
জন্মভূমি ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে স্বর্ণের দাম। মুদ্রাবাজারে ডলারের অবনমন এতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। বাজার অংশীজনরা এখন যুক্তরাষ্ট্রের সাপ্তাহিক মূল্যস্ফীতি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন। এর উপর ভিত্তি করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সামনে সুদ হার কমিয়ে আনতে পারে এমন ইঙ্গিতে স্বর্ণের বাজারমুখী হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এতে চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ছে মূল্যবান ধাতুটির।
স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। আউন্সপ্রতি মূল্য উঠেছে ২ হাজার ৩১ ডলার ৮৩ সেন্টে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটেও ধাতুটির দাম বেড়েছে দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতি আউন্স বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৩৬ ডলার ৬০ সেন্টে। ডেনিশ বিনিয়োগ ব্যাংক স্যাকসো ব্যাংকের কমোডিটি স্ট্র্যাটেজির প্রধান ওলে হ্যানসেন বলেছেন, ‘প্রতি আউন্স স্বর্ণ ২ হাজার ১০ ডলারের আশপাশে থাকছে। বাজারে নতুন গতি আনার জন্য ২ হাজার ৪৫ ডলারের রেকর্ড ভাঙা প্রয়োজন।’ বিনিয়োগকারীরা এখন মার্কিন ভোক্তা মূল্যস্ফীতি (সিপিআই) প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছেন। সিপিআই প্রতিবেদন থেকে বোঝা যাবে ফেড কখন থেকে সুদহার কমাতে শুরু করতে পারে। আজ (শুক্রবার) মার্কিন উৎপাদন ব্যয় প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা।
এক জরিপে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ। একই সময়ে মূল মূল্যস্ফীতি কমে নেমেছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে, যা ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে এ পর্যন্ত সর্বনিম্ন। আর্থিক তথ্য পরিষেবা কোম্পানি লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ গ্রুপ (এলএসইজি) জানিয়েছে, ব্যবসায়ীরা চলতি বছর ফেডের সুদহার কমানোর ১৪০ বেসিস পয়েন্টের (বিপিএস) ওপর বাজি ধরছেন এবং মার্চে সুদহার কমানোর ৬৯ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন। আগামী মার্চে ফেডের সুদহার কমিয়ে আনার পূর্বাভাসে বাজার বিশ্লেষক সংস্থা সিএমই ফেডওয়াচ জানিয়েছে, ২০ মার্চের নীতিনির্ধারণী বৈঠকে ফেডের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা ৬৬ শতাংশ। এক সপ্তাহ আগে এ সম্ভাবনা ৯০ শতাংশে রেখেছিল ফেডওয়াচ।
জুলিয়াস বেয়ারের ডিজিটাল সম্পদ বিশ্লেষক ম্যানুয়েল ভিলেগাস বলেছেন, ‘সুদহার কমার অর্থ ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম বাড়বে। স্বল্পমেয়াদি ও ফটকা ব্যবসায়ীরা এখন থেকেই বাজার ঊর্ধ্বমুখী করে তুলেছেন। তবে আমাদের দৃষ্টিতে নিরাপদ বিনিয়োগমাধ্যমের সন্ধানকারীদের স্বর্ণের বাজারে ফিরিয়ে আনতে আরকেটি মন্দার প্রয়োজন হবে। এমন পরিস্থিতিতে স্বর্ণের বিষয়ে আমরা সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখছি।’
এদিকে টানা দুদিন ধরে ডলার সূচকে দরপতন ঘটেছে। ডলারের বিনিময়মূল্য কমায় ভিন্ন মুদ্রার গ্রাহকের কাছে স্বর্ণ ক্রয় খরচ কমে আসে। এতে বাজারে চাহিদা বাড়ে ধাতুটির। বাজার প্রবণতা অনুযায়ী, উচ্চ সুদহার থাকলে বিনিয়োগকারীরা ট্রেজারি বন্ডে ঝুঁকে পড়েন। এতে ডলারের বিনিময়মূল্য বেড়ে যায়। ফলে মুদ্রাটিতে লেনদেন হয় এমন পণ্যের খরচ বেড়ে যায় ভিন্নি মুদ্রার গ্রাহকের জন্য।
অন্যদিকে গতকাল রূপার দাম কমেছে দশমিক ৬ শতাংশ। আউন্সপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ২২ ডলার ৯৮ সেন্টে। প্যালাডিয়ামের দাম বেড়েছে দশমিক ৯ শতাংশ। প্রতি আউন্সের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭ ডলার ৮২ সেন্টে। একই সময়ে প্লাটিনামের দাম বেড়েছে দশমিক ৪ শতাংশ। আউন্সপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৯২২ ডলার ৭৬ সেন্টে।