গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মানার ঘোষণা কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ। গত ২৩ মে দূরপাল্লার বাস চলাচলের অনুমতি দেয়ার পর বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করে বাস মালিক সমিতি। নির্দেশনাগুলো হচ্ছেÑ মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী গাড়িতে উঠানো যাবে না। চালক, সুপারভাইজার, হেলপার এবং টিকেট বিক্রিতে নিয়োজিতরাও মাস্ক পরবে। তাদের হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান-পানি, হ্যাÐ স্যানিটাইজার রাখতে হবে। ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী বহন করার পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যাত্রীদের কাছ থেকে বর্তমান ভাড়ার অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায় করা যাবে। গণমাধ্যমে উঠে আসছে পরিবহনগুলো এসব নির্দেশনার কিছুই পালন করছে না। দেখা গেছে, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচলের নির্দেশনায় বেশির ভাগই বাসে ওঠার সুযোগ পাচ্ছেন না। এতে করে অফিসগামীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। আর এ সুযোগে পরিবহন চালক-শ্রমিকরা যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে। করোনাকালীন এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের এই নির্ভরশীলতাকে পুঁজি করে পরিবহন মালিকরা বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। এতে করে সকালবেলা ঘর থেকে বেরিয়ে অফিসমুখী বাস ধরতে গিয়ে প্রতিদিনই অনাকাঙ্খিত বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন কর্মজীবী মানুষ। পরিবহন খাতে এই নৈরাজ্য দিনের পর দিন চলতে পারে না। সিদ্ধান্ত ছিল, দুই সিটে বসবেন এক যাত্রী। সিট খালি থাকবে অর্ধেক। কম যাত্রী পরিবহনের এ ক্ষতি পোষাতে ভাড়া বাড়বে ৬০ শতাংশ। কিন্তু সব শর্ত সীমাবদ্ধ। মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। কোথাও যাত্রীদের হ্যাÐ স্যানিটাইজারও দেয়া হয় না। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকা এ সময়ে গণপরিবহনই করোনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দেশে দিন দিন করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গণপরিবহন চলাচলে বিধিনিষেধসহ এমন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। করোনা দুর্যোগের কারণে এ সময়ে গণপরিবহনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ স্বাস্থ্য সতর্কতা অবলম্বন। গণপরিবহনগুলোতে গাদাগাদি করে যাত্রী নেয়ার নিয়ম না থাকলেও তা কমই কার্যকর হতে দেখা যায়। অন্তত এ সময়ের জন্য হলেও নির্দিষ্ট আসনের অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতেই হবে। পাশাপাশি সংকটে গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়ার ভোগান্তিটা যাত্রীসাধারণকে যেন পোহাতে না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তা পুষিয়ে নেন পরিবহন মালিকরা। সরকারকে সংঘবদ্ধ এই চক্রকে প্রতিহত করতে এগিয়ে আসতে হবে।
গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করুন
Leave a comment