শ্যামল চৌগাছা, যশোর : যশোরের চৌগাছায় ভ্যানচালককে হত্যার ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের ভাই। এঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (২৮ জুলাই) নিহতের ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২১।
মামলায় হত্যাকান্ডের মূল হোতা আবুলবাশার ও রেজা সহ নিহতের প্রতিবেশি হারুন অর রশিদের ৫ ছেলে ও মেয়ের জামাই আব্দুল মালেককে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর এজাহার নামীয় আসামি আব্দুল মালেককে গ্রেফপ্তার করেছে চৌগাছা থানার পুলিশ।
জানাযায় মামলায় আটক আসামি আব্দুল মালেক এলাকার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ি। তার বিরুদ্ধে মাদক পাচারকারি হিসেবে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
হত্যার পরে আসামিদের বাড়ির স্ত্রী-সন্তান সকলেই পালিয়ে রয়েছে।
চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চৌগাছা থানা পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।
শনিবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় চৌগাছায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৌরসভার হুদা পাড়া এলাকার মৃত আব্দুল মুজিদের ছেলে ভ্যানচালক আলী হোসেন (৩৫) কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তার প্রতিবেশি হারুন অর রশিদের ছেলে বাশার, রেজা সাইফলসহ কয়েকজন।
রোববার নিহতের বাড়িতে গেলে প্রতিবেশিরা জানান, আলী হোসেন অত্যান্ত নিরিহ একজন মানুষ ছিলেন। স্থানীয়রা জানায় আলী হোসেন একসময় মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। সেসময় তার স্ত্রী পারভীনা আলী হোসেনকে ছেড়ে চলে যায়। তার দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে ফাতেমা এলাকার একটি বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রোণির ছাত্রী। এবং ছেলে রফিকুলের বয়স মাত্র ৫ বছর। চিকিৎসা নেওয়ার পরে তিনি বর্তমানে সুস্থ্য হয়ে ছেলে ও মেয়ে এবং বৃদ্ধ মাকে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিলেন। চৌগাছা বাজারে ভ্যান চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। শিশু ছেলে রায়হান এবং মেয়ে ফাতেমা তার দাদীর (আলী হোসেন মায়ের কাছে) কাছে থাকে। বাবার মৃত্যুর পরে শিশু দুটির আরো অসহয় হয়ে পড়েছে।
নিহতের বোন রেহেনা ও ভাই সাইফুল ইসলাম জানায়, প্রতিবেশী হারুন এর ছেলে আশরাফ আলী তার ভাই আলী হোসেন কে প্রায়ই পাগল বলে ডাকতো। এতে আলী হোসেন বিরক্তবোধ করতো। দিনের পর দিন একই কথা বলে তাকে উত্যাক্ত করে আসছিল। শনিবার দুপুরে আলী হোসেনকে পাগল বলে উত্যাক্ত করে প্রতিবেশি হারুনের ছেলে আশরাফ আলী। এতে আলী হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে আশরাফকে চড় থাপ্পড় মারে। এদিন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে হুদপাড়া মোড়ে দেলোয়ারের চায়ের দোকানে বসেছিল আলী হোসেন। এসময় আশরাফ তার ভাই, রেজা, সাইফুল বোন জামাই আব্দুল মালেক কে সাথে নিয়ে আলী হোসেনর উপরে হামলা করে ধারলো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা সরকারি হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলী হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।