গাজী জাহিদুর রহমান,তালা : তালা উপজেলার পাখিমারা বিলে বাস্তবায়িত টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট) প্রকল্পের বকেয়া ক্ষতিপূরণের দাবিতে উক্ত বিলের ক্ষতিগ্রস্ত ২হাজার ৪৭জন জমির মালিক গনস্বাক্ষর কর্মসূচী পালন করেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের গণস্বাক্ষরকৃত কপি বুধবার (১১ অক্টোবর) পানি সম্পদ মন্ত্রালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করেছেন। প্রায় ১০ বছরের জমির বকেয়া ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় ফুঁসে উঠেছে টিআরএম এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা।
ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক রবিউল ইসলাম মুক্তি, আকবর হোসেন, দিলীপ মন্ডল, খাবির হোসেন, জগদীশ রায়, সত্যরঞ্জন, ভদ্র কান্ত মন্ডসহ কয়েকজন জানান, ‘আমাদের এ অঞ্চলের কপোতাক্ষ অববাহিকায় দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমাস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ২৮৬ কোটি ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে গত ২০১১-১২ অর্থ বছরে পাখিমারা বিলের চারিপাশে ১২,৮৭ কি. মি. পেরিফেরিয়াল বাঁধ নির্মাণ শুরু করে এবং ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে তা শেষ করে। ভূমি অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ প্রদানের আশ^াস দিয়ে ২০১১ সালের পরিবর্তে ২০১৫ সালে টিআরএম প্রকল্প চালু করে। যথারীতি নদী খনন ও টিআরএম চালু হলেও ২০১১-২০১২ ও ১২-১৩ সালের ২ বছরের ক্ষতিপূরণের টাকা ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ সালের ২ বছরের হিসাব ধরে ৭৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের প্রদান করা হয়। ১ম প্রকল্প শেষ হয় ২০১৭ সালের জুন মাসে এবং ২য় পর্যয়ের প্রকল্প ২০২০-২১ হতে ২০২৩-২৪ নির্ধারণ করা হয়। ২য় প্রকল্পে জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা। অথচ ২০১৩ সাল হতে অদ্যাবধি ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে বাকী অধিগ্রহণকৃত ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদান করা হয়নি।’
তারা বলেন, ‘বর্তমানে আমরা অত্যন্ত দুরাবস্থায় আছি। নিজেদের জমি থাকা সত্বেও ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার ফলে আমরা জমির মালিকরা অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের অনেকের ১৫-২০ বিঘা জমি থাকলেও অর্থের অভাবে গভীর সমুদ্রে জীবনবাজি রেখে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। মানুষের ক্ষেতে কামলা দিতে হচ্ছে। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। শুনেছি বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে। একনেকে পাশ হয়েছে। কিন্তু এসব শুধু স্বপ্নে দেখার মতো। আমরা কোন ক্ষতি পূরণ পাচ্ছি না। সেই জন্য আমরা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা মিলে গণস্বাক্ষর দিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি।’
জমির মালিকরা আরও জানান, ‘গত ২০১১-১২ সালের আমাদের জমি অধিগ্রহণের টাকা পেতে ১২ রকমের কাগজ জেলা প্রশাসকের এল এ শাখায় জমা দিতে হয়। কাগজ করতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এরপরও বিভিন্ন জায়গায় নানাভাবে অর্থ দিতে হয়েছে। বর্তমানে নিরুপায় হয়ে আমরা গণস্বাক্ষর প্রদান করলাম।’ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির আবেদন পাবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তালার পাখিমারা বিলে টিআরএম প্রকল্পের বকেয়া ক্ষতিপূরণের দাবি
Leave a comment