ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ
উচ্ছেদ অভিযান সম্পন্ন হলে উদ্ধার হতো সরকারের শত কোটি টাকার সম্পদ
জন্মভূমি রিপোর্ট : নগরীর বয়রা আবাসিক এলাকায় বরাদ্দকৃত সি ব্লকের ১ থেকে ৪২টি প্লটের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান থেমে গেছে। এতে প্লট সমূহের বৈধ মালিকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। প্রতিকার চেয়ে প্লট মালিক সমিতি বয়রা হাউজিং এস্টেট, খুলনা এর ব্যানারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে বুধবার দুপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
এদিকে, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের খুলনা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জিয়াউর রহমান দৈনিক জন্মভূমিকে বলেছেন- ৪২ টি প্লটে ৭২ থেকে ৮০ টি পরিবার অবৈধভাবে বসবাস করছেন। দখলবাজদের অনেকেই প্লট ভাড়া দিয়ে অন্যত্র বসবাস করছেন। বৈধ মালিকদের ৮৭ সালে প্লট সমূহ রেজিস্ট্রি করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা প্রভাবশালীদের আগ্রাসনে মালিকানা বঞ্চিত হয়ে আছেন। এর আগে দুই দফায় অবৈধদের উচ্ছেদ করার প্রস্তুতি নেয়া হলেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে সেটা সম্ভব হয়নি। তাদেরকে উচ্ছেদ করা সম্ভব হলে সরকারের অন্তত ১শ’ কোটি টাকার সম্পদ উদ্ধার করা যেতো।
তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনি, ম্যাজিস্ট্রেটসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে সম্প্রতি তাদেরকে উচ্ছেদ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সেখানে অবস্থানকারীরা জেলা প্রশাসকের দ্বারস্থ হন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রশাসকের আদেশে উচ্ছেদ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। তবে, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির সর্বাত্মক সহযোগিতা পেলে উচ্ছেদ অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হবে। বৈধ মালিকরা প্লটের দখল বুঝে পাবেন।
ভুক্তভোগী প্লট মালিকদের পক্ষে মোঃ একলাছুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৮৭ সালে প্লট বরাদ্দ পাওয়ার পর বরাদ্দপত্রের শর্তানুযায়ী প্লটের সম্পূর্ণ মূল্য নির্ধারিত তারিখের মধ্যে জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু হস্তান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার আগেই ৪২টি প্লট (সি-১ হতে সি- ৪২) স্থানীয় কতিপয় (বাস্তহারা বলে কথিত) ব্যক্তি কর্তৃক বেদখল হযে যায়। পরবর্তী বিভিন্ন আইনী কার্যক্রম গৃহীত হলেও গত ৩৭ বছর যাবত অবৈধ দখলদারগণ বিভিন্ন ছত্রছায়ায় উক্ত প্লট সমহে বসবাস করে আসছেন। তারা বিভিন্ন অসামজিক ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত রয়েছেন। এর আগে আইনগতভাবে দুই বার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের স্থানীয় প্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপের কারণে জেলা প্রশাসক এবং নির্বাহী প্রকৌশলী হাউজিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ কার্যক্রম সম্পন্ন করেননি। সংশ্লিষ্টদের পাঠানো এক প্রেস রিলিজ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, নির্বাহী প্রকৌশলী হাউজিং খুলনার দপ্তর হতে সম্প্রতি ভুক্তভোগীদের জানানো হয়- বিষয়টি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন এবং এ ব্যপারে বিভাগীয় ভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ১১ ও ১২ ডিসেম্বর প্লট সমুহের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান সম্পন্ন করে প্রকৃত মালিকদের কে বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। প্লট বুঝে নেবার জন্য বৈধ দাবিদারদের প্রস্তুত থাকারও পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করে দেয়ায় ভুক্তভোগীরা মর্মাহত হয়েছেন।
বুধবার দুপুর দুই টার মানববন্ধনে প্লট বঞ্চিত ৪২ টি পরিবারের সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন। সেখানে বক্তারা তাদের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দেবার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান।