বিশেষ প্রতিবেদক
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের মেয়র হিসেবে দ্বায়িত্ব পালনের চার বছর পূর্তি। দ্বিতীয় মেয়াদে ৪ বছরে ৮৫ শতাংশ নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণ হয়েছে দাবি করে তাঁর কর্মকাÐের সাফল্য ও ব্যর্থতা নিয়ে দৈনিক জন্মভ‚মির সাথে কথা বলেছেন মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
২০১৮ সালের ১৫ মে অনুষ্ঠিত হয় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) মেয়র নির্বাচন। দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশন, সিটি গভর্মেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন, ফুটপাত নির্মাণ ও দখল মুক্ত, পানি ও পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সড়ক ও ড্রেনেজ সমস্যা সমাধান, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, যানজট নিরসন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ, খাল-নদী দখলমুক্ত ও পুন:খনন এবং নগরীর দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা দূরীকরণ, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে সড়কের নামকরণসহ মোট ৩১টি নির্বাচনী প্রতিশ্রæতির ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত তালুকদার আব্দুল খালেক। বিএনপি-সমর্থিত সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি মেয়রের দায়িত্ব নেন।
৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে মেয়র বলেন, আমাদের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ ও উন্নয়ন কাজ করার সকল উপাদান বিদ্যমান থাকার পরেও বিগত ২টি বছর করোনা মহামারীর কারণে উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে নগরবাসী কাঙ্খিত উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হয়নি। তারপরেও আমি ইতিমধ্যে আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রæতির ৮৫ শতাংশ অর্জন করেছি। বাকি এক বছরের মধ্যে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হলে, খুলনা মহানগরী একটি আধুনিক বাসযোগ্য নগরীর চেহারা পাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, কেসিসির সাথে কেডিএ, ওয়াসা, টিএন্ডটি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলি যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কেডিএ, ওয়াসাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার অভাবে নির্মাণকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এজন্য দ্রæত সিটি গভর্মেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে বলে মেয়র অভিমত প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, খুলনার অবকাঠামো উন্নয়নে ‘ইন্টিগ্রেটেড আরবান’ শিরোনামের প্রায় ১৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উন্নীতকরণ কাজ চলমান। কেসিসি এখন ৩৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর ৪০০টি সড়ক, ড্রেন-প্রশস্তকরণ, খাল খনন এবং আধুনিক আবর্জনা ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে। এছাড়া খুলনা পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) বিলম্বের কারণে ৩৯টি সড়কের নির্মাণ কাজ এখনো শুরু হয়নি। ধাপে ধাপে কাজগুলো শেষ হবে।
এছাড়া আট কিলোমিটার ময়ূর নদ, মাটিয়াখালী ও খুদেরখালসহ খাল খননের কাজ যত দ্রæত সম্ভব শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে এসব নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
খালেক বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক করতে শহরের কিছু এলাকা ওভার ব্রীজ নির্মাণের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া নাগরিকদের বিনোদনের জন্য পার্কের আধুনিকীকরণ করা হবে।
মেয়র খালেক অবশ্য বলেছেন, পরিবেশকে আরও অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ভ‚-পৃষ্ঠের পানির সম্পদ ধরে রাখতে তারা ‘খুলনা সিটিতে প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩১টি প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণের পরিকল্পনা করেছেন।
তিনি বলেন, প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা নিয়ে ১৫তলা বিশিষ্ট ‘সিটি সেন্টার নির্মাণ’ স্টাইলের একটি প্রকল্পও গ্রহণ করেছি। সিটি সেন্টার প্রকল্পটি এখন অনুমোদনের জন্য একনেকে জমা আছে। এতে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সিনেপ্লেক্স, ৩০০টি দোকান, ফুড কোর্ট এবং আইসিটি সুবিধা থাকবে।
মেয়র বলেন, নগরীর ২২টি মোড় চিহ্নিত করেছে কেসিসি। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এই মোড়গুলো প্রশস্তÍ করে খুলনার ঐতিহ্য তুলে ধরে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে নগরীর সৌন্দর্য্য বর্ধন করা হবে।
এছাড়া জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান জানাতে নগরীর বিভিন্ন সড়ক, গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেসিসি।
৮৫ শতাংশ নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের দাবি সিটি মেয়রের
Leave a comment