
মানহানিতে সাংবাদিকদের কারাদণ্ড নয়, জরিমানা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বা উসকানির অভিযোগে সর্বোচ্চ সাজা ৫ বছরের কারাদণ্ড থেকে কমিয়ে দুই বছর করা হচ্ছে
জন্মভূমি ডেস্ক : মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের অপরাধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থাকা কারদণ্ডের বিধান বাতিল করে নতুন আইনে শুধু জরিমানার বিধান করতে যাচ্ছে সরকার। মানহানির মামলায় দণ্ডিত হয়ে কেউ জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করতে পারলে তখন ৩ থেকে ৬ মাসের কারদণ্ড দেওয়া যাবে।
মানহানির জন্য সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হচ্ছে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে সাইবার সিকিউরিটি আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরে আইনমন্ত্রী সোমবার সচিবালয়ে তার দপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “২৯ ধারা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করা হয়েছে। শুধু শাস্তি হবে জরিমানা, সেই জরিমানা অনাদায়ে ৩ থেকে ৬ মাসের কারাদণ্ড থাকবে। সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে।
“কারাদণ্ড উঠিয়ে দিয়ে শুধু সাজা রাখা হয়েছে। দেওয়ানী আইনে যদি মানুষ ক্ষতিপূরণ চায় সেখানে কিন্তু ক্ষতিপূরণের কোনো লিমিট নেই। ১০০ কোটি টাকাও ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। সেইসব ক্যালকুলেশনে অনধিক ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। সর্বনিম্ন যে কোনো পরিমাণ জরিমানা করা যাবে। এক টাকাও জরিমানা করা যাবে কিন্তু ২৫ লাখ এক টাকা জরিমানা করা যাবে না।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় বলা আছে, “যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে চবহধষ ঈড়ফব (অপঃ ঢখঠ ড়ভ ১৮৬০) এর ংবপঃরড়হ ৪৯৯ এ বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।”
যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে ওই ব্যক্তি অনধিক ৫ (পাঁচ) বছরের কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮ ধারায় সাজা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড থেকে কমিয়ে নতুন আইনে দুই বছর করা হচ্ছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এটা আগে অজামিনযোগ্য ছিল, সেটিকে জামিনযোগ্য করা হচ্ছে।
২৮ ধারায় বলা আছে, (১) যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করার বা উসকানি দেওয়ার অভিপ্রায়ে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যা ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত করে, তাহলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে।
এই অপরাধে তাকে অনধিক ৫ (পাঁচ) বছরের কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।
যদি কোনো ব্যক্তি ওই অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহলে তিনি অনধিক ১০ (দশ) বছরের কারাদণ্ডে, বা অনধিক ২০ (বিশ) লাখ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তথ্যপ্রযুক্তির আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ সহ মোট ৫টি ধারা বিলুপ্তি করে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ পাস হয়।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬-সহ মোট ৫টি ধারা বিলুপ্ত করে জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ পাস হয়।
সংসদের আগামী সেপ্টেম্বর মাসের অধিবেশনে সাইবার সিকিউরিটি আইন পাস করা হবে জানান আইনমন্ত্রী।