জন্মভূমি ডেস্ক : নড়াইলের শেখহাটি ইউনিয়নের দেবভোগ গ্রামের দলিত কৃষক রাধাবল্লব বিশ্বাস হত্যাকান্ড ও তার পরিবারের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত সকল অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ দলিল ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম) খুলনা জেলা শাখা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিডিইআরএম এর খুলনা জেলা শাখার সভাপতি সুব্রত কুমার মিস্ত্রি বলেন, বাংলাদেশের সিংহভাগ দলিত ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী খুলনা বিভাগের দশটি জেলায় বাস করে। তারা অনেকেই ভূমিহীন, কায়িক শ্রমে জীবন নির্বাহ করে। বাঁচার লড়াইয়ে তারা অসহায় হয়ে পড়েছে। কৃষি জমিতে যারা কাজ করছে বা যাদের জমি আছে সেখানে জাল দলিল, জবর দখল ও হয়রাণীর স্বীকার হচ্ছে। চলতি বছরের ১৬ ই আগস্ট নড়াইলের সদর থানার শেখহাটি ইউনিয়ন দেবভোগ গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রামমোহন বিশ্বাসের ছেলে রাধাবল্লব বিশ্বাস(৭০) নিজ দখলীয় জমিতে নিজের লাগানো পাট কাটতে যায়। পূর্ব শত্রুতার জেরে আলম শেখ (২৭), সালাম শেখ(৫০), জামাল শেখ (৫৫), মাশিয়ার রহমান (৪৫), ইমরান শেখ (৩৫), ইমন শেখ (২২), মোমেনা বেগম, অলিয়ার রহমান ফকির (৫০), নাসিমা খাতুন, মুজিবর ফকির (৪৫), রাজু মোড়ল (২০), সবুজ মোড়ল, মমতা বেগম (২৭), আসমা বেগম (২৬), ইতি বেগম (২১), শওকত আলী খান (৪৫), ফারুখ হোসেন (৩২), মোজাফর মোল্লা (৪০) ধারালো দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে রাধাবল্লব ও তার ভাই, ভাইপোদের নিয়ে পাট কাটা ও মজা দেওয়া অবস্থায় তাদের উপর হামলা করে ও এলোপাথাড়ী কোপ মারতে থাকে এর এক পর্যায়ে রাধাবল্লব মারাত্মক জখম হয়ে লুটিয়ে পড়েন এবং তার ভাই, ভাইপোরা মারাত্মকভাবে আহত হন। রাধাবল্লবকে ধরে উঠিয়ে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষনের মধ্যেই তার মৃত্যু ঘটে।
তিনি আরও বলেন, রাধাবল্লবের ভাই দুর্লভ বিশ্বাস, ভাইপো রাম বিশ্বাস, ছেলের বউ স্মৃতি রানী বিশ্বাস, ভাইপো সুফল বিশ্বাস, শ্যাম বিশ্বাস ও বৌমা ঝিনুক বিশ্বাস, তাদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে মারাত্মকভাবে জখম করে, তারাও হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। একটি সংঘবদ্ধ চক্র অসহায় দলিত রাধাবল্লবের পরিবারেরকে ধ্বংস করার জন্য এ জঘন্যতম হামলা চালায়। আমরা এই সংঘবদ্ধ চক্রের সকল আসামী গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি। আসামীরা মামলার বাদীসহ রাধাবল্লবের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হুমকি দিয়ে বলছেন এক জনকে খুন করেছি এরপর তোদের সকলের গলা কেটে ফেলবো, তোরা হিন্দু মানুষ বাঁচতে চাইলে ভারতে চলে যা। আমরা রাধাবল্লবের পরিবারের সকল সদস্যের নিরাপত্তা চাই। এখন পর্যন্ত চারজন আসামী গ্রেফতার হয়েছে বাকি আসামীদের গ্রেফতারের এবং আসামীদের আইনের আওতায় এন দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিডিইআরএম এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিভূতোষ রায়, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিশিত রঞ্জন মিস্ত্রী, গীতা ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রসেঞ্জিৎ দত্ত, বিডিইআরএম এর সাধারণ সম্পাদক শিবপদ দাস, নাগরিক উদ্যোগের বিভাগীয় কোডিনেটর মো. রহিদুল ইসলাম, বিভাগীয় সহ-সমন্বয়কারী পলাশ দাস, গীতা ফাউন্ডেশনের কোষাদক্ষ পবিত্র মন্ডল ও কর্মী বন্যা পাল, রাধাবল্লব হত্যা মামলার বাদি তার ভাইপো সুফল বিশ্বাস প্রমুখ।