
জন্মভূমি ডেস্ক : চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউজ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ সোমবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় মরদেহের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অবস্থান করছে।
চট্টগ্রাম ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন জানান, সাবেক সেনাপ্রধান ক্লাবের গেস্টহাউসে একা ছিলেন। সকাল পর্যন্ত কক্ষ থেকে তিনি বের হননি। দীর্ঘসময় সাড়া না পেয়ে ক্লাবের পক্ষ থেকে উদ্বেগ দেখা দেয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কক্ষের দরজা খুলে তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) একটি চিকিৎসক দল ক্লাবে এসে তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করেন। পরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মনে করছেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, রাতে তিনি একটি বিয়ের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরপর ক্লাবের ৩০৮ রুমে রাত্রিযাপন করেছিলেন তিনি। সকালে তার একটা মিটিং ছিল। তার মোবাইলে বার বার কল দেওয়া হলেও তিনি রেসপন্স করছিলেন না। এরপর দরজায় নক করা হলেও কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে বারান্দায় গ্লাসের দরজা ভেঙে বিছানায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, আপাতত তার মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তা ক্রাইম সিন ইউনিটসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন উপস্থিত রয়েছেন। পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জন্মগ্রহণ করেন। এম হারুন-অর-রশীদ পাকিস্তানের কাকুলস্থ মিলিটারি একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন।
১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই রেজিমেন্টের বাঙালি সেনারা শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বে বিদ্রোহ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অবদানের জন্য তিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন।
২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত হন। একই দিন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০০২ সালের ১৬ জুন জেনারেল হাসান মশহুদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের মাধ্যমে তিনি অবসরে যান।
অবসরের পর তিনি কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।