
জন্মভূমি ডেস্ক : কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। হঠাৎ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম মহসীন রেজা এমপিকে হাতের ইশারায় থামিয়ে উচ্চস্বরে বলেন, ‘অনেক হয়েছে, আপনি এভাবে আর দলের বারোটা বাজাবেন না।’ তার কথার সঙ্গে-সঙ্গে উপস্থিত নেতাকর্মীরাও এমপির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন। তাৎক্ষণিক এমপি মাইক রেখে বসে পড়েন। গত বুধবার উপজেলার কালনা আমিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সভায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, খুলনা-৬ আসনের এমপি মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলছেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণমানুষের দল। এখানে কর্মীদের উচ্ছ্বাস থাকবে। কর্মীরা স্লোগান দিয়ে এগিয়ে আসবে। স্লোগান হচ্ছে এই দলের প্রাণ।
ওই সময় কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম মহসীন রেজা দাঁড়িয়ে এমপিকে থামিয়ে বলেন, এখানে উসকানি দেবেন না। উসকানিমূলক বক্তৃতা দিলে হবে না। আপনি আর দলের বারোটা বাজাবেন না। অনেক করেছেন। আমরা কিন্তু এতদিন কোনো কথা বলিনি।
উপজেলা সভাপতি জিএম মোহসিন রেজা বলেন, দীর্ঘদিন দল ক্ষমতায় থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাওয়া না পাওয়ার ক্ষোভ রয়েছে। সে কারণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় নেতা-কর্মীদের মনের শক্তি ফিরে পেতে সাতটি ইউনিয়নে শোকসভার আয়োজন করেছি। প্রোগ্রামগুলো দেখে জনগণও বুঝবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এক। এখানে কেউ কারোর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়া যাবে না। উনি (এমপি) প্রোগ্রামে বারবার ১০-১২ জন ছেলে নিয়ে যান। উনি (এমপি) যখন বক্তব্য দেন তখন ওই ছেলেগুলো শুধু স্লোগান দেয়। জেলার সিনিয়র নেতা-কর্মীদের বক্তব্যের সময় ওই ছেলেরা স্লোগান দেয় না। তাহলে দলের সিনিয়র নেতা-কর্মীদের অপমান করা হয়। এই ব্যাপারটা এমপি বুঝতে চান না। তিনি আরও বলেন, এমপি হচ্ছে দলের ফসল। পূর্বে আমরা দেখেছি, নেত্রী বরাদ্দ দিলে দলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বসে আলোচনা করে নেন। কিন্তু উনি (এমপি) ঘরে বসে-বসে তার অনুসারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাগবাটোয়ারা করেন। কোথায় উন্নয়ন করেছেন আমরা জানি না। উনি এমপি হয়েছেন দলের কারণে, ব্যক্তিগত কারণে না। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, পানির ট্যাংক ও টিউবওয়েল কোথায় দিচ্ছে তাও আমরা জানি না। এসব বিক্রি করে কেউ শত কোটি টাকার মালিক হয়ে যাবে আর দলের নেতা-কর্মীদের ভিক্ষা করে খেতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবুর মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।