যশোর প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুরের ভালুকঘর মাদ্রাসায় গোপনে নিয়োগ বোর্ড করার পায়তারা চালাচ্ছে একটি চক্র। তাদের টার্গেট কোটি টাকা নিয়োগ বানিজ্যের। এ অভিযোগ গভর্ণিংবডির দাতা ও অভিভাবক সদস্যদের।
দাতা সদস্য ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা জানান, নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আজিুজুল ইসলাম নির্বাচনোত্তর প্রথম সভায় নিয়োগ বানিজ্য বন্ধের ঘোষনা দেন। তিনি বলেছিলেন ’আজ থেকে কেশবপুরে কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বানিজ্য চলবে না’। নিয়োগ হবে নিয়ম তান্ত্রিক পন্থায় স্বচ্ছতার ভিত্তিতে। সংসদ সদস্যের এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে চক্রটি মরিয়া হয়ে উঠেছে গোপন বোর্ড করে অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটাদাগের টাকা বাগিয়ে নেয়ার জন্য। এরই মধ্যে কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে আগাম টাকা নেয়া হয়েছে বলে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন।
ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা বলেন, গভণিং বডির সভাপতিকে অবৈধ দাবি করে আসছেন নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যরা। তাদের দাবি কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনয়ন নেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত অভিযোগ ইসলামিক আরবি বিশ^বিদ্যালয়ে তদন্তাধীন রয়েছে। অপর দিকে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলা বিচারাধীন আছে আদালতে। তিনি বলেন, এসব বিষয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জানালেও তিনি তা আমলে নেননি। আমলে নেননি সভাপতিও। উল্টো তাদেরকে (জিবি সদ্যদের) গোপন করে সব কিছু করছেন। তিনি বলেন, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং কর্মচারী নিয়োগের জন্য ঢাকার যে কাগজে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তা যশোরে আসেনা, কেউ পড়েও না। পুর্ব নির্ধারিত বা পছন্দের প্রার্থীর কাছ থেকে নিয়োগ বানিজ্য করার জন্য এসব করা হয়েছে।
এব্যাপারে অভিভাবক সদস্য হায়দার আলী জানান, মাদ্রাসায় কে কখন অধ্যক্ষ হচ্ছেন কে বাদ যাচ্ছেন তারা কিছুই জানেন না। তাদেরকে জানানোও হয়না। সব কিছু চলছে সভাপতি আর তথা কথিত সহ-সভাপতির আঙ্গুলের ঈশরায়। কবে কোন কাগজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে তা তারা জানেন না। নোটিশ বোর্ডে কোন বিজ্ঞপ্তি টাঙ্গাতে দেখেনি কেউ। আমরা জানতাম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরবি শিক্ষক মশিহুর রহমান। এখন শুনছি বিজ্ঞানের শিক্ষক চিত্তরঞ্জন মন্ডল। কবে কোথায় কোন মিটি্এং তাকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হলো তা জানিনা। শুনেছি প্রতিবেশী খোরশেদ গাজী এবং জালাল সরদারের ছেলের নাকি চাকরি হচ্ছে। তারা জমি বন্ধক রেখে টাকাও দিয়েছেন। সভাপতির নাম করে কথিত শিক্ষক প্রতিনিধি কামাল গং এই টাকা নিয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
এব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চিত্ত রঞ্জন মন্ডল জানান, অধ্যক্ষ, ল্যাবসহকারী এবং নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সভাপতি তারিখ ঘোষনা করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ লেনদেনর ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। নিয়োগ প্রক্রিয়ার যাবতীয় কাজ করছেন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কামাল হোসেন।
কামাল হোসেন প্রসঙ্গে স্থানীয় এলাকার মনিরুজ্জামান এবং আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, শিক্ষাকতা পেশা তার সাইন বোড। নিয়োগ বানিজ্যসহ নানা ধরনের তদ্বির নিয়ে তিনি ব্যস্ত থাকনে। চাকরি দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছেন। এব্যাপারে থানায় জিডি এবং আদালতে মামলা রয়েছে। তাকে বেশির ভাগ সময় ইউএনও অফিস, শিক্ষা অফিস এবং এডিসি শিক্ষার অফিসে ঘুর ঘুর করতে দেখা যায়। সভাপতির তলপিবাহক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। বরং তিনি সহকর্মীদের উপর খবরদারি করেন। সম্প্রতি তাকে তদ্বির নিয়ে এমপির বাড়িতে দেখা গেছে। কিন্ত পাত্তা না পেয়ে ফিরে আসেন।
এব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এডিসি শিক্ষার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সকলের সাথে বসে নিয়োগ প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করা হয়েছে।
এবিষয়ে দাতা সদস্য ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা ও অভিভাবক সদস্য হায়দার আলী বলেন, সভাপতি মিথ্যা কথা বলেছেন। এপর্যন্ত তিনি তাদেরকে নিয়ে একটি সভাও করেননি। এখন নিয়োগ বানিজ্য করার জন্য গোপনে বোর্ড করার চেস্টা করছেন। সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতায় প্রতিষ্ঠানে লেখা পড়ার পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে বলেও দাবি করেন তারা।