কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্বিবিদ্যালয়ে (ইবি) গত দুই বছর ধরে কেন্দ্রীয় নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয় না। তবে ফি দিতে হয় নবীন সব শিক্ষার্থীকে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে আসা নতুন শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ক্লাস শুরুর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও নবীনদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই চিত্র ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষেও। যদিও ভর্তির সময় কেন্দ্রীয় ওরিয়েন্টেশন বাবদ শিক্ষার্থীদের থেকে ফি নেওয়া হয়েছে। দুইটি শিক্ষাবর্ষ থেকে আদায় হওয়া মোট টাকার পরিমাণ প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবশেষ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের কেন্দ্রীয়ভাবে নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গুচ্ছের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা হওয়া পরপর দুইটি ব্যাচের নবীনবরণ হয়নি। এছাড়া ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষেরও কেন্দ্রীয়ভাবে বরণ হয়নি। যদিও বিভাগগুলো শিক্ষার্থীদের নিজস্বভাবে বরণ করে নিয়েছে। এক্ষেত্রে বিভাগের শিক্ষার্থীরা চাঁদা তুলে কিংবা বিভাগের নিজস্ব ফান্ড থেকে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ইবির হিসাব শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু করে প্রতিজন শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় নবীনবরণ বাবদ ১০০ টাকা করে এককালীন ফি দিয়ে থাকেন। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে মোট ২ হাজার ৩৮৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। সে হিসাবে এই শিক্ষাবর্ষ থেকে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ আদায় হয়েছে। এদিকে, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪৮৪ জন। এই বর্ষ থেকে আদায় হয়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪০০টাকা। দুই শিক্ষাবর্ষ থেকে আদায় হওয়া মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯০০।
একাডেমিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে নবীনবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এজন্য তিনটি কমিটি করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে চার সদস্যবিশিষ্ট সুভ্যেনির কমিটিতে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলামকে, পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সাংস্কৃতিক কমিটিতে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকি বিল্লাহ বিকুলকে এবং পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট আয়োজন কমিটিতে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আদনান আবির নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর নবীনবরণের সঙ্গে আলাদা একটা আবেগ মিশ্রিত থাকে। আমার অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের নবীনবরণ হয়, শুধু আমাদেরই হয় না। ভর্তি হওয়ার সময় আমাদের থেকে ফি নেওয়া হলেও কেন্দ্রীয়ভাবে নবীনবরণ করা হয়নি। তাহলে আমাদের টাকা গেলো কই?
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখার পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জাকির হোসেন বলেন, এই টাকাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা হয়। পরে বাজেটে নিজস্ব আয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, এবছর (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) নবীনবরণ অনুষ্ঠানের জন্য কয়েকটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির কাজ চলছে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী ডেট ঠিক করা হবে।