# মোংলা বন্দরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ চলছে
শেখ আব্দুল হামিদ
বৃহত্তর খুলনায় লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলেছে করোনার ভয়াবহতা। সরকারের কঠোর লকডাউনের প্রেক্ষিতে আক্রান্তের হার কিছুটা কমে আসলেও শিথিলতায় ফের বাড়তির দিকে রয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত আগামী ঈদুল ফিতরের আগেই করোনা চ‚ড়ান্ত রূপ নিতে পারে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বক্ষমতাও এক সময় হারিয়ে যাবে। তখন পরিস্থিতি কি হবে এ নিয়ে ভাবনা স্বাস্থ্য বিভাগের। তাছাড়া প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউ আরও শক্তিশালী হওয়ায় শঙ্কিত সচেতন মহল।
করোনার প্রথম ঢেউ ২০২০ সালের মার্চ মাসে খুলনায় আঘাত হানলেও ভয়াবহরূপ ধারণ করে জুন-জুলাই মাসে। পরে আগষ্ট মাস থেকে ধীরে ধীরে কমে আসে। এ বছর খুলনায় মোট আক্রান্ত হয় ৭ হাজার ১৬২ জন নারী পুরুষ। আর এসময়ে মৃত্যু হয় ১১৪ জনের। চলতি সালেও মার্চ মাসে দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। মাত্র দেড় মাসেই আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। কঠোর লকডাউনের মাঝেও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে কয়েক হাজার শ্রমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করেছে। আগামীতে কতটা রক্ষা করা যাবে এনিয়ে উদ্বিগ্ন সকলেই।
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মোট বেড সংখ্যা ১০০টি। আইসিইউ বেড রয়েছে ১০টি। ভ্যান্টিলেটর রয়েছে ১০টি। হাই ফ্লো অক্সিজেন মেশিন ২৪টি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আরও ৫০টি বেড যোগ হবে। প্রক্রিয়াধিন রয়েছে আরো ০৪টি ভ্যান্টিলেটর স্থাপন, ২০টি আইসিইউ বেড, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিষ্টেম তৈরীর জন্য ভায়া ট্যাংক স্থাপনের কাজ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা, ওএসপি, এনপিপি, আরসিডিএস, এএফডবিøউসি, পিএসসি বলেন, করোনার ভয়াবহতায় সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। করোনার মহামারির ভিতরেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যে যার কাজ করে গেলে কোন অসুবিধা হবার কথা নয়। তিনি বলেন, লকডাউনের মাঝেও মোংলা বন্দরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে। লতডাউনে কোন ইফেক্ট ফেলতে পারেনি। হাজার হাজার শ্রমিক লকডাউন জোনের আওতামুক্ত থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা রীতিমত মাস্ক ব্যবহার করছেন। তাদের সচেতনতায় তারা সুস্থ আছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, লকডাউনের মধ্যেও মানুষ মাস্ক ব্যবহার না করে রাস্তায় নেমেছে। তারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাচলের চেষ্টা করে। নিজের ভালো নিজে না বুঝলে তার পরিণতি খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। করোনার গতি এখনও উর্ধমুখি। প্রতিদিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ৭০ থেকে ৯০ জন পর্যন্ত পজিটিভ রোগী পাওয়া যাচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ জনের মৃত্যু হচ্ছে। তার পরেও মানুষের মধ্যে সচেতনতা আসছে না। তিনি বলেন, হাসপাতালে এখন ১০০ বেড় চালু রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও ৫০ বেড চালু হবে। তবে ঈদের আগে এবং পরে কি পরিমাণ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে এখন বলা সম্ভব নয়। এক পর্যায়ে দেখা যাবে হাসপাতালে স্বক্ষমতা থাকবে না। তখন রোগীদের কোথাও রাখা হবে এ নিয়ে চিন্তিত।