ডেস্ক রিপোর্ট : ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামীলীগ সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান মেয়র,কাউন্সিলর,চেয়ারম্যানও ইউপি সদস্য। আওয়ামীলীগ পন্থি পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের বেশির ভাগই এখন আত্মগোপনে। অনেকের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামীলীগপন্থি প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলররা উধাও। মাঠে আছেন বিএনপি-জামায়াতপন্থি কয়েকজন ইউপি সদস্য, কাউন্সিলর। কয়েকজন ইউপি সদস্য প্রানের ভয়ে দেশের বাইরে চোলে গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তারা অনুপস্থিত থাকায় নাগরিক সেবার জন্য বিকল্প দায়িত্ব প্রাপ্ত হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।মানুষের তোপের মুখ থেকে বাঁচতেই তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। শুধু তাই নয় এসকল চেয়ারম্যানরা পালিয়ে গিয়েও কোন রক্ষা হবে না তাদের অনেকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।বিশেষ করে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দীর্ঘদিন মানুষের সাথে জুলুম অত্যাচারের সাথে জড়িত ছিলো। মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে এমন কিছু নাই যে তারা না করেছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে অনেকেই আবার কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছে।এই সকল সন্ত্রাসীদের অপকর্মের টাকার ভাগ পেতেন সংশ্লিষ্ট আসনের সাবেক এমপিরা।
এদিকে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম, সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু (বর্তমানে জেল খানায় রয়েছে),উপজেলা চেয়ারম্যান শিবলি নোমানী ও জাহাঙ্গির সিদ্দিকী ঠান্ডু,ইউপি চেয়ারম্যান,মোদাচ্ছের হোসেন,আয়ুব হোসেন,আবুল কালাম আজাদ,আয়ুব হোসেন খান, মহিদুল ইসলাম মন্টু,নাছির চৌধুরি, নজরুল ইসলাম সানা, আলী হোসেন অপু,রাজু আহম্মেদ রনি পালিয়ে রয়েছে। আবার অনেক ইউপি সদস্যরা বিএনপির সাথে মিশে গিয়ে এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। আবার কেউ কেউ জেলখানা থেকে জামিন নিয়ে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে রয়েছে। এদিকে মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম খা ও ত্রিলোচানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম রিতু এ দু,জন নিয়মিত পরিষদের কাজ করছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে তন্মধ্যে দু,জন ব্যাতিত অন্যরা সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।বিতর্কীত নির্বাচনে এসব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান,উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র,পৌরসভার কাউন্সিলারসহ প্রায় সবাই আওয়ামীলীগের অনুসারিরা জনপ্রতিনিধি হন। কিন্তু ফ্যাসিবাদি আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর জনগনের ভয়ে তারা পালিয়েছে। এ ছাড়া অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান পৌরসভার মেয়র,উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যদের নামে একাধিক মামলা ও হয়েছে। অনেকে মামলায় জামিন নিয়ে কালীগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে থেকে অন্যাত্র গিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা করছে। আবার কেই কেউ দেশের বাইরে চোলে গেছে। কালীগঞ্জের ১১ টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৯ টি ও পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে, সে সব কর্মকর্তারা নিয়োমিত দায়িত্ব পালন করছেন। মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম খা ও ত্রিলোচানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম রিতু (হিজড়া) এ দু,জন নিয়মিত পরিষদের কাজ করছেন এবং তাদের নামে কোন মামলা হয়নি। অনেক আওয়ামীলীগের ইউপি সদস্যরা স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সাথে গোপন আতাত করে এলাকায় আশ্রয় পেয়েছেন। আবার কেউ কেউ বিএনপি রাজনৈতিক দলে ভিড়ে গিয়ে রাজনীতি করছেন। তাদের কে দলে নেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে এক অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা পাল্টি বক্তব্য দিয়ে থাকেন এবং রাজনৈতিক মঞ্চে বসিয়ে সমাবেশ করেন। পালিয়ে থাকা অনেকেই গোপনে রাতে বাড়িতে এসে ২/৩ দিন থেকে গোপনে চোলে যায়।
এসব জনপ্রতিনিধিরা আধিপত্য ধরে রাখতে অনুসারীদের নিয়ে গড়ে তোলেন শক্তিশালী বলয়। তাদের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতেন জনপ্রতিনিধিদের নির্দিষ্ট এলাকা। তাদের অনুসারীদের দাপটে অতিষ্ট ছিল সাধারণ মানুষ। বিপক্ষে কেউ কথা বললে নানা হয়রানি করা হতো বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। তবে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন উল্লেখিত জনপ্রতিনিধিরা। বিশেষ করে ঝিনাইদহ ৪ আসনের আব্দুল মান্নান ও আনোয়ারুল আজীম আনার এমপি হওয়ার পর থেকেই প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। তার অনুসারীদের রাজনৈতিক পদবিসহ উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসান।ক্ষমতার দাপটে গোটা উপজেলায় জনপ্রতিনিধিরা ছিলেন একক ক্ষমতার অধিকারী। কালীগঞ্জ উপজেলার হাসপাতালের সামগ্রী ক্রয়ের টেন্ডার,বাফার গোডাউন,মোবারকগঞ্জ চিনিকল,রেজিষ্ট্রি অফিস,বাস টার্মিনাল, রেলষ্টেশন, বড় বড় হাট-বাজার ইজারা, খাল, সেতু নির্মাণ, স্কুল-কলেজে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগসহ বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ সবই ছিল অনুসারীদের দখলে। বিগত সরকারের সময়ে বিভিন্ন দপ্তরের শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ কাগজে-কলমে অন্য ঠিকাদারের নামে থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়েছে সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য এমপি আনারের ব্যাক্তিগত সহকারি আব্দুর রঊফের মাধ্যমে।
কালীগঞ্জের মেয়র-চেয়ারম্যানরা এলাকা ছেড়ে আত্নগোপনে

Leave a comment