ভেড়ামারা প্রতিনিধি : কোনো যন্ত্রাংশ (স্পেয়ার পার্টস) নষ্ট হলে সাধারণত অচল অবস্থায় পড়ে থাকে মেশিন। এতে সংশ্লিষ্ট কাজ ঠিকমতো করা যায় না। মেশিন মেরামতের জন্য অনেক সময় সঠিক যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় না। এই সংকটের সমাধান খুঁজতে থ্রি-ডি প্রিন্টারের মাধ্যমে গবেষণা করে নির্বাহী প্রকৌশলী (কারখানা) মো. আতিকুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি দল। এতে সফল হয়ে তাঁরা পেয়েছেন সেরা উদ্ভাবনী পুরস্কার। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার ৪১০ মেঃওঃ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তত্ববাধায়ক প্রকেীশলী (সংরক্ষন) রবিউল আওয়ালের ছোট ভাই. লালপুরের তিলোকপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ওমর আলী ছেলে ও আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এপিএসসিএল) নির্বাহী প্রকৌশলী (কারখানা) আতিকুজ্জামান। প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামান এতথ্য নিশ্চিত করেন।
উদ্ভাবনী প্রদর্শনীতে বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার মধ্যে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় এপিএসসিএল প্রথম স্থান অর্জন করেন নির্বাহী প্রকৌশলী (কারখানা) মো. আতিকুজ্জামান। বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে সম্প্রতি ঢাকার বিদ্যুৎ ভবনে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হাবিবুর রহমানের (বিপিএএ) হাত থেকে ‘সেরা উদ্ভাবনী’ পুরস্কার নেন এপিএসসিএলের নির্বাহী প্রকৌশলী (কারখানা) মো. আতিকুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান।
প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামান বলেন, ‘থ্রি-ডি প্রিন্টার চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তি। কোর আই প্রযুক্তির থ্রি-ডি প্রিন্টারে হুবহু ত্রিমাত্রিক বস্তু প্রিন্ট করা হয়। এই উদ্ভাবনীর মাধ্যমে অনেক জটিল পার্টসও তৈরি করে কলকারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম গতিশীল রাখা সম্ভব হবে। ‘ইতিমধ্যে এপিএসসিএলের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন স্থানে থ্রি-ডি প্রিন্টেড বিভিন্ন স্পেয়ার পার্টস (রাবার বুশ, প্যাড, হাইড্রোলিক সিল, ভ্যান ক্যাপ ইত্যাদি) ব্যবহার করা হচ্ছে। থ্রিডি প্রিন্টেড স্পেয়ার পার্টস ব্যবহার করে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে স্পেয়ার পার্টস কেনার জন্য ঢাকায় যাওয়ার প্রয়োজন কমেছে। এখন থেকে আর কোনো যন্ত্রাংশের কারণে বন্ধ থাকবে না মেশিন বা কলকারখানা। যে কোনো যন্ত্রাংশ থ্রি-ডি প্রিন্টারের মাধ্যমে তৈরি করে কলকারখানার উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে। ২০২৩-২০২৪ মোতাবেক ইনোভেশন শোকেসিং প্রদর্শনীতে ‘থ্রি-ডি প্রিন্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্পেয়ার পার্টস তৈরিকরণ’ শীর্ষক উদ্যোগ সেরা উদ্ভাবনী উদ্যোগ হিসেবে নির্বাচিত হয়। নির্বাহী প্রকৌশলী (কারখানা) মো.আতিকুজ্জামানের নেতৃত্বে যা বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখেন নির্বাহী প্রকৌশলী (কারখানা-নর্থ) মো. মনিরুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী (কারখানা-নর্থ) মো. রাসেল তালুকদার, সহকারী ব্যবস্থাপক (এমআইএস অ্যান্ড আইসিটি) মো. ফিরোজ আহম্মেদ, উপসহকারী প্রকৌশলী, কারখানা (নর্থ) রনি দে, উপসহকারী প্রকৌশলী (কারখানা) মো. মাসুদ পারভেজ রুবেল, প্রধান প্রকৌশলী (এমইউ, চলতি দায়িত্ব) বিকাশ রঞ্জন রায়, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) হারিস মোহাম্মদ ওয়াহেদী এবং উদ্যোগ বাস্তবায়নে মেন্টর হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ৪৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (নর্থ)।
প্রকৌশলী আতিকুজ্জামান ১৯৯৭ সালে লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৯৯ সালে রাজশাহী নিউ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ২০০৩ সালে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেকানিক্যাল বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, চিনিকলে চাকরি করে ২০১২ সালে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানিতে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করছেন।
থ্রি-ডি প্রিন্টারে যন্ত্রাংশ তৈরি করে সফল প্রকৌশলী আতিকুজ্জামান
Leave a comment