শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের দিনক্ষণ এগিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়ছে উৎসাহ উদ্দিপনা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে কাউন্সিলর প্রার্থীরা পৌঁছে তাদেরকে নির্বাচনমুখী করে তুলছেন। এবারের নির্বাচনে মোট ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোটারদের মধ্যে রয়েছেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৮ জন পূরুষ ও ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৪ জন মহিলা। গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে মোট বোটার বেড়েছে ৪২ হাজার ৪২৯ জন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন।
গত ২০১৩ সালের নির্বাচনে খুলনায় মোট ২৮৮টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এসময় এক লাখ ৮০ হাজার ৯৩ ভোট পেয়ে বিএনপি প্রার্থী (আনারস প্রতীকে) মনিরুজ্জামান বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামীলীগের তালুকদার আব্দুল খালেক (তালা প্রতীকে) পেয়েছিলেন এক লাখ ১৯ হাজার ৪২২ ভোট। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মোট ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২৮৬টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণায় নৌকা প্রতীকে তালুকদার আব্দুল খালেক ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯০২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ধানের শীষ প্রতীকে ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট লাভ করেন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবার মোট চারজন প্রার্থী ময়র পদে নির্বাচন করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক এবার চতুর্থবার নৌকা প্রতীক নিয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যান্যরা হলেন জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু (লাঙ্গল প্রতীক)। ইসলামী আন্দোলন মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়াল (হাতপাখা) ও জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী এসএম সাব্বির হোসেন (গোলাপ ফুল)। এছাড়া কাউন্সিলার পদে ৩১টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ১৩৬ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন।
উল্লেখ্য খুলনা নগরী হিসেবে মর্যাদা লাভ করে ১৮৮৪ সালে। কলকাতা গেজেট অনুযায়ী ১৮৮৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর খুলনাকে মিউনিসিপাল বোর্ড ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৩ ডিসেম্বর রেভারেন্ড গগন চন্দ্র দত্ত প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তখন টুটপাড়া, শেখপাড়া, চারাবাটি, হেলাতলা এবং কয়লাঘাট এলাকার সমন্বয়ে খুলনা পৌর সরকার যাত্রা শুরু করে। মিউনিসিপ্যালিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্ডিন্যান্স (পৌরসভা প্রশাসন অধ্যাদেশ)-এর দ্বারা খুলনা মিউনিসিপাল বোর্ডের নাম পাল্টে খুলনা মিউনিসিপাল কমিটি করা হয়, পাশাপাশি পৌর এলাকাকে ৪.৬৪ বর্গমাইল থেকে উন্নীত করে ১৪.৩০ বর্গমাইল করা হয়। তখন মিউনিসিপাল কমিটির সদস্য ছিলেন ২৮ জন এবং শহর ১৪ টি ওয়ার্ডে বিভক্ত ছিলো। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ লোকাল কাউন্সিল অ্যান্ড মিউনিসিপ্যাল কমিটি (ডেসোলেশন অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যারেঞ্জমেন্ট) অর্ডার – ১৯৭২ এর ক্ষমতা বলে খুলনা মিউনিসিপালিটির নাম বদলে খুলনা পৌরসভা করা হয়। ১৯৮৪ সালের ১২ ডিসেম্বর খুলনা শহরের শতবর্ষপূর্তিতে তৎকালীন প্রেসিডেন্ড হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ খুলনাকে মিউনিসিপাল কর্পোরেশন হিসেবে উন্নীত করেন। ১৯৯০ সালের ৬ আগস্ট খুলনাকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করা হয়।