
খুলনায় পাট কনভেনশনে বক্তারা
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনায় পাট কনভেনশনে বক্তারা বলেছেন, ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের আধুনিকায়ন করা সম্ভব। সরকার তা না করে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে কারখানা বন্ধ করেছে। উৎপাদন বন্ধ রেখে বিজেএমসি ও মিল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বেতন ভাতা প্রদান করছে। ২৬টি পাটকলের জায়গা-জমি-রাস্তা-গোডাউন-নদীরঘাট এবং যন্ত্রপাতির বাজারমূল্য প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। লোকসানের অজুহাতে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে লিজ ও পিপিপির নামে রাষ্ট্রের এই সম্পদ তুলে দেয়া হচ্ছে ব্যক্তির হাতে। আধুনিকায়ন করলে উৎপাদন ক্ষমতা তিনগুন বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতো। উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমান, বহুমুখিতা ও বৈচিত্র বৃদ্ধি পেতো। বিশ^বাজারে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ প্রাধান্য বিস্তার করতে সক্ষম হতো।
শনিবার বিকেল ৩টায় খুলনা প্রেসক্লাবে ব্যাংকুয়েট হলে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত কনভেনশনে এ কথা বলা হয়। বক্তারা বলেন, লোকসানের অজুহাতে সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার এ সময়ে খেলাপি ঋণ মাফ করেছে ৪৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। গত সাত-আট বছরে কোন কাজ না করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যুইক রেন্টাল কোম্পানি সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নিয়েছে ৯০ হাজার কোটি টাকার উর্ধ্বে। তাহলে পাটকল কেন সরকারের ভর্তুকি পাবে না। ইউরোপ-আমেরিকার শত শত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যুগ যুগ ধরে বিপুল পরিমান রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি পেয়ে আসছে। গত কয়েক দশকে আমেরিকার ম্যানুফ্যাকচারিং খাত লোকসান দেয়া শুরু করলে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসে দেশটির বড় বড় শিল্প কারখানা। বিজেএমসির ব্যবস্থাপনার দক্ষতার অভাব দূর করে, ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের দুর্নীতি প্রতিরোধ করে, পুরাতন যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন করে প্রকৃতিবান্ধব পাট ও পাটশিল্পকে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পুনরুজ্জীবিত করাই হবে জাতীয় স্বার্থের সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ।
সভাপতিত্ব করেন নাগরিক পরিষদের আহবায়ক আইনজীবী কুদরত-ই-খুদা। পরিচালনা করেন সদস্য সচিব এস এ রশীদ। কনভেনশনে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সিপিবি নেত্রী সুতপা বেদজ্ঞ। অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সদস্য ও খুলনা জেলা সভাপতি ডা. মনোজ দাশ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ খুলনা জেলা আহবায়ক জনার্দন দত্ত নান্টু ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্র্রীয় সদস্য মোঃ মোজাম্মেল হক খান।