মোঃ এজাজ আলী
গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি রোগী শনাক্তের খবর দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দৈনিক মৃত্যুও ছাড়িয়েছে ২০০। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে, গত এক সপ্তাহে ৭৭ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৩৫৪ জনের। এর মধ্যে এই প্রথম দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়ায় সোমবার। এদিন ২২০ জনের মৃত্যু হয়। এর আগের দিন রোববার ২৩০ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়। গত ২৪ ঘন্টায় সারা দেশে ২০৩ জনের মৃত্যু হয়। এসময় শনাক্ত হয়েছে ১২ হাজার ১৯৮ জন। মহামারীর এক বছরের বেশি সময় পর এখন মৃত্যু কেন এত বাড়ছে, এই প্রশ্নে চিকিৎসকরা সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন। তারা বলছেন, সংক্রমণ এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়েছে। আক্রান্ত হলেও মানুষ তা আমলে নিচ্ছে না। শেষ সময়ে আসছে চিকিৎসা নিতে, তখন কিছুই করার থাকছে না। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আবার চিকিৎসা ব্যবস্থার অব্যবস্থাপনাকেও কাঠগড়ায় তুলছেন। তারা বলছেন, মহামারীর এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও জেলা হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ দেওয়া যায়নি, সেবাও নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে রোগীদের ঘুরে ঘুরে মরতে হচ্ছে। আবার দেশে এখন কোভিড রোগীর যে ধরনটি আক্রান্ত, সেই ডেল্টা বিশ^ জুড়েই উদ্বেগের বড় কারন হিসেবে চিহিূত করেছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার জন্য দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসাকে মূল কারন হিসেবে চিহিূত করছেন কেশবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. প্রদীপ্ত চৌধুরী। তিনি বলেন, জ¦র হওয়ার পর অনেকে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে এমনিতে ভালো হয়ে যাবে বলে বসে থাকছে। এভাবে অবস্থা বেশি খারাপ যখন হয়ে পড়ে, তখন হাসপাতালে আসছে। দেখা যাচ্ছে, যারা হাসপাতালে এসে মারা যাচ্ছে, তারা হয়তো একদিন বা একদিনের কম চিকিৎসা নিয়েই মারা যাচ্ছেন। এত বেশি খারাপ অবস্থায় রোগীরা আসছে যে, আমরা একদিনও সময় পাচ্ছি না সেবা দেওয়ার জন্য। ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার তানভীর ইসলামও মনে করেন, সচেতনতার অভাবই পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। তিনি বলেন, এসব রোগী প্রতিনিয়তই পাই যে, তাদের ভাষ্য মতে তারা সাধারনত সর্দি জ¦রে আক্রান্ত, কিন্তু টেষ্ট করার পর পজিটিভ হচ্ছেন। কোভিড পজিটিভ হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই টেষ্ট করাতে যায় না। সাধারন সর্দিজ¦র ধরে নিয়ে ঘোরা ঘুরি করতে থাকে, জনসমাগমে যায়। এই চিকিৎসক বলেন, যারা সচেতন তারা বুঝতে পারলেই চিকিৎসা নিতে আসছেন। যারা সাধারন সর্দি কাশি ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন, তাদের অনেকেই গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে শেষ সময়ে আসছেন। তখন তেমন কিছু করার থাকে না তাদের।
করোনায় মৃত্যু এখন কেন বাড়ছে
Leave a comment