তালা প্রতিনিধি : তালা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে ঘরবাড়ি দোকানপাট ফসলি জমি ঘের,মসজিদ-মাদ্রাসা মন্দির বিদ্যুতের লাইন ও নিম্ন এলাকার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এদিকে রবিবার থেকে খেশরা টিআরএম এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে ঘের ও ফসলের জমি প্লাবিত হয়েছে। সোমবার (২৮ মে) সকালে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এমন চিত্র দেখা গেছে। রবিবার রাত ১১টার পর থেকে উপজেলার প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টি হয় এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়। সোমবার সকালে থেকে বিভিন্ন এলাকায় জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেন।
খলিলনগর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু বলেন, তার ইউনিয়নের ৪১টি ঘর বাড়ি, ১৪টি দোকান ঘর টিন উড়ে ক্ষয়ক্ষতি এবং ৩৭০ বিঘা ফসলি জমি প্লাবিত, ১১টি ঘের, এছাড়াও মসজিদ মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শহীদ কামেল মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গাজী জাহিদুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তার স্কুলে টিন উড়ে টিনের চাল। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্তসহ পরীক্ষা ও শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশংকা ৬শতাধিক শিক্ষার্থীর।
মহান্দী গ্রামের রফিকুল ইসলাম নয়ন জানান, মহান্দী-হাজারাকাটি সড়কের বড় একটি গাছ পড়ে রাস্তার জানবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গাছটি সরানোর চেষ্টা করছে।
খেশরা গ্রামের শেখ আবুল কালাম জানান, খেশরা ইউনিয়নের শাহাজাতপুর পুন্ড্ররীক পাড়া সংলগ্ন বাঁধ নদীর ভাঙ্গনের ও ঘূর্ণিঝড় রিমালের বায়ু তাড়িত ধাক্কায় নদীর গর্ভে বিলীন হতে চলেছে। যেকোনো মুহূর্তে এই জায়গা থেকে ভেঙ্গে গেলে তলিয়ে যেতে পারে ৫/৬ টি গ্রাম। এছাড়া দক্ষিণ শাহজাদপুর গ্রাম সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীর ধারে জলোচ্ছ্বাসের কারণে কানায় কানায় পরিপূর্ণ নদীর পানি। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বহু বাড়িঘর, গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং এলাকার অনেক ঘের বাড়ি তলিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
খেশরা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ কামরুল ইসলাম লাল্টু জানান, ঝড়ের আঘাতে শালিখার টিরআরএম বাঁধ ভেঙে এলাকার মৎস্য ঘেরগুলো প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ের কারণে ৩০/৪০টিবাড়ির টিন উড়ে গেছে। এলাকায় বৈদ্যুতিক তার ছেড়া ও খুটি পড়ে যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, ফসলে জমি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য কৃষিকর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ওবায়দুল হক জানান, জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চাওয়া হয়েছে। তালিকা প্রণয়ন শেষে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে।
সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎসমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান জানান, ঝড়ের কারণে অনেক জায়গায় বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে গেছে। এছাড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়া থেকে শুরু করে তারের ওপর গাছের ডালাপালা বেঁধে আছে। বর্তমানে বিভিন্ন এলাকায় লাইনের কাজ চলছে। কাজ শেষে বিদ্যুৎ লাইন চালু করা হবে বলে জানান তিনি।
তালা উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা আফিয়া শারমিন জানান, সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো ঘুরে দেখা হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে ক্ষতির তথ্য নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
তালায় রেমালের তান্ডবে ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড
Leave a comment