চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ২০ মিনিটের বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে বোরো ধান ও আমসহ উঠতি ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা।বিএডিসির দত্তনগর কৃষি ফার্মের ৫টি বীজ উৎপাদন খামারের ১ হাজার ১৫৫ একর ক্ষেতের বীজধান মাটির সাথে মিশে গেছে। যা ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১১ কোটি টাকা। এ ছাড়াও যাদবপুর, গঙ্গাদাসপুর, পাথিলা, সুটিয়া, সোন্দাহ, করিমপুর ও তারানিবাস মাঠের ২৫ হেক্টর জমির ধান শিলা-বৃষ্টির কবলে পড়েছে। এর মধ্যে ১০ হেক্টর জমির ধান মাটির সাথে মিশে গেছে। গত বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। খবর পেয়ে বিএডিসির অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (খামার) ফখরুল হাসান প্রধানসহ ঊর্ধ্বতম কর্মকর্তাগণ বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্থ ৫টি খামারের বীজ ধানের ক্ষেত পরিদর্শন করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে জীবননগরে ঝোড়ো বাতাস শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি নামে। একই সময়ে উপজেলার এক পাশ দিয়ে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। তবে আশপাশের এলাকায় শিলা না পড়লেও বৃষ্টি হয়েছে। এতে আম, বোরো ধান,ভুট্রাসহ উঠতি ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
সোন্দাহ গ্রামের বাসিন্দা আবুল বলেন, ‘শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক আম ঝরে পড়েছে। এ ছাড়া জমিতে পাকা বোরো ধান কিছুটা নষ্ট হয়েছে। আমার ১০ কাঠা জমিতে বোরো ধান আছে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর গিয়ে দেখি সব শুয়ে পড়েছে।’
নতুনপাড়া গ্রামের আম চাষি মো. জিনারুল বলেন, ‘দীর্ঘদিন তাপপ্রবাহের কারণে শুকিয়ে যাচ্ছিল আমের গুটি। রাতের ঝোড়ো বাতাসে সেসব আমের গুটি ঝরে গেছে।’
বিএডিসির পাথিলা বীজ উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন মোল্লা জানান, ধান কাটা চলছে। এ অবস্থার মধ্যে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈশাখী ঝড় ও শিলা-বৃষ্টিতে খামারের ২৬৬.৩২ একর জমির ধান সম্পূর্ণ রুপে মাটির সাথে মিশে গেছে। এক ছটাক ধীন বীজও সংগ্রহ করার মত নেই। ক্ষতির পরিমাণ ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা।
দত্তনগর ফার্মের জয়েন্ট ডাইরেক্টর মো. কামরুজ্জামান শাহিন জানান, পাথিলা খামার ছাড়াও মথুরা ও গোকুলনগর খামারে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। মথুরা খামারে ২৭৮ একর, গোকুলনগর খামারে ৩৯২ একর, করিঞ্চা ফার্মে ১৫২ একর ও কুশাডাঙ্গা ফার্মে ৯৫ একর জমির বীজ ধানের ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১১ কোটি টাকা।
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, আমি ছুটিতে আছি, ভারী মাপের শিলাবৃষ্টি হয়েছে জীবননগরে। এমন শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। ক্ষতির পরিমাণ জানার জন্য আমাদের কর্মীরা মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন। তবে উপজেলাজুড়ে আম ও অন্যান্য ফসলের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা পরে জানাতে পারবো।’
পরিদর্শনে আসা বিএডিসির অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (খামার) ফখরুল হাসান প্রধান বলেন, বীজ ধান ক্ষেতের যে ক্ষতি হয়েছে তাতে আগামীতে কিছুটা হলেও উফসি ও হাইব্রিড জাতের বীজের সংকট তৈরী হবে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত