
বিজ্ঞপ্তি : সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম জেলা শাখা সোমবার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে। নারীর মজুরিবিহীন গৃহস্থালী কাজের আর্থিক মূল্য নিরূপণ করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং এসব কাজের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা, এলাকাভিত্তিক মানসম্পন্ন ডে-কেয়ার সেন্টার নির্মাণ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ, নারীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবাসহ মাতৃসদন নির্মাণ, দু:স্থ নারীদের পুনর্বাসন করাসহ নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা এবং নারী নির্যাতন বন্ধে ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাজেটে বরাদ্দ রাখার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফোরামের জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক কোহিনুর আক্তার কণা, অপর্ণা মজুমদার, উমা মন্ডল, সুফিয়া আক্তার, রেখা খাতুনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গৃহস্থলি কাজ ছাড়া কোন পরিবার ও সমাজ কল্পনা করা যায় না। আর গৃহস্থলি কাজ ও গৃহব্যবস্থাপনার প্রায় ৮০% কাজ নারীরা করে থাকেন। গৃহস্থলি কাজ ছাড়া মানুষের শারীরিক-মানসিক-সাংস্কৃতিক জীবন বিকশিত হওয়া তো দূরের কথা, টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে এই কাজের কোন স্বীকৃতি নেই। ২০১৪ সালে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি’র গবেষণায় দেখা গেছে যে, নারীর কাজের ৭৮ থেকে ৮৭ শতাংশই অর্থনৈতিক হিসাবের মধ্যে আসে না। তাদের গবেষণায় বেরিয়ে আসে নারীদের গৃহস্থলি কাজের আর্থিক মূল্য বছরে ১১ লক্ষ কোটি টাকার উপরে। এই হিসাব করা হয়েছে বাজার প্রতিস্থাপন খরচ পদ্ধতিতে। ঘরে-বাইরে নারী যে কাজ করে তার পুরোটা হিসাবে আনলে এবং আর্থিক মূল্য বিবেচনা করলে জিডিপিতে নারী-পুরুষের অবদান সমান হবে। আমাদের দেশে প্রতিবছর যে জেন্ডার বাজেট হয় তা জাতীয় বাজেটের মাত্র ১ শতাংশের মতো যা মূলত বিভিন্ন ভাতা প্রদানেই সীমাবদ্ধ। ভাতাগুলোর পরিমাণও খুব সামান্য। ভাতার পরিমাণ ও পরিধি বাড়ানো প্রয়োজন। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুনর্বাসনের যেসব উদ্যোগ আছে সেগুলোর ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও দলীয়করণ বন্ধ করতে হবে। দেখা যাচ্ছে, দেশে জনসংখ্যার অনুপাতে কর্মক্ষেত্রে নারীদের সংখ্যা অনেক কম। যেসব কারণে নারীরা কর্মক্ষেত্রে আদতে আসতে পারেন না বা কর্মক্ষেত্র থেকে ঝরে পড়েন ওইসব বাধাগুলো দূর করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে এবং এসব বিষয়ে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থাকতে হবে। নিরাপদ পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবাসহ মাতৃসদন ইত্যাদি নির্মাণে খুব বেশি বাজেট বরাদ্দ লাগে না, শুধু প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় মনোযোগ ও উদ্যোগ। সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম মনে করে নারীর সম-অধিকার নিশ্চিত করা এবং পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে সমাজে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে যে সকল প্রতিবন্ধকতা তা দূর করার কার্যকর উদ্যোগ নেবে রাষ্ট্র এবং সে সকল ক্ষেত্রে বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন।