
বিধান চন্দ্র ঘোষ, দাকোপ : খুলনার দাকোপে ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে অপসাংবাদিকের দৌরাত্ব। প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্য রাত অবদি সাংবাদিকতার পরিচয় দিয়ে মটর বাইক চেপে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে। কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পেলেই ওই চক্র হানা দেয় তার দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানে। এমনকি বাড়িতে গিয়েও হাজির হয়। এসব নামধারী সাংবাদিকদের খপ্পরে পড়ে বিভিন্ন এলাকার ভূক্তভোগী জনসাধারণ প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আর এতে প্রকৃত সাংবাদিকদের সম্মান চরম ভাবে ক্ষুণ হচ্ছে। প্রেস ক্লাবের কয়েকটি সাধারণ সভায় সকল সাংবাদিকরা এমন উদ্বেক প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসি ও ভূক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকা ম্যাগাজিন ও অনুমোদনহীন অনলাইন পত্রিকার পরিচয় পত্র নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ওই চক্র। কেউ কেউ আবার নিজেই অনলাইন পত্রিকা খুলেছেন। এসব ভুঁই ফোড় অপসাংবাদিকদের কাতারে রয়েছেন বেশ কয়েকজন নেশাখোর, মাদক ব্যবসায়ী, দালাল ও অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্তরা। এসব ব্যক্তিরা কাক ডাকা ভোরে বেরিয়ে মধ্য রাত অবদি দাপিয়ে বেড়ান মফস্বলের তৃর্ণমূল পর্যন্ত। এদের প্রত্যেকেই নিজেদের মুল পেশা আড়াল করতে নাম লিখেছেন মফস্বল সাংবাদিকতায়। ওই চক্র সাংবাদিকতার পরিচয় দিয়ে নম্বরহীন মটর সাইকেলের নেমপ্লেটে প্রেস বা সাংবাদিক লিখে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি জোরদার রেখেছেন। অল্প সময়ে বিনা পরিশ্রমে অধিক অর্থ উপাজনে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন দেদারচ্ছে। এলাকার অসহায় গরীব মানুষের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা ও মাসোয়ারা আদায় করা হচ্ছে ওই চক্রের মূল লক্ষ। মাঝে মধ্যে আবার প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়েও বানিজ্য করতে দ্বিধাবদ করছেন না। এমনকি মাঝে মধ্যে আমন ধান রোপন ও কাটা এবং রবি মৌসুমে ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল হিসাবে দল বেঁধে নেমে পড়েন জমি দখল প্রতিযোগিতায়। এতে উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে আসা মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এবিষয়ে দাকোপ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোবিন্দ বিশ্বাস জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ ভুঁই ফোড় অপসাংবাদিকদের দৌরাত্ব ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় কথিত সাংবাদিক তথা সংগঠনসহ বিভিন্ন নামে মোবাইলে ভিডিও ধারণ অথবা নিজেদের ফেইজবুক আইডিতে সংবাদ পরিবেশনের ভয় দেখিয়ে নানাভাবে অপসাংবাদিকতা শুরু করেছে। এমনকি প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়েও বানিজ্য করছেন ওই চক্র। তাদের এ ধরনের অপতৎপরতার কারণে মূল ধারার সাংবাদিকরা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তিনি এ ধরনের অপসাংবাদিকতা প্রতিহত করতে প্রশাসন এবং সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে আহবান জানান। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, যারা অপসাংবাদিকতার আশ্রয় নিয়ে চাাঁদাবাজি করবে তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এবং তার সঠিক তথ্য প্রমান পেলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।