জন্মভূমি ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় কমপক্ষে ২০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে এক আরব বেদুইন জিম্মিকে উদ্ধার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) গাজার ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া জিম্মির নাম ফারহান আল-কাদি (৫২), তিনি ইসরায়েলের বেদুইন আরব সম্প্রদায়ের একজন সদস্য। গাজায় শুরু হওয়া যুদ্ধের প্রায় ১১ মাস পর, এটি ছিল ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে মুক্তিপ্রাপ্ত অষ্টম জীবিত বন্দি এবং প্রথম যাকে হামাসের ব্যবহৃত ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ইসরায়েলি বিমান হামলা চলাকালীন গাজার খান ইউনিস শহরে বোমা হামলায় বিধ্বস্ত ভবনের নিচে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে জরুরি কর্মীরা তৎপর হন।
এই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ইসরায়েলি কমান্ডো দল, যারা কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই ফারহানকে উদ্ধার করেন। তিনি হামাসের সুড়ঙ্গের প্রায় ২৫ গজ গভীরে একটি কক্ষে অবস্থান করছিলেন, যেখানে কোনো প্রহরী ছিলেন না।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি এই অভিযানকে জটিল এবং সাহসী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে দুইজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফারহানকে উদ্ধার করা হয়েছিল মূলত একটি হামাস সুড়ঙ্গের নেটওয়ার্ক অনুসন্ধানের সময়, যেখানে তার উপস্থিতি ছিল একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা।
এই যুদ্ধের ফলে ইসরায়েলের বেদুইন সম্প্রদায়ের যে ক্ষতি হয়েছে, ফারহান আল-কাদির উদ্ধার তার একটি প্রমাণ। ৭ অক্টোবরের হামলায় কমপক্ষে ১৭ জন বেদুইন নিহত হয়েছিল। অনেকেই তাদের জীবিকা হারিয়েছেন। এই হামলার আগে থেকেই বেদুইনরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলেন। ইসরায়েলি সরকার তাদের গ্রামগুলোকে স্বীকৃতি না দেয়ায় তারা বোমা আশ্রয়কেন্দ্র এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
ফারহানকে উদ্ধার করার পর, তার পরিবার বিশাল আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। তার ভাই, হাতেম আল-কাদি, এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা চাই সব জিম্মিরা মুক্তি পাক এবং একটি চুক্তি হোক।
ফারহানের আরেক ভাই ফায়েজ আল-সানা জানিয়েছেন, ফারহান অনেকটা শুকিয়ে গেছেন এবং এই সময়টাতে তিনি সুড়ঙ্গের অন্ধকারে কাটিয়েছেন।
গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যে মানবিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মতে- চলমান যুদ্ধ, ধ্বংসপ্রাপ্ত সড়ক, আইনশৃঙ্খলার ভাঙন এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জের কারণে গাজায় খাদ্য সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।