জন্মভূমি ডেস্ক : চট্টগ্রাম আদালতে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় আট আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন। রিমান্ডে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন- সুমন দাস, সাকিবুল আলম, আহমদ হোসেন, সুজন চন্দ্র দাস, ইমন চক্রবর্তী, রূপন দাস, মো. রাকিব ও সৌরভ দাস।
চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, চিন্ময় অনুসারীদের তাণ্ডবের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় আট আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রথম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর ছিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার আবেদন করেন এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ ওইদিন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার একটি আরজি দায়ের করা হয়েছে। ২৬ নভেম্বরের ঘটনায় এ মামলার আবেদন করা হয়েছে। বাদীপক্ষের আইনজীবী শামসুল আলম বলেন, ২৬ নভেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার সময় এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী মারধরের শিকার হন। দাঁড়ি-টুপি থাকায় চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা তাকে মেরে ডান হাত ভেঙে দেন। এ ছাড়া তার মাথায় কিরিচ দিয়ে কোপ দিয়েছেন চিম্ময়ের অনুসারীরা। এ ঘটনায় চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নামে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন।
চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন তার অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন তার অনুসারীরা।
এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয় মামলায় ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
চিন্ময়কাণ্ডে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় ৮ আসামি রিমান্ডে
Leave a comment