শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে দিগন্ত জুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায়, শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজ ধানে দখিনা বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জমির ফসল নষ্ট না হলে বাম্পার ফলনের আশায় এবার বুক বেঁধেছে কৃষকরা। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর অধিক জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর উপজেলার সকল এলাকায় ব্যাপকহারে বোরো চাষাবাদ হয়েছে।
অনেক নিচু এলাকার জমিতে কৃষক সেচের মাধ্যমে চাষাবাদ করেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনে রোগবালাই অনেকাংশে কম হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বোরো চাষে দিগন্ত জুড়ে সবুজ ফসলের সমারোহ। উপজেলার শতকরা ৮০জন সরাসরি কৃষিকাজের সাথে জড়িত। কৃষিকাজ করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২১ হাজার ৫৫৮ হে. জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা গ্রামের ধানচাষী আব্দুল গনি গাজী জানান, আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারণে এবছর এই ব্লকে গতবারের চাইতে বর্তমানে ধান ভাল দেখা যাচ্ছে। এ বছর আমার ব্লকে নতুন ধানের জাত ব্রি-ধান-১০৫, ১০৭, ১০৮ বেশ ফলেছে। বর্তমানে আবহাওয়া ভাল, ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছেনা। গোনালী গ্রামের কৃষক বাবর আলী জানান, এ বছর আমাদের এলাকায় ধানের ফলন খুব ভাল দেখা যাচ্ছে, যদি এভাবে শেষ নামে আবহাওয়া ভাল থাকে তাহলে বাম্পার ফলন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আটলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দিন জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর ধান ভাল ও রোগবালাই কম আছে। তাছাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তবে ধান কেটে ঘরে না তোলা পর্যন্ত কৃষকের চিন্তার শেষ নেই। ডুমুরিয়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুর নাহার বলেন, বোরো মৌসুমে কৃষক যাতে লাভবান হয় সে জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। যেখানেই সমস্যা দেখা যাচ্ছে সেখানেই দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি। প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ না হলে ধানের বাম্পার ফলন আশা করা যায়। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, এবছর আবহাওয়া ভাল থাকার কারণে অনেক এলাকায় চাষাবাদ হয়েছে। এবছর উপজেলায় ব্রি-ধান ১০৭ ( চাল অতি লম্বা চিকন) ব্রিধান ১০৮ (জিরা চাল) এর চাষ হয়েছে। নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। অধিক ফলনের জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং পরামর্শ প্রদান করায় এখনো পর্যন্ত রোগবালাই কিছুটা কম আছে। ব্লাস্ট রোগ দমনে আগাম পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ফলে তিনি আশা করেন, এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে।