
মোঃ এজাজ আলী : খুলনায় সরকারি নীতিমালা না মেনেই যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিন্ডার। বিস্ফোরক পরিদপ্তর বলছে, খুচরা বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নিয়ম নীতির মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ ৮টি (১০০ কেজি) এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি করতে পারবেন। যদিও এ সকল দাহ্য পদার্থ অনুমোদনহীনভাবে বিক্রয়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত, তবুও অসাধু কিছু ব্যবসায়ী নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অবাধে বিক্রি করছে এ সকল দাহ্য পদার্থ। তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সিলিনাডার ও পেট্রোল বিক্রির জন্য বিস্ফোরক লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, নো অবজেকশন সার্টিফিকেট, টিআইএন, ট্রেড লাইসেন্স ও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখার নিয়ম থাকলেও প্রয়োগ নেই। সহজলভ্যতাই দাহ্য বিক্রিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। বিস্ফোরক অধিদপ্তর খুলনার তথ্যানুসারে, বর্তমানে খুলনা জেলা ও মহানগরী এলাকায় বিস্ফোরক পরিদপ্তর হতে লাইসেন্সগ্রহী প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৬৫৮টি এবং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ১৪০টি। সরকারি নিয়মানুসারে, এলপিজি গ্যাস সিলিনাডার, পেট্রোল বা দাহ্য পদার্থ বিক্রির জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধাপাকা ঘর, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। একইসঙ্গে একজন ব্যবসায়ী এই শর্তগুলো পূরণ করলেই কেবল পেট্রোল জাতীয় দাহ্য পদার্থ বিক্রির নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। দপ্তরটি আরো জানিয়েছে, খুচরা বিক্রির ক্ষেত্রে লাইসেন্স ছাড়া একজন খুচরা বিক্রেতা সর্বোচ্চ ৮টি পর্যন্ত এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার (১০ কেজি), পেট্রোল বিক্রিতে ২৫লিটার, ডিজেল ও কোরোসিন বিক্রির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০০০ লিটার পর্যন্ত লাইসেন্স ছাড়া বিক্রি করতে পারবেন। জনবল সংকটসহ পরিবহন ব্যবস্থার অসুবিধার কারনে। অফিস প্রধান জানিয়েছে, সহকারী পরিদর্শকসহ কয়েকটি পদে রয়েছে জনবল সংকট। সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর নিরালা, গল্লামারী, ডাকবাংলা, জোড়াগেট, সিএন্ডবি কলোনী, রূপসা, নতুন বাজার, বয়রা, বাস্তুহারা কলেঅনী, বৈকালী, খালিশপুর, দৌলতপুর, মানিকতলা, ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি, আটরা, ফুলতলা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বাজারসহ মুদির দোকান, ফ্লেক্সিলোডের দোকানসহ পাড়া মহল্লার হাট বাজারে নিয়মহীনভাবে চলছে এই এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার। গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা শাহাদাত জানান, আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সারা দিতন দু’একটা গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করি। এলাকার মধ্যে চাহিদা থাকায় দোকানে গ্যাস রেখেছি এবং চাহিদা থাকায় পাইকারি এনে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করি। খুলনা বিস্ফোরক পরিদপ্তরের বিস্ফোরক পরিদর্শক ড. মোঃ আসাদুল ইসলাম জানান, খুলনা বিভাগে মোট ১০টি জেলা রয়েছে। যা খুলনা বিভাগীয় অফিস হতেই মনিটরিং করতে হয়। পরিদপ্তরটিতে জনবলসংকটসহ যান্ত্রিক (পরিবহন) সংকট রয়েছে। খুলনা জেলা ও মহানগর এলাকা প্রতিনিয়তই আমরা মনিটরিং করে থাকি। শহরের পাশাপাশি সঠিক তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও মনিটরিং অব্যাহত রাখে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকি। তিনি আরো জানান, নির্ধারিত নিয়মনীতি ও লাইসেন্স বিহীন কোনো প্রতিষ্ঠান যেন তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্রাস (এলপিজি) বা দাহ্য পদার্থ বিক্রি না করতে পারে তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়ে থাকে। কোনো সিন্ধান্ত আসলে সেঅনুসারে গৃহীত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।