By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
Reading: জলবায়ুর প্রভাব: চরম ঝুঁকিতে উপকূলের ৭১০ কিলোমিটার এলাকা
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > জলবায়ুর প্রভাব: চরম ঝুঁকিতে উপকূলের ৭১০ কিলোমিটার এলাকা
সাতক্ষীরা

জলবায়ুর প্রভাব: চরম ঝুঁকিতে উপকূলের ৭১০ কিলোমিটার এলাকা

Last updated: 2025/06/26 at 12:02 PM
করেস্পন্ডেন্ট 8 hours ago
Share
SHARE

সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : জলবায়ুর প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাও বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় ৭১০ কিলোমিটার এলাকা চরম ঝুঁকিতে পড়বে। সরকারি এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালিত এ জরিপে বলা হয়েছে, উন্নত বিশ্বের অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণের কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলের নদ-নদীর পানির স্তরের উচ্চতা প্রতি বছরই বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি বছর পানির স্তরের উচ্চতা বাড়ার হার তিন সেন্টিমিটার। ফলে তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে দেশ। বহু গ্রাম এরই মধ্যে সাগর-নদীতে বিলীন হয়েছে। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে নদীভাঙনে প্রায় ২৮ হাজার মানুষ বাস্তুহারা হতে পারেন। এছাড়া, পানিতে লবণের মাত্রাও বাড়ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে।
প্রতি বছর পানির স্তরের উচ্চতা বাড়ার হার তিন সেন্টিমিটার। ফলে তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে দেশ। বহু গ্রাম এরই মধ্যে সাগর-নদীতে বিলীন হয়েছে। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে নদীভাঙনে প্রায় ২৮ হাজার মানুষ বাস্তুহারা হতে পারেন
বিআইডব্লিউটিএর জরিপে দেখা গেছে, টেকনাফের নাফ নদীর মোহনা থেকে সাতক্ষীরা জেলার সীমান্ত-নদী রায়মঙ্গল-কালিন্দী পর্যন্ত বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের দৈর্ঘ্য ৭১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে সুন্দরবন ১২৫ কিলোমিটার। সুন্দরবন ছাড়াও উপকূলের ২৭৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে নদীর মোহনা ও ছোট-বড় দ্বীপমালা। ৩১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আছে সমতল উপকূলীয় অঞ্চল। পুরো উপকূল অংশের মধ্যে বসবাসকারীরা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিতে রয়েছেন।
বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের নদ-নদীর ৫৩টি স্থানে সারাক্ষণ জোয়ার-ভাটার পানির স্তরের উচ্চতা পরিমাপ করে বিআইডব্লিউটিএ। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের দুই প্রান্তে অবস্থিত কক্সবাজার ও সুন্দরবন। মধ্যবর্তী এলাকায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া (খেপুপাড়া) উপজেলায় অবস্থিত কুয়াকাটা সৈকত।

বিআইডব্লিউটিএর পানি পরিমাপের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের ৭ জুলাই দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে কক্সবাজার এলাকায় পানির স্তরের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল দুই দশমিক ২৪ মিটার। একই বছরের ২ জুলাই সকাল ১০টা ১০ মিনিটে খেপুপাড়ায় পানির উচ্চতা ছিল দুই দশমিক ১১ মিটার। ওই বছরের ২ জুলাই সকাল ৬টায় সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্টে পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল তিন দশমিক ৬৬ মিটার।
দুই বছরের ব্যবধানে (২০২১ থেকে ২০১৯ সাল) কক্সবাজারে পানির স্তরের উচ্চতা বেড়েছে শূন্য দশমিক ২৫ মিটার, খেপুপাড়ায় বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৭ মিটার। তবে, সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্টে পানির স্তরের উচ্চতা কমেছে শূন্য দশমিক এক মিটার
গত বছরের (২০২০ সাল) ২০ আগস্ট বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পানির স্তরের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল দুই দশমিক ৩৬ মিটার। একই বছরের ২০ আগস্ট বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে খেপুপাড়ায় পানির স্তরের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল দুই দশমিক ৪৬ মিটার। ওই বছরের ২০ আগস্ট দুপুর ২টা ৩৬ মিনিটে সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্টে উচ্চতা ছিল তিন দশমিক ৫৬ মিটার।
চলতি বছরের (২০২১ সাল) ২৬ এপ্রিল সকাল ১০টা ২০ মিনিটে কক্সবাজারে পানির স্তরের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল দুই দশমিক ৪৯ মিটার। গত ২৫ এপ্রিল রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে খেপুপাড়ায় উচ্চতা ছিল দুই দশমিক ৬৮ মিটার। গত ২৫ জুন বেলা ১১টা ১০ মিনিটে সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্টে পানির স্তরের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল তিন দশমিক ৫৬ মিটার।
অর্থাৎ দুই বছরের ব্যবধানে (২০২১ থেকে ২০১৯ সাল) কক্সবাজারে পানির স্তরের উচ্চতা বেড়েছে শূন্য দশমিক ২৫ মিটার, খেপুপাড়ায় পানির উচ্চতা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৭ মিটার। তবে, সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্টে পানির স্তরের উচ্চতা কমেছে শূন্য দশমিক এক মিটার।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। উত্তর গোলার্ধের অ্যান্টার্কটিকা, সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান অঞ্চলের সাগর, পাহাড়ের বরফ গলে পানিতে পরিণত হচ্ছে। এ কারণে পানির স্তরের উচ্চতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এর প্রভাবে আমাদের দেশের সাগর ও নদ-নদীর পানিও বাড়ছে
বিআইডব্লিউটিএর হাইড্রোগ্রাফি বিভাগের (টাইড) যুগ্ম পরিচালক মো. আলফাজ উদ্দিন
ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিআইডব্লিউটিএর রেকর্ড করা পানির স্তরের উচ্চতাই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশের নদ-নদীর পানি কীভাবে বাড়ছে। পানির উচ্চতা বাড়ায় উপকূল ও নদ-নদীর তীরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর হাইড্রোগ্রাফি বিভাগের (টাইড) যুগ্ম পরিচালক মো. আলফাজ উদ্দিন এই প্রতিবেদককে ‌বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে। উত্তর গোলার্ধের অ্যান্টার্কটিকা, সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান অঞ্চলের সাগর, পাহাড়ের বরফ গলে পানিতে পরিণত হচ্ছে। এ কারণে পানির স্তরের উচ্চতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এর প্রভাবে আমাদের দেশের সাগর ও নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা সার্বক্ষণিক পানির স্তরের উচ্চতা পরিমাপ করছি।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার এ প্রসঙ্গে বলেন, বঙ্গোপসাগরের স্রোত ও পানির স্তরের উচ্চতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বালু ক্ষয়ে সৈকতের বিশাল এলাকা এখন সাগরে পরিণত হয়েছে। এক যুগ আগেও কুয়াকাটা সৈকতে এমন ভাঙন ছিল না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) কুয়াকাটা নেটওয়ার্কিংয়ের সদস্য ও কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজের সহকারী অধ্যাপক খান এ রাজ এই পৃথিবীতে কে ‌বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গত এক দশকে অন্তত তিন কিলোমিটার সাগরতীর ভেঙে গেছে। কুয়াকাটার নান্দনিক নারিকেল, ঝাউ বাগানসহ পাঁচটি মৌজা বিলীন হয়েছে। মানচিত্র থেকে তিনটি গ্রাম হারিয়ে গেছে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ক্ষণে ক্ষণে সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে প্রতি বছরই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডব বাড়ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গত এক দশকে অন্তত তিন কিলোমিটার সাগরতীর ভেঙে গেছে। কুয়াকাটার নান্দনিক নারিকেল, ঝাউ বাগানসহ পাঁচটি মৌজা বিলীন হয়েছে। মানচিত্র থেকে তিনটি গ্রাম হারিয়ে গেছে

উপকূলেই রয়েছে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর। এছাড়া, পায়রা বন্দরের নির্মাণকাজ চলমান। দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ উপকূল অঞ্চলে বসবাস করে। জাতীয় অর্থনীতিতে জিডিপির প্রায় ২৫ শতাংশের অবদান এ অঞ্চলের।
উপকূলের প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে বসবাস করেন ৭৪৩ জন। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রতিনিয়ত দুর্যোগের আঘাতে উপকূলের কোটি কোটি মানুষের জীবন ও সম্পদ বিপন্ন হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরের ফানেল আকৃতির উপকূলে বাংলাদেশের অবস্থান। বৈশ্বিক আবহাওয়া বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশে গত ৪৯ বছরে ১৫৪টি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ঘটনা ঘটেছে।
কক্সবাজার থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত বিশাল উপকূলীয় এলাকার অনেক গ্রাম সাগর-নদীতে ভেঙে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে। উপকূলের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) সমীক্ষা অনুযায়ী, ১৯৭৩ সাল থেকে প্রায় পৌনে দুই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে প্রায় ১৭ লাখ ১৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে পানির স্তর বাড়ায় এবং বর্ষা মৌসুম শেষে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের পানি বঙ্গোপসাগরে পতিত হওয়ায় নদীর তীরে তীব্র ভাঙন দেখা দিচ্ছে। মেঘনার তাণ্ডবে চাঁদপুর, ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর এবং সন্ধ্যা ও সুগন্ধা নদীর কারণে বরিশাল অঞ্চলে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

বঙ্গোপসাগরের ফানেল আকৃতির উপকূলে বাংলাদেশের অবস্থান। বৈশ্বিক আবহাওয়া বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশে গত ৪৯ বছরে ১৫৪টি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭৩ সাল থেকে প্রায় পৌনে দুই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ১৭ লাখ ১৫ হাজার মানুষ
তেঁতুলিয়া, আগুনমুখা, রামনাবাদ চ্যানেলের প্রবাহে পটুয়াখালী; বলেশ্বর ও পায়রার প্রবাহে বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি খুলনা সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে ভাঙন ঘটছে। কচা, ভৈরব ও ময়ূর নদ ও রূপসা চ্যানেলের কারণে খুলনা, সাতক্ষীরায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া, পাহাড়ি ঢল, কর্ণফুলী, সন্দ্বীপ চ্যানেলের তাণ্ডবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ চট্টগ্রাম বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পদ্মা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, কুশিয়ারার স্রোতে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ভাঙন হচ্ছে।
সিইজিআইএসের তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে প্রায় ৩৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ কয়েক দফা বন্যায় এ ক্ষতি হয়েছে। চলতি (২০২১ সাল) বর্ষা মৌসুমে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলা ভয়াবহ নদীভাঙনের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেলাগুলো হলো- কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও মাদারীপুর।
পদ্মা ও যমুনার ভাঙনে প্রায় ২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হতে পারে। এছাড়া, পৌনে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ২৪১ মিটার মহাসড়ক, সাড়ে তিন কিলোমিটার জেলা ও দেড় কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নদীতে বিলীন হতে পারে। পাশাপাশি এসব এলাকায় অবস্থিত শত শত দোকানপাট, বসতবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার এমনকি হাসপাতালও রয়েছে হুমকির মুখে।

আমাদের দেশে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন থেকে ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে, সেটা ভেবে পরিকল্পনা করতে হবে। উপকূল রক্ষায় আরও উঁচু ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। লবণসহিষ্ণু ফসলের জাত আবিষ্কার করতে হবে
আন্তর্জাতিক পানি সম্পদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত
বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশে মূলত মে-জুন থেকে নদীভাঙন শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত চলে। ২০০৪ সাল থেকে সিইজিআইএস ভাঙনের পূর্বাভাস দিচ্ছে। ২০২০ সালে স্যাটেলাইট চিত্র দেখে তৈরি সিইজিআইএসের ‘নদীভাঙন পূর্বাভাস- ২০২১’ এ বলা হয়েছে, এ বছর দেশের প্রধান দুই নদীর অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মার ২০টি স্থান ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে।
সংস্থাটি বলছে, এবারের মৌসুমে ডিসেম্বর পর্যন্ত পদ্মা-গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পাড়ে ভাঙন চলতে পারে। এতে ৩৪২টি বসতবাড়ি, ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ২৬টি মসজিদ-মন্দির, পাঁচটি হাটবাজার, দুটি সরকারি ও দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। এসব এলাকার এক বর্গকিলোমিটারের মধ্যে প্রায় এক হাজার মানুষের বসবাস। সেই হিসাবে এ বছর নদীভাঙনের কারণে বাস্তুহারা হতে পারেন প্রায় ২৮ হাজার মানুষ।
জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক পানি সম্পদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত এই প্রতিবেদককে ‌বলেন, আমাদের উপকূলে পানির স্তর বাড়ছে— এটা প্রমাণিত। প্রতি বছর গড়ে তিন সেন্টিমিটার পানির স্তর বাড়ছে। সুন্দরবন অঞ্চলের চেয়ে কক্সবাজার এলাকায় পানি বেশি বাড়ছে। গত এক দশকে ২০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগও বাড়ছে। উপকূলের নদীতে লবণের মাত্রা বাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষিকাজ। ফলে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

তিনি বলেন, ২০১৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত বিশ্বের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমেনি। আমাদের দেশে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন থেকে ভবিষ্যতে কী ঘটতে পারে, সেটা ভেবে পরিকল্পনা করতে হবে। উপকূল রক্ষায় আরও উঁচু ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। লবণসহিষ্ণু ফসলের জাত আবিষ্কার করতে হবে।
জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর মাধ্যমে আমরা বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এছাড়া, আমরা মিউটেশন ও অ্যাডাপটেশন— দুভাবে কাজ করছি
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুল হক চৌধুরী

সিইজিআইএসের পূর্বাভাসে এ বছর ভাঙনপ্রবণ ১৩টি অঞ্চলের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে আট জেলায় বর্ষার শুরুতেই নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর ২৫টি জায়গায় এখন ভাঙন চলছে। জেলার বিদ্যানন্দ, বজড়া, বেগমগঞ্জ, কালীগঞ্জসহ ১৭টি জায়গায় জরুরিভিত্তিতে ভাঙন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
গাইবান্ধার ৩৩টি পয়েন্ট দিয়ে পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। তিস্তার পানিতে ডুবেছে জেলার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া। ব্রহ্মপুত্রের স্রোতে বিলীন হচ্ছে সদরের কামারজানির কয়েকটি স্থান। ফুলছড়ি ও সাঘাটার পাঁচ ইউনিয়নের বসতি ভেসে যাচ্ছে স্রোতে। টাঙ্গাইলের সদর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতি ও নাগরপুরে শুরু হয়েছে ভাঙন।
যমুনার প্রবল স্রোতের মুখে টাঙ্গাইলের এক হাজার ২৬৩ হেক্টর জমি-বসত এবার ঝুঁকিতে পড়েছে। গত বছর সদরের কাকুয়া ইউনিয়নের চরপৌলি ও কাকুয়া গ্রামে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। এবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। যমুনার ভাঙনে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের পাঁচিল ইউনিয়নের হাট পাঁচিল গ্রামের অর্ধেক ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। ফরিদপুর সদরের গোলডাঙ্গি, হাজিডাঙ্গি ও ভাঙ্গার মাথা এলাকায় ভাঙন অব্যাহত আছে। অল্পবিস্তর ভাঙছে জামালপুর, রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়ায়।

জানতে চাইলে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (ডুয়েট) জলবায়ু পরিবর্তন ও স্থায়িত্ব কেন্দ্রীয় গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আকরামুল আলম এই প্রতিবেদককে ‌বলেন, অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণের কারণে তাপমাত্রা ও পানির স্তরের উচ্চতা বাড়ছে। উচ্চতা বাড়ার কারণে নদীতে ভাঙন হচ্ছে। পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণের কারণে উপকূলের মানুষ কৃষিজমিতে ফসলের চাষ বাদ দিয়ে এখন চিংড়ির ঘের করছে। মিঠা পানির প্রবাহে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করায় জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। সুপেয় পানির উৎস কমে যাচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক প্রাণী সেটি সহ্য করতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন অনুবিভাগ) মো. মিজানুল হক চৌধুরী বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। উন্নত বিশ্বের অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণে ক্ষতির শিকার হচ্ছি আমরা। বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে আমাদের সাগর-নদীর পানির উচ্চতা বাড়ছে।
‘জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর মাধ্যমে আমরা বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এছাড়া, আমরা মিউটেশন ও অ্যাডাপটেশন— দুভাবে কাজ করছি। কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমলে তাপমাত্রা কমে বরফগলা কমে যাবে। তখন ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস কমে আসবে।’

করেস্পন্ডেন্ট June 27, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article হারিয়ে যাচ্ছে অতিথি পাখি, নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিন
Next Article এখনও জলাবদ্ধতায় সাতক্ষীরার লক্ষাধিক মানুষ

দিনপঞ্জি

June 2025
S M T W T F S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
« May    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
বাগেরহাট

মোরেলগঞ্জে ভ্যান শ্রমিকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার

By করেস্পন্ডেন্ট 7 minutes ago
বাগেরহাট

চিতলমারী সীমান্তে নগরমান্দ্রায় বালু উত্তোলনের মহোৎসব

By করেস্পন্ডেন্ট 36 minutes ago
বাগেরহাট

চিতলমারীতে বিশ্বসুখ হরিগুরুচাঁদ সেবাশ্রমে রথযাত্রা উদযাপন

By করেস্পন্ডেন্ট 37 minutes ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ৪ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ

By করেস্পন্ডেন্ট 5 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

এখনও জলাবদ্ধতায় সাতক্ষীরার লক্ষাধিক মানুষ

By করেস্পন্ডেন্ট 6 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

হারিয়ে যাচ্ছে অতিথি পাখি, নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিন

By করেস্পন্ডেন্ট 9 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?