
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত আসামি হওয়ায় আইন তার নিজের গতিতে চলবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে মানবিকতা আদায় করতে হলে তা আন্দোলনের মাধ্যমে করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মন্ত্রী।
আজ শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় কম্বল বিতরণ উপলক্ষে পৌর আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন। মন্ত্রীর ব্যক্তিগত অর্থায়নে এসব কম্বল বিতরণ করা হয়।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সস্পর্কে বলেছেন, ‘মানবিকতা আন্দোলনের মাধ্যমে কামাই করা যায় না। আইন আইনের গতিতে চলবে।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির আন্দোলনের হুমকির সমালোচনা করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বলেন আন্দোলন করবেন, এক দফা এক দাবি। কিন্তু মানবিকতা আন্দোলনের মাধ্যমে কামাই করা যায় না। আর আইন আইনের গতিতে চলবে। আইন জিয়াউর রহমানের গতিতে চলবে না।’
বিএনপি নেত্রীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উদারতার কথা তুলে ধরে আনিসুল হক বলেন, ‘গত বছরের মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে খালেদা জিয়ার বিষয়টি দেখার জন্য বলেন। প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহের কারণেই দণ্ড স্থগিত হয়ে খালেদা জিয়া এখন বাসায় আছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া যাবে না সেটা আমরা বলছি না। বিএনপির পক্ষ থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য যে দাবি করা হয়েছে সেটিও আমরা খতিয়ে দেখেছি। কিন্তু আবেদনে তো আর দুই রকমের সিদ্ধান্ত দেওয়ার সুযোগ নেই।’
বিএনপির সমালোচনা করে আনিসুল হক বলেন, ‘দাঁড়াইতে দিলে বইতে চায়, বইতে দিলে শুইতে চায়, আর শুইতে দিলে ঘুমাইতে চায়। এখন অবস্থা হইছে এই রকম আর কী। এখন কয় বিদেশে যাইতে দিতে হবে। পরিষ্কার কথা, এইটা তো যে ক্লাস টেনে পড়ে হেও বুঝে যে, একটা আইনে কোনো দরখাস্ত যদি নিষ্পত্তি হয়ে থাকে, সেই নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনা করার কোনো সুযোগ থাকে না। সে জন্য দুইবার ওনার (খালেদা জিয়া) বিদেশ যাওয়ার আবেদন আইন মন্ত্রণালয় নাকচ করেছে।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, শুনেছেন, ওনার (খালেদা জিয়া) পক্ষে ওনার বিদেশে যাওয়ার জন্য ১৫ জন আইনজীবী আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। আমি যে আইনের কথা বলছি, যে আইনে নাকচ করেছি, সেটি সঠিক। তারপরও কোথাও কোনো নজির আছে কি না, তা দেখার জন্য একটু সময় নিয়েছি।’
মন্ত্রী তার বক্তব্যে বিভিন্ন সময়ে করা খালেদার ‘আচরণের’ কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলে মারা যাওয়ার পর সান্ত্বনা দিতে খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়েছিলেন মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তখন খালেদা জিয়ার বাসার দরজা আটকে রাখা হয়।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক পৌর মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া বাদল। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুমানা আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মো. জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।