
যশোর অফিস : যশোর সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোপ গ্রামে সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভৈরব নদীর উপর বেইলি ব্রিজ নির্মাণের নামে তিনজন ইউপি সদস্য নিম্নমানের বাঁশের সাঁকো তৈরি করে লাখো টাকার সরকারি অর্থ লোপাট করেছেন।
ভৌগোলিকভাবে দ্বীপসদৃশ ঘোপ গ্রামের তিন দিক ঘিরে রয়েছে ভৈরব নদী। গ্রামের একমাত্র সংযোগ রূপদিয়া সড়ক দিয়ে। এলাকাটিতে নদীর উপর তিনটি সেতু থাকলেও দীর্ঘদিন সেগুলো অকেজো হয়ে আছে। এর মধ্যে ছাতিয়ানতলা সংলগ্ন সেতুটি ঘোপসহ আশপাশের ছয় গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল।
দীর্ঘদিন সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয়দের চলাচলে ভোগান্তি চরমে ওঠে। এ অবস্থায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে “ছাতিয়ানতলা-ঘোপ সংলগ্ন ভৈরব নদীর উপর একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ” প্রকল্প অনুমোদন হয়, যার ব্যয় ধরা হয় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে তৈরি একটি অস্থায়ী ও নড়বড়ে সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এই সাঁকোতে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০-৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে, অথচ পুরো প্রকল্পের বিল তোলা হয়েছে।
প্রকল্পের সভাপতি কচুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মশিয়ার রহমান ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তরিকুল ইসলাম জানান, “সাঁকোর ব্যয় সংক্রান্ত হিসাব ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও বিএনপি ওয়ার্ড সভাপতি সাঈদ মোল্লা ভালো জানেন।” তবে একাধিকবার চেষ্টা করেও সাঈদ মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
ঘোপ গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, “মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য সাঁকো করা হলেও এর মান এত খারাপ যে, কয়েক মাসের মধ্যেই এটি অচল হয়ে যাবে।”
উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা চৌধুরী মো. আসিফ রেজা বলেন, “৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ঘোপ এলাকায় ভৈরব নদীর উপর বেইলি ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন ও সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, “অত্র এলাকার মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল। বিষয়টি আমাদের নজরে আছে, দ্রুতই সরেজমিনে পরিদর্শন করা হবে।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সেতু বা ব্রিজের নামে এই নিম্নমানের সাঁকো নির্মাণ জনগণের সঙ্গে প্রহসন ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের স্পষ্ট উদাহরণ। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

