
খুলনা সুবিধাবঞ্চিতদের ফ্রি স্বাস্থ্য সেবা দিতে কাজ করবে ‘ স্বপ্নপূরী ডিজিটাল হাসপাতাল’। অনলাইনে চিকিৎসকের ভিডিওকলে কথা বলার জন্য সংগঠনটি ডক্টর ভিডিও কল চালু করেছে। খুলনার স¦নামধন্য চিকিৎসকদের দিয়ে এ চিকিৎসা সুবিধা তারা দেবে।
রবিবার বিকাল সাড়ে তিনটায় এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের যাত্রা শুরু করে। এর আগে তারা সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে একটি পথশিশু স্কুল পরিচালনা করতো।
রোগীরা নিজ বাসা থেকে খুব সহজেই ডাক্তারের সঙ্গে চ্যাট, ভিডিও কলের মাধ্যমে পরামর্শ পাবেন। চিকিৎসা পরামর্শ ছাড়াও ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন, ওষুধ ডেলিভারি, বাসা থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করে মেডিকেল টেস্টের সুযোগ পাওয়া যাবে ডিজিটাল হসপিটালের হেল্থ পার্টনারদের মাধ্যমে।
ডিজিটাল হসপিটালের লক্ষ্য হচ্ছে, মোবাইলের মাধ্যমে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা সরবরাহ করে স্বাস্থ্যসেবা খাতে পরিবর্তন আনা এবং চিকিৎসা সেবা আরও সহজলভ্য করে দরিদ্র ও গ্রামীণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা খরচ কমিয়ে আনা।
ডিজিটাল হসপিটালের স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে খুব সহজেই যে কেউ নিতে পারবেন ডাক্তারি পরামর্শ।
সমন্বয়ক মোফাস্সির আলম লেলিন বলেন, আমরা ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সুবিধাবঞ্চিত নিয়ে কাজ শুরু করেছি। তবে আমরা পর্যায়ক্রমে খুলনার অন্যন্য ওয়ার্ডের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ও ছিন্নমুলদের মাঝেও আমরা কাজের পরিধি বাড়াবো।
সহ পরিচালক মুন্নি আক্তার বলেন, আমাদের শুরু হয়েছিল সুবিধাবঞ্চিত মানুষের শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে। কিন্তু এ মুহুর্তে শিক্ষার চেয়ে বেচে থাকাটা খুব জরুরি। তাই আমরা এ ধরণের উদ্যোগ নিয়েছি।
পরিচালক এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে খুলনার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সেবা করা এবং আমাদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মানুষের জীবনে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে আশাবাদী।’
এ্যাড মোঃ বাবুল হাওলাদার বলেন, করোনাকালিন দূর্যোগময় মুহুর্তে আমাদেও সকলের এগিয়ে আসা উচিত। এখানে স্বপ্নপুরীর এমন একটি সুন্দও উদ্যোগ খুলনাবাসীর জন্য বড় আশির্বাদ।
জন উদ্যোগ নারী সেলের আহবায়ক এ্যাড শামিমা সুলতানা শিলু বলেন, শুধু সরকার নয় এ দূর্যোগকারীন সময়ে সবার এগিয়ে আসা উচিত। এখানে সবাই তরুন। তরুনদের দ্বারা এমন একটি উদ্যোগ করোনা মোকাবেলায় সহযোগিতা করবে।
চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, দেশের এ করোনাকালিন সময়ে একাধিক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন এগিয়ে আসলেও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য স্বপ্নপূরীই প্রথম এগিয়ে এসেছে। এ জন্য তিনি স্বপ্নপূরীকে সাধুবাধ জানান।
বয়রা মহিলা কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল সৈয়দা লুৎফুন্নাহার বগেম বলেন, তরুনদের এমন একটি উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয় । স্বপ্নপুরীর এ সকল তরুনদের পাশে সমাজের সকল শ্রেনীর মানুষের পাশে থাকা উচিত। এ সময় স্বপ্নপুরী ডিজিটাল হাসপাতালের পাশে থাকার আহবান জনান সবাইকে।
গাজি মেডিকেল হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের সহ সভাপতি ডাঃ সাইফুজ্জামান জিয়ন বলেন, রোগীদের বাড়িতে বসে সহজে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করার চেষ্টা করছি। এটি মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সহজলভ্য করে তোলার পাশাপাশি করোনার ভাইরাস সংক্রমণ হ্রাস করতেও সহায়তা করবে। কারণ রোগীদের একেবারে প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে যাওয়ার দরকার পরবে না।’
স্বপ্নপূরী ডিজিটাল হাসপাতাল’র পরিচালক এম সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে পরিচালনা করেন সমন্বয়ক মুফাস্সির আল লেলিন। সঞ্চালনা করেন মফিজুল ইসলাম । এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএমএর সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম, গাজি মেডিকেল হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের সহ সভাপতি ডাঃ সাইফুজ্জামান জিয়ন, বয়রা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যাক্ষ সৈয়দা লুৎফুন্নাহার, জনউদ্যোগ নারী সেলের আহবায়ক এ্যাড শামীমা সুলতানা শিলু, সিপিবির খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক এ্যাড বাবুল হাওলাদার, চেম্বার অব কমাসের্র পরিচালক মোঃ মফিদুল ইসলাম টুটুল, স্বপ্নপূরী সাধারণ সম্পাদক মুন্নি আক্তার, স্বপ্নপূরী উইমেন্স ফোরামের সভাপতি বনানী দাস, স্বপ্নপুরীর সদস্য মোঃ ইমরান হোসাইন, স্বপ্নপূরী দলিত ফোরামের সমন্বয়ক সাবরিন সুলতানা রিমি। ভার্চুয়াল অন্ষ্ঠুানটি বিএমএর সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম সমাপ্তি করেন।
অনুষ্ঠান শেষে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের রেলওয়ে এলাকার গ্রীনল্যান্ড বস্তিতে ভার্চুয়ালি চিকিৎসা সেবা প্রদান করে গাজি মেডিকেল হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক পরিষদের সহ সভাপতি ডাঃ সাইফুজ্জামান জিয়ন।