
ডেস্ক রিপোর্ট : পটুয়াখালীর পুরো উপকূলজুড়ে অতিভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে সমুদ্রের সব মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকা গত ৫ দিন ধরে ঘাটে অবস্থান নিয়েছে। এদিকে টানা বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা।
আজ বুধবার (৯ জুলাই) প্রতিদিনের ন্যায় চলছে থেমে থেমে টানা বর্ষণ। পুরো উপকূলের আকাশে জমে আছে কালো মেঘ। কর্মহীন হয়ে পড়েছে পুরো উপকূলের নিম্নআয়ের মানুষ।
জেলায় গত ২৪ ঘণ্টা ২০০.২ মিলমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। টানা বৃষ্টিতে শহর এবং গ্রামের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। এছাড়া পানিতে তলিয়ে আছে জেলা সদরসহ বিভিন্ন পৌর শহরের অনেক সড়ক। অনেকের বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া তলিয়ে গেছে গ্রামাঞ্চলের অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। লোকসানে পড়েছেন মৎস্য চাষিরা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ধান চাষিরা।
এদিকে লঘুচাপের প্রভাবে উত্তাল রয়েছে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর। তীরে আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। উপকূলীয় এলাকা দিয়ে যে কোন সময় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই পটুয়াখালীর পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মাছধরা ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
মৎস্য বন্দর আলীপুর ঘাটে ৫ দিন ধরে অবস্থান নেওয়া এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আনোয়ার মাঝি বলেন, টানা ২ মাস সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে মাছ শিকারে নেমেছিলাম কিন্তু কপালটাই খারাপ, নামতে না নামতেই আবহাওয়া খারাপ হয়ে গেছে তাড়াহুড়ো করে ঘাটে চলে আসছি। সমুদ্রে কোনো ভাবেই থাকা যাচ্ছে না, সমুদ্র খুবই উত্তাল। আজকে টানা ৫ দিন ঘাটে বসে বসে খাচ্ছি, এভাবে চলতে থাকলে পরিবার নিয়ে কি খাব
জানি না।
এমভি আদিল ট্রলার মালিক রহিম খান বলেন, একটা ট্রলারে ৪-৫ লাখ টাকার বাজার করে ২০-২৫ জন জেলেদের সমুদ্রে পাঠাই। এরপর নামতে না নামতেই প্রতিবার দুই-একদিনের মধ্যে ঘাটে ফিরে আসতে হচ্ছে। ঘাটে বসে বসে জেলেরা অলস সময় পার করছে, এতে করে জেলে এবং ট্রলার মালিক উভয়পক্ষেরই অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সমুদ্রে মাছ শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় আমাদের অনেক লোকসনে ফেলে দিল।
জেলা আবহাওয়া অফিস বলছে আগামী ২৪ ঘণ্টা থেকে থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া চলমান থাকবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে চলাচল করতে বলা হয়েছে।