জন্মভূমি ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় ১৩ দিন পর আহত দবির আলীর (৪০) মৃত্যু হয়েছে। তিনি নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত দবির আলী ছেলে মোস্তাফিজুর খোকন।
তিনি বলেন, আমার বাবা নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিয়ার রহমান হায়াতের কর্মী ছিলেন। গত ১১ মার্চ রাত ৮টার দিকে জহুরুলনগর গ্রামে আমার বাবাসহ কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছিলেন। এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী (বর্তমানে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত) নিজে উপস্থিত থেকে তার কর্মীদের দিয়ে হামলা চালান। এতে আমার বাবা দবির আলীসহ আমার কয়েকজন কর্মী আহত হন। রাতেই আমার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করা হয়। টানা ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেলেন বাবা। আমি এই হত্যার বিচার চাই। আজ রাতে কিংবা আগামীকাল মরদেহ ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে আসা হবে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিয়ার রহমান হায়াত বলেন, জহুরুলনগর গ্রামে আমার কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছিলেন। এ সময় পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) চশমা প্রতীকের এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল নিজে উপস্থিত থেকে তার কর্মীদের দিয়ে আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালান। দবির উদ্দিনসহ আমার কয়েকজন কর্মী আহত হন। ওই রাতেই দবিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলিম বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারিতে আহত দবির উদ্দিন আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জেনেছি। এ ঘটনার পূর্বে মারধরের মামলা করেছিলেন নিহতের ছেলে। নিহতের পরিবার হত্যা মামলা দায়ের করলে আমরা গ্রহণ করব।
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের জহুরুলনগর, বলিয়ারপুর নাগদহ গ্রামে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী (স্বতন্ত্র) চশমা প্রতীকের এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল ও নৌকার প্রার্থী মতিয়ার রহমান হায়াতের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে স্কুলছাত্রীসহ বিদ্রোহী প্রার্থীর তিনজন ও নৌকা প্রার্থীর দবিরসহ আটজন আহত হন। ওই রাতেই দবির উদ্দিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ১৩ দিন পর শুক্রবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।