
সিরাজুল ইসলাম সাতক্ষীরা। ১ লা জুলাই থেকে শুরু হয়েছে সুন্দরবনের প্রবেশের ,,সার্টিফিকেট ,,বি এল সি নবায়ন কার্যক্রম। চলবে ৩১ শে জুলাই পর্যন্ত সুন্দরবনের প্রবেশ করতে হলে জেলে ,বাওয়ালি, মৌয়ালি ,পর্যটক সহ সকলকে বি এল সি প্রয়োজন বি এল সি ছাড়া সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারেনা সুন্দরবনের সাথে সম্পৃক্তরা। কারণ বি এল সি দেখে সুন্দরবনের প্রবেশের অনুমতি পত্র পারমিট বা পাস প্রদান করা হয়। প্রতিবছর একবারই বি এল সি নবায়ন করা হয় এর সময় থাকে এক বছর অর্থাৎ এই জুলাই মাসে যারা বি এল সি নবায়ন করবে তারা আগামী বছর ৩০জুন পর্যন্ত সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি পাবে। এর আগে পুরাতন বি এল সি নবায়নের পরে নতুন যারা বি এল সি করতে ইচ্ছুক তাদেরকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমতি ক্রমে বি এল সি প্রদান করা হতো কিন্তু এখন তাহা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে ।নতুন কোন বি এল সি প্রদান করা হয় না বরং বছর বছর পুরাতন বি এল সি বিভিন্ন অপরাধের দায় বাতিল হচ্ছে এবং অনেকেই এই পেশা পরিবর্তন করে ভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। কিন্তু তার পরিবর্তেনতুন কোন বি এল সি দেওয়া হয় না। সেই ক্ষেত্রে বছর বছর সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল বনজীবীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমিয়ে যাচ্ছে। ৯০ থেকে ৯৫ দশকে সুন্দরবনের ১৬টি স্টেশনের প্রতিটি স্টেশনে দুই থেকে চার হাজার পর্যন্ত বিএলসি ছিল তা এখন বর্তমান কমতে কমতে বারো হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এর কারণ পেশা পরিবর্তন করেছেন হাজার হাজার বনজীবী তারা সুন্দরবনের বনদস্যদের অত্যাচার বাঘের আক্রমণ মাছ কাঁকড়ার হার তুলনামূলকভাবে কম সে কারণে পেশা পরিবর্তন করে ভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। ২০০০ সালের আগে সুন্দরবনের গরান কাঠ কাটা ও গোলপাতা আহরণ করা বি এল সি ছিল এবং গোলপাতা ও গরান কাঠ কাটা অনুমতি ও ছিল বর্তমানে নামমাত্রা কয়েকটি নৌকা রয়েছে সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণ করার জন্য। আর গরান কাঠের পাস তো ২০০০ সাল থেকে দেওয়া বন্ধ রয়েছে। গরান কাটা অনুমতির জন্য বিভিন্ন সময় পেশাদার বাওয়ালিরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর মানববন্ধন স্মারক লিপি দিয়ে আসছে কিন্তু সরকার অনুমতি দিচ্ছে না। এর একমাত্র কারণ ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলাদেশের সুন্দরবনকে স্বীকৃতি দেওয়ায় সুন্দরবনের সকল প্রকার গাছপালা কাটা থেকে সরকার পিছিয়ে এসেছে। শুধুমাত্র সীমিত আকারে গোলপাতা আহারণ চালু রেখেছে কারণ গোলপাতা বছর বছর না কাটলে অতি জলোচ্ছ্বাস প্রাকৃতিক দুর্যোগে গোলপাতা নষ্ট হয়ে যায় সে কারণে এটি ক্ষুদ্র আকারে চালু রেখেছেন। গোল পাতা আহারনো সুন্দরবন থেকে বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টে বারবার কথা উঠছে। বন মন্ত্রণালয় তো গোলপাতা আহরণের বিপক্ষে কিন্তু বাস্তব চিত্র দেখে সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের পত্র চালাচালিরমাধ্যমে গোলপাতা আহরণের বিধান চালু রেখেছে সরকার,। এ ব্যাপারে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় সাতক্ষীরা সহকারী বন সংরক্ষক মশিউর রহমানের সাথে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান পহেলা জুলাই হইতে ৩১ শে জুলাই পর্যন্ত সুন্দরবনের অনুমতি পত্র বি এল সি নবায়ন করা হবে এই মেয়াদের মধ্য যে সমস্ত বনজীবীরা বি এল সি নবায়ন করবে শুধুমাত্র তাদের গুলো কার্যকর হবে এবং সেই বিএনসি দিয়ে আগামী ৩০ শে জুন পর্যন্ত সুন্দরবনের প্রবেশ করতে পারবে। আর যে সমস্ত বনজীবীরা নির্দিষ্ট মেয়াদে বিএলসি নবায়ন করতে পারবে না তাদের বি এল সি বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। তবে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কর্তৃপক্ষ যদি মেয়াদ উত্তীর্ণ জরিমানা নিয়ে অনুমতি দেয় তাহলে নির্দিষ্ট মেয়াদে বাদ পড়া বনজীবীরা বি এল সি নবায়ন করতে পারবেন। তিনি আরো বলেন এই এক মাসের মধ্যেও মাছ কাঁকড়া পর্যটক বহন মৌহালি গোলপাতা আহারনকারী সকলের বি এল সি নবায়ন করতে হবে বাধ্যতামূলক। কথা হয় পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাসানুর রহমানের সাথে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান সুন্দরবন এখন দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে একটি হচ্ছে পশ্চিম সুন্দরবন আর একটি হচ্ছে পূর্ব সুন্দরবন যেটাকে বাগেরহাট অঞ্চল বলা হয় দুটি সুন্দরবনের ১৬ টি স্টেশন রয়েছে ১৬ টি স্টেশনে প্রায় বারো হাজারের মতো বিএলসি রয়েছে তা এই এক মাসের মধ্যেই নবায়ন করতে হবে যাহা সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যে সমস্ত জেলে বাওয়ালি মৌয়ালি নির্দিষ্ট মেয়াদে বিএলসি নবায়ন করতে পারবেন না তাদের জন্য যদি সরকার অতিরিক্ত ফি নিয়ে মেয়াদ বাড়ায় তাহলে তারা বি এল সি নবায়ন করতে পারবে আর যদি মেয়াদ না বাড়ায় তাহলে তাদের বিএনপি বাতিল বলিয়া গণ্য হবে। তিনি আরো বলেন জুন জুলাই আগস্ট তিনমাস সুন্দরবনে সব ধরনের প্রবেশ অধিকার নিষিদ্ধ রয়েছে সে কারণে বনজীবীরা একটু অসহায় হয়ে পড়েছে বলে বি এল সি নবায়ন করতে সামান্য বিলম্ব হচ্ছে তবে নির্দিষ্ট মেয়াদে তারা বিএলসি নবায়ন করবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায় সুন্দরবনের ১৬ টি স্টেশন এর মধ্য ৪জুলাই পর্যন্ত মাত্র ৫৭টি বি এল সি নবায়ন হয়েছে। বাকিরা এখনো সময় আছে বলে অপেক্ষায় বসে আছেন তারপরে বিএলসি তো এখন কাজে লাগবে না বলে অনেকেই বি এল সি নবায়ন করতে গড়ি মসি করছে কারণ তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ চলমান রয়েছে।