হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া : আমার দুই সোনাকে ছাড়া আমি কি নিয়ে বাঁচবো। তোরা লেখাপড়া শিখে আমার ঘর আলোকিত করবি, সেই আশায় আমি বুক বেঁধেছিলাম। আমার বাঁচার আর কোন পথ থাকলো না। বাড়ির উঠানে এভাবেই বিলাপ করে কাঁদছিলেন গত রবিবারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তানজিলা ও মারিয়ার মা নাজমা খাতুন। খোকসার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কুঠিপাড়া গ্রামের প্রায় বাড়িতেই শোকের মতুম চলছে। নিহত তিন পরিবারের চুলায় তখনো কেউ আগুন জ্বালায়নি। পরিবারের প্রায় সদস্যরাই শোকে মুর্চ্ছে যাচ্ছে। যতই সান্ত্বনা দেয়া হোক তার শিশু কন্যা হারিয়ে তিন পরিবারের সকল সদস্যরা পাগলের বিলাপ করছে।
গতকাল সকালে সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে নিহত তানজিলা ও মারিয়ার বাবা পালন মিয়া ও তার স্ত্রী নাজমা খাতুন বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা, থানা অফিসার ইনচার্জ আননূর যায়েদ, রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপি জামাত ইসলামের ও স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলো সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত, আহতদের পাশে আর্থিক অনুদান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
এদিকে চার শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে শিমুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পূর্বাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গতকাল শোক পালন করেছে। বিদ্যালয় দুটিতে দেখা গেছে সহপাঠীদের হারিয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা হাউ মাউ কান্নাকাটি করছে ।
অপরদিকে আনোয়ারের মেয়ে গুরুতর আহত ফাতেমা খাতুনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের অথোপেডিক্স বিভাগে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার সকাল সাতটার সময় কুষ্টিয়া রাজবাড়ী মহাসড়কের পাশে কুঠিপাড়া জামে মসজিদের মক্তব থেকে কোরআন শিক্ষা করে বাড়ি ফেরার পথে দ্রুতগতি সম্পন্ন মাইক্রোর ধাক্কায় চার শিশু নিহত হয় এবং এক শিশু আহত হয় ।
কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানার পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আকূল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, রবিবারের সড়ক দুর্ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মাইক্রোচালককে গ্রেফতার করার অভিযান চলছে।