
আহাম্মদ ইব্রাহিম অরবিল, দশমিনা(পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে গ্রামগঞ্জে খেজুরের গাছ কমে যাওয়ায় চলতি শীত মৌসুমে খেজুরের ও গুড়ের আকাল পড়েছে। শীতকাল শুরুর পর থেকেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছ কাটার ধুম পড়ে যেত। বর্তমানে উপজেলায় খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় খেজুরের রস ও গুড় পাওয়া দুস্কর হয়ে গেছে। শীতের পিঠা খাওয়ার জন্য গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস ও গুড় হাটবাজারে এখন আর তেমন বিক্রি হচ্ছে না। পাড়া মহল্লায় বা বাড়িতে বাড়িতে পিঠা ও পায়েস খাওয়ায় ধুম পড়ছে না।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে বাঁশবাড়িয়ার গছানী,বহরমপুরের নেহালগঞ্জ,আদমপুর বেতাগী-সানকিপুরের বড়গোপালদী, রামবল্লভ, মর্দনা,আলীপুরার খলিসাখালী, যৌতা ,রণগোপালদীর দক্ষিন রনগোপালদী, আউলিয়াপুর,দশমিনা সদরের হাজীরহাট,কাটাখালী,ঢনঢনিয়া গ্রামে খেজুর গাছ যেমন বেশী ছিল তেমনি রসও পাওয়া যেত। রস বিক্রির পাশাপাশি রস থেকে সুস্বাদু গুড় তৈরি করা হতো। খেজুরের রস দিয়ে পিঠা ও পায়েস তৈরি করার জন্য ক্রেতারা গ্রামীন হাটবাজারে রস কিনতে ভিড় করতো। গ্রামীন বাজার থেকে ক্রেতার রস ক্রয় করে কাঁচা রস খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা হত। এই দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। এদিকে গাছিরা গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বড় একটি টিনের পাত্রে রস ঢেলে খড়কুটো দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। গাছিরা এই গুড় গ্রামীন হাটবাজারে নিয়ে বিক্রি করে থাকে। উপজেলার গ্রামীন হাটবাজারে এখন আর রস,গুড়, গুড়ের পাটালি তৈরি করে তেমন বিক্রি হয় না। দশমিনা উপজেলার পার্শ্ববর্তী বাউফল,গলাচিপা এবং ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীরা গুড় ক্রয় করে এনে অত্র উপজেলার হাটবাজারে বিক্রি করে থাকে। তবে গ্রামাঞ্চলে রসের পিঠার উৎসব এখন আর নেই। রসের পিঠাপুলির ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।