট্যুর অপারেটর হিসেবে আমরা সব সময় সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেষ্ট থাকি। সুন্দরবনেপানির বোতল, চিপসের প্যাকেটের মতো সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহারে বন বিভাগের নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আমরা পর্যটকদের অবহিত করেছি।সুন্দরবন উন্মুক্ত হবার খবরে দেশী বিদেশী পর্যটকদের চাপ বেড়েছে। প্রায় সব ট্যুর অপারেটরের পর্যটকবাহী লঞ্চ ও বিলাসবহুল ক্রুজারের ক্যাবিন একসপ্তাহ আগেই বুক হয়ে গেছে। পর্যটকদের চাপ এভাবে শীত মৌসুমের আগ পর্যন্ত থাকলে তিন মাস বন্ধের ক্ষতি আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসের জানান, প্রতি বছরই বন্যপ্রানী ও মাছের প্রজনন মৌসুমেতিন মাস দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের প্রবেশে বন্ধ ও মৎস্য সম্পদ আহরণে নিষেধাজ্ঞার জারি করা হয়ে থাকে। কোলাহল না থাকায়সুন্দরবনে বন্যপ্রানী ও মৎস্য প্রজাতি অবাধ বিচারনের পাশাপাশি নির্বিঘœ প্রজনন করতে পেরেছে। প্রকৃত চিত্র হচ্ছে নিষেধাজ্ঞার সময়ে সুন্দরবনেরজীববৈচিত্র্য প্রাণ ফিরে পায়। ফলে ম্যাগগ্রোভ এই বনের বন্যপ্রানী ও মৎস্য সম্পদসহ জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়েছে। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর ) থেকে পর্যটকসহসব ধরনের বনজীবীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করতে চাইলে পানির বোতল, চিপসের প্যাকেটের মতো সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সাথে নিতে পারবেনা। বন বিভাগথেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি নেয়ার সময় পর্যটক, ট্যুর অপারেটর ও বনজীবীদের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। পর্যটকদের জন্য সুন্দরবনে নতুন করে৪টি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র ও নতুন কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মান করা হয়েছে। সুন্দরবনে এই প্রথম করমজল ট্যুরিজম কেন্দ্রে একটি ঝুলন্ত ব্রীজ, তথ্য কেন্দ্রনির্মানসহ সকল ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রগুলোকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। জীববৈচিত্র্য সুরক্সায় গোটা সুন্দরবনে পর্যটকদের অবাধ যাতায়াত নিরূসাহিত করেসকল ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র মুখি করতে বন বিভাগ চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।