জন্মভূমি ডেস্ক : ড. ইউনূস মর্যাদাপূর্ণ নোবেল পুরস্কার পাওয়ায় শেখ হাসিনা তার বিরোধিতা করেন বলে যারা অভিযোগ তোলেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি কাউকে ঈর্ষা করেন না। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার কোনো আকাঙ্ক্ষাও তার নেই। লবিস্ট নিয়োগের মতো অর্থ তার নেই বলেও জানান সরকারপ্রধান।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) বেলা ১১টায় গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ভারত সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ড. ইউনূসের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার কোম্পানির শ্রমিকরা। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। সরকার শ্রমিক অধিকার রক্ষার ব্যাপারে আন্তরিক। এখানে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।
এ সময় তিনি নোবেল পুরস্কার পাওয়ায় ড. ইউনূসের বিরোধিতার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে আলাদা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। এই পুরস্কার নিয়ে আমার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই। এর জন্য লবিস্ট নিয়োগ করার টাকাও নেই আমার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পর অনেক নোবেল জয়ী আমার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন। ভেবে দেখেন, আমি আসার আগে কয়জন পার্বত্য চট্টগ্রাম যেতে পেরেছেন?
ড. ইউনূসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ড. ইউনূস রাজনৈতিক দল গঠন করতে চেয়েছিল। কিন্তু সে দল গঠন করতে পারে নাই। সে যদি গ্রামের মানুষকে এত কিছুই দিয়ে থাকে, তাহলে তো সেই মানুষগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। কই, কেউ তো ঝাঁপিয়ে পড়েনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ড. ইউনূসের সাথে হিংসা করার কী আছে। সে পারলে আমার সাথে বিতর্কে আসুক। আমেরিকায় যেভাবে ডিবেট হয়, সেভাবে ডিবেট করুক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মেয়ে। এই জায়গায় কেউ আসতে পারবে না। আমি কারও সাথে জেলাসি করি না। আমি এর, ওর কাছে ধরনা দিয়ে বেড়াই না। দেশ বেচি না, দেশের স্বার্থও বেচি না।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সরকার লাগতে যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক জেনারেল এরশাদের আমলে হয়েছে। ড. ইউনূস সেখানকার এমডি ছিলেন। সেখানের শ্রমিকদের বেতন তুলতেন। বয়স ৬০ বছরের বেশি হওয়ায় তাকে ওই পদ থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। তিনি সরে যাননি। সে সময় তিনি অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে হেরে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার বিরুদ্ধে মামলাও সরকার করেনি। গ্রামীণফোনের ব্যবসা আমি তাকে দিয়েছিলাম। একটি টাকাও তিনি ব্যাংককে দেননি। তিনি সব টাকা নিজের করে নিয়েছেন।
সরকারপ্রধান বলেন, শ্রমিকদের মামলায় ড. ইউনূস সাজা পোয়েছেন। ইউনূসকে উঠিয়েছিলাম আমি। এতই যদি করেছেন তবে দারিদ্র্যমুক্ত হলো না কেন। দেশে দারিদ্র্যের হার কমিয়েছি আমি।
ড. ইউনূস শেখ হাসিনার হাতেই সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছেন বলেও দাবি করেন সরকারপ্রধান।