জি এম ফিরোজ, ডুমুরিয়া : অভাবের তাড়নায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মত বিল ডাকাতিয়ার পাড়ে শাপলা বিক্রি করে জীবন জীবিকার চাকা ঘুরছে নিম্ন আয়ের শত শত পরিবার। ডাকাতিয়া বিলের নতুন পানিতে ফুটছে অসংখ্যা শাপলা ফুল্ আর এই শাপলাই গরিব মানুষের আহার যোগাতে সহায়তা করছে। শাপলা শুধু গ্রামেই নয়। শহরেও তরকারি হিসেবে শাপলার কদর দিন দিন বাড়ছে। শাপলা বিক্রি করতে কোন পুঁজির দরকার হয় না তাই বর্ষা মৌসুমে অনেক গরিব ও দিন মজুর শাপলা বিক্রির সাথে জড়িত হন। বিল ডাকাতিয়ার বর্ষার পানিতে নিচু জমি থেকে নৌকায় করে অথবা পানিতে নেমে শাপলা তুলে আনেন। এরপর বিভিন্ন মোড়ে বা বাজারে ঐ শাপলা বিক্রি করেন তারা। বিনা পুঁজিতে তারা শাপলা বিক্রি করে দৈনিক ৫০- ২০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন। আবার অনেকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শাপলা তুলে আঁটি বেঁধে পাইকারদের কাছেও বিক্রি করে থাকেন। শাপলা বিক্রি করে যা রোজগার হয় তা দিয়ে চলে গরিব মানুষের সংসার। বিল ডাকাতিয়া এখন পানিতে টইটুম্বুর। টানা বর্ষায় তলিয়ে গেছে খাল বিল ও বসত বাড়ি। মাছ শিকারীদের পাশাপাশি ব্যস্ততা বেড়ে গেছে ডাকাতিয়া বিল পাড়ের গরিব মানুষদের। জীবন জীবিকার তাকিদে তারা চষে বেড়াচ্ছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। দেড়লী গ্রামের মৃত বিজয় সরদারের স্ত্রী রেখা সরদার (৫৬)। সংসারের একমাত্র সদস্য। দিনের বেলায় বিল ডাকাতিয়া থেকে শাপলা তোলে। পরদিন সকালে তা বিক্রি করে সংসার চালায়। রেখা সরদার জানায়; পত্তেকদিন ডাকাতের বিলে পানতি উলে চুলোনির মধ্যি শাপলা তুলে আনে পরের দিন বেচি। কোন দিন ৫০ টাহা আবার কোন দিন ১০০ টাহা হয়। ঐ দিয়ে আমার একার সংসার চলে। বিদাসী মল্লিক (৭০)। দেড়লী গ্রামের ভূমিহীন পুলিন মল্লিকের স্ত্রী। তার ছেলে প্রসেন মল্লিক ডাকাতিয়ার বিল থেকে শাপলা তুলে আনে। মাধবকাটির রুপা রায় মাধবকাটি বিল থেকে শাপলা তুলে শাপলা বিক্রি করে ও দিন মজুরীর কাজ করে অতি কষ্টে চলে তাদের সংসার। ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকার শাপলা বিক্রি করে বলে তিনি জানান। শুধু রেখা সরদার, বিদাসী মল্লিক, সন্ধ্যা রানি নয় ডাকাতিয়া অঞ্চলের অসংখ্যা নারী পুরুষ শাপলা বিক্রি করে সংসার চালায। এ প্রতিবেদকের সাখে আলাপকালে জানান তাদের অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টের কথা।