
রিংটন মন্ডল : আজ বৃহস্পতিবার শারদীয় দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী । হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হবে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। তাইতো মণ্ডপে মণ্ডপে নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয় ৫ দিনের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে। হিন্দু সনাতন শাস্ত্রমতে, নবমী তিথিতে রাবণ বধের পর রাজা শ্রী রামচন্দ্র এই পূজা করেছিলেন। নীলকণ্ঠ ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় নবমী বিহিত পূজা। নবমী পূজার মাধ্যমে মানবকুলে সম্পদ লাভ হয়। তাই শাপলা, শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে দশভুজা দেবীর পূজা হয়েছে। নীল অপরাজিতা ফুল মহানবমী পূজার বিশেষ অনুষঙ্গ। নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আহুতি দেওয়া হয়। ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ ও ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ করা হয়। এ বছর দেবী মা দুর্গা এবার গজে বা হাতিতে করে আসছেন। দেবীর এই আগমনকে শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলা বসুন্ধরার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এবং মা দুর্গা দোলায় গমন বা প্রস্থান করবেন যার ফলেন মহামারী বা মড়কের আশঙ্কা নির্দেশ করে। দুর্গতি নাশিনী মহিষাসুর মর্দিনীর আরাধণা শেষ হলে কৈলাশে স্বামীগৃহে ফিরবেন দেবী দুর্গা। বছরান্তে দেবী দুর্গার আগমনে মন্দিরে মন্দিরে বেজে ওঠা ঢাক-ঢোল, ঘণ্টা আর শঙ্খধ্বনিতে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে আবহমান বাংলা। মন্দিরে মন্দিরে মন্ত্র উচ্চারণ আর প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বিশ্বের অশুভ শক্তিকে তাড়িয়ে শুভকামনা করা হয়। গতকাল মহানবমীতে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে ভক্তের ঢল নামে। হাজার হাজার হিন্দু ভক্ত ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন মন্দিরে মন্দিরে দেবী দর্শনে আসেন। বিশেষ করে এদিন পুরান ঢাকার বিভিন্ন গলিতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। বেশ কয়েকটি মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মণ্ডপগুলোতে সকাল থেকে মানুষের আনাগোনা দেখা যায়, যা বিকেলের দিকে ভিড়ে পরিণত হয়। বিশেষ করে বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা নতুন পোশাকে পরিবারের সঙ্গে এসেছে। বাসায় ফেরার সময় মণ্ডপগুলোর বাইরে অস্থায়ীভাবে বসা দোকানপাট থেকে বাহারি সব খাবারসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যাচ্ছে। শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকা ভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়। মণ্ডপ প্রাঙ্গণে তৈরি করা হয় বর্ণিল তোরণ। বিভিন্ন পূজামণ্ডপে এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।