উচ্চ আদালতে আসামি পক্ষের মামলা স্থগিতের আবেদনের প্রেক্ষিতে নিন্ম আদালতে মামলার কার্যক্রম বন্ধ
জন্মভূমি রিপোর্ট
১২ বছরেও শেষ হয়নি শহীদ ইকবাল বিথার হত্যা মামলার বিচার। আসামি পক্ষের উচ্চ আদালতে স্থগিতের আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়ায় বন্ধ নিন্ম আদালতের বিচার কার্যক্রম। দীর্ঘ দিনেও মামলার বিচার কার্য সম্পন্ন না হওয়ায় সংক্ষুব্ধ শহীদ ইকবাল বিথারের রাজনৈতিক সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের মার্চে নগর যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আনিসুর রহমান পপলু, জীবন ওরফে শবে কাদির, লিয়াকত আলী শিকদার, মনিরুজ্জামান মাসুদ ওরফে তোতা মাসুদ, একরাম হোসেন ওরফে সিয়াম ওরফে আকাশ এবং সুমন হোসেন ওরফে রাজু মোট ছয় জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। একই বছরের এপ্রিলে মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
পরবর্তীতে আসামিরা হায়কোর্টে মামলাটি স্থগিতের আবেদন করেছেন। তার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলাটি পুনরায় শুরু হতে পারছে না বলে জানিয়েছেন আদালতের পিপি শেখ শামীম আহমেদ পলাশ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের ১১ জুলাই রাতে নগরীর মুসলমান পাড়ার মেট্রোপলিটন ক্লিনিকের সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন শহীদ ইকবাল বিথার। এ ঘটনায় তার শ্যালক মো. রফিউদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ১২ জুলাই সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ হত্যা মামলাটি প্রথমে খুলনা সদর থানা পুলিশ এরপর নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করে। এক পর্যায়ে মামলাটি ২০১০ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ সেলে যায়।
হত্যাকাÐের ৪ বছর ৩ মাস পর ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মিজানুর রহমান মিজান, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা এস, এম মেজবাহ হোসেন বুরুজ, মহানগর যুবলীগের আহŸায়ক আনিসুর রহমান পপলুসহ নয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দেওয়া হয়।
কিন্তু বাদী-বিবাদীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অভিযোগ পত্রটি গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। ২০১৪ সালের ১ আগস্ট সিআইডির সম্পূরক চার্জশিটে সাংসদ মিজান ও যুবলীগ নেতা বুরুজের নাম বাদ দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করেন মামলার বাদী। আদালত এই আদেশ খারিজ করে দিলে বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে আবেদন করেন।
গত ২০১৯ সালের মার্চেই বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে তাদের রিভিউ আবেদন তুলে নেই। ২১মার্চ’১৯ বৃহস্পতিবার আসামি আনিসুর রহমান পপলুর পক্ষে চার্জ গঠন থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন করেন তার আইনজীবী। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আসামির আবেদন নাকচ করে দেন এবং জীবিত ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ঐ বছরের ১৫ এপ্রিল স্বাক্ষ্য গ্রহনের দিন ধার্য করে আদালত।
পরে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে মামলাটি স্থগিতের আবেদন করেন। তার শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিন্ম আদালতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।
\ ক্ষুব্ধ শহীদ ইকবাল বিথারের পরিবার ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা \
দীর্ঘদিনে হত্যা মামলাটি সম্পন্ন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শহীদ ইকবাল বিথারের পরিবার ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা। এ বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, আমরা এই হত্যা মামলার বিচার চাই। প্রকৃত আসামি ও এর পিছনের কলাকুশলীদের আইনের আওতায় এনে দ্রæত বিচারের দাবি জানান তিনি।
দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বিচারের অপেক্ষায় থাকা শহীদ ইকবাল বিথারের স্ত্রী রুনু ইকবাল বিথার জানান, আমরা এখনও ন্যায় বিচারের আশাকরি। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে আমরা ন্যায় বিচার পাব এই আশাটিই করেন তিনি ও তার একমাত্র কন্যা সন্তান। তিনিও মামলাটি দ্রæত সম্পন্নের দাবি জানান।
\ মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবার ও নগর যুবলীগের স্মরণ \
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ২৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শহীদ ইকবাল বিথারের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে তার পরিবার ও নগর যুবলীগের পক্ষ থেকে। আজ ১২জুলাই রবিবার বাদ মাগরিব নগরীর শঙ্খ মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণ সভা ও দোয়া।
১২ বছরেও শেষ হয়নি যুবলীগ নেতা শহীদ ইকবাল বিথার হত্যা মামলার বিচার
Leave a comment