
বিধান চন্দ্র ঘোষ, দাকোপ (খুলনা) : খুলনার উপকূলীয় দাকোপে বটবুনিয়া এলাকায় ভেঙে যাওয়া ওয়াপদা বেড়িবাঁধ অবশেষে আটকানো সম্ভব হয়েছে। গত তিনদিন যাবৎ স্থানীয় অসংখ্য লোকজন সেচ্ছাশ্রমে দিন রাত পরিশ্রম করে গতকাল শুক্রবার দুপুরে ভাঙন কবলিত স্থানে জিও টিউবে বালি ভরে বাঁধ পুনঃ নির্মান করতে সক্ষম হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ বাঁধ নির্মানে সহযোগিতা করে।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, চলতি অমাবস্যার গোনে ঢাকি নদীর জোয়ারের অতিরিক্ত পানির চাপে গত মঙ্গলবার দিন গত রাত ১২টার দিকে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে হরিসভা মন্দির সংলগ্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রায় ১৫০ ফুট ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে ঢাকি নদী গর্ভে বিলিন হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্ল¬াবিত হয়। ফলে পানির নীচে তলিয়ে যায় প্রায় ৩ হাজার বিঘা রোপা আমন ধানের ক্ষেত। ভেসে যায় পুকুরের কয়েক লক্ষ টাকার মাছ। পানি বন্ধি হয়ে পড়ে প্রায় ১ হাজার পরিবার।
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ বটবুনিয়া এলাকার অখিল সরদার, প্রজিত মন্ডল বলেন, ভাঙন কবলিত স্থানটি বেশ আগে থেকে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা গুরুত্ব না দেওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনে আমাদের ঘর বাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এখন বাঁধ আটকানো হলেও পরিবার পরিজন নিয়ে খোলা আকাশের নীচে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।
তিলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন গাজি জানান, গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকি নদীর জোয়ারের অতিরিক্ত পানির চাপে প্রায় ১৫০ ফুট ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙে ঢাকি নদী গর্ভে বিলিন হয়। বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় বাঁধ আটকানো চেষ্টা। কিন্তু কয়েক দফার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে শুক্রবার দুপুরে বাঁধ আটকানো সম্ভব হয়েছে। ভাঙনের ফলে ১৪টি কাঁচা পাকা ঘর বাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু ঘর বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সব মিলে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে এখনো ত্রান বিতরণ অব্যহত রয়েছে। আর আসে পাশের স্লুইচ গেট দিয়ে উত্তর কামিনীবাসিয়া, বটবুনিয়া, নিশানখালী, আড়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পানিও নেমে যাচ্ছে। তলিয়ে থাকা রোপা আমন ধান গাছও জেগে উঠছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় ধান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ভাঙন কবলিত স্থানে জিও টিউবে বালি ভরে বাঁধ আটকানো সম্ভব হয়েছে। আপাতত ভাঙন কবলিত স্থান ঝুঁকি মুক্ত হয়েছে। তবে জিও টিউবের পাশ দিয়ে বিকল্প রিং বাঁধ দেওয়া কাজ শুরু করেছি।