
নতুন আক্রান্ত ২৪১৮, মৃত্যু ১৬
জন্মভূমি ডেস্ক : দেশে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর নতুন রেকর্ড হয়েছে। তিনদিন ধরেই আগের ২৪ ঘণ্টার ভর্তি রোগীর সংখ্যা পরের দিন ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ১৬ জনের। উল্লিখিত সময়ে চুয়াডাঙ্গায় চারজন রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বলে জানানো হয়েছে, যা বছরে প্রথমবার হলো দক্ষিণ-পশ্চিমের ওই জেলায়। এর মাধ্যমে পুরো দেশ অর্থাৎ ৬৪ জেলাতেই ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলো।
গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী এবং ১৬ জনের মৃত্যুতে চলতি বছরে মোট ভর্তি রোগী সংখ্যা ছাড়াল ৩৭ হাজার, আর মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়ালো ২০০-র ঘর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (২৪ জুলাই সকাল ৮টা থেকে ২৫ জুলাই সকাল ৮টা) পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৪১৮ জন। চলতি বছরে একদিনে এত রোগী এর আগে ভর্তি হয়নি। আগের দিন (২৪ জুলাই) ভর্তি হয়েছিলেন দুই হাজার ২৯৩ জন, ২৩ জুলাইতে ভর্তি হয়েছিলেন দুই হাজার ২৯২ জন। এর আগের দিন ২২ জুলাই বছরে প্রথম হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী দুই হাজারের ঘর ছাড়ায়; সেদিন ভর্তি হয়েছিলেন দুই হাজার ২৪২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টার রোগীদের মধ্যে ঢাকা নগরের চাইতে ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বেশি। ঢাকা নগরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১৬২ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ২৫৬ জন।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৭ হাজার ৬৮৮ জন। এদের মধ্যে ঢাকা নগরে ভর্তি হয়েছেন ২২ হাজার ৩৪৯জন, আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৫৪১ জন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাত হাজার ৯২৭ জন।
অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে ঢাকার রয়েছেন ১৪ জন আর ঢাকার বাইরের রয়েছেন দুই জন। এর আগে গত ১৯ জুলাই একদিনে ১৯ জনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই ১৬ জনকে নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হলো মোট ২০১ জনের। এর মধ্যে ঢাকা নগরে মৃত্যু হয়েছে ১৬২ জনের আর ঢাকার বাইরে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের।
অধিদপ্তরের হিসাবে, চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৯ হাজার ৭১০ জন, আর এ মাসে মৃত্যু হলো ১৫৪ জনের।
ডেঙ্গুতে গত জুন মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন। সে সময় মারা যান ৩৪ জন। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন এবং মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। মারা যান জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন এবং এপ্রিল ও মে মাসে দুজন করে।
দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ নজরে আসে ২০০০ সালে। এরপর সবচেয়ে ডেঙ্গু বেশি রোগী শনাক্ত হয় ২০১৯ সালে। সে বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০২২ সালে, ২৮১ জনের।
গত বছর ছাড়া ১০০ জনের বেশি মৃত্যু হয়েছিল ২০২১ ও ২০১৯ সালে। ওই দুই বছর মারা গিয়েছিল যথাক্রমে ১০৫ জন ও ১৭৯ জন।