জন্মভূমি ডেস্ক : দুই থেকে তিনবারের বেশি চাল ছাঁটাই করা যাবে না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক রং ও ঘ্রাণের চাল গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে ঈদের পর মিল মালিকদের সঙ্গে বসে তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো প্রাঙ্গণে সরকারি প্রিমিক্স কার্নেল ফ্যাক্টরির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আগে চালে পুষ্টি মেশাতে হতো না। প্রাকৃতিকভাবেই চালে পুষ্টি থাকতো। চাল চকচকে করতে বর্তমানে চার-পাঁচবার ছাটাই করে পুষ্টি ফেলে দেওয়া হচ্ছে। চালে কর্বোহাইড্রেট ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। সেই চালে আবার পুষ্টি মিশিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে, এটা অপচয়। অপচয় বন্ধ করতে সরকার কাজ করছে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সারাবছর দেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ চাল বিতরণ করা হয় তার এক তৃতীয়াংশ নারায়ণগঞ্জ প্রিমিক্স কার্নেল ফ্যাক্টরি থেকে যোগান দেওয়া সম্ভব হবে।
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সারাদেশে খাদ্য গুদামগুলো ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। ফলে খুব সহজেই কোন গুদামে কতটুকু স্টক আছে, কোথায় পণ্য ঢুকছে এবং বের হচ্ছে তা জানা সম্ভব হবে। এছাড়াও সারাদেশে ২০০ খাদ্য গুদাম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খাদ্য গুদামগুলো নির্মাণ হলে সংরক্ষণ সক্ষমতা আরও বাড়বে।
অনুষ্ঠানে খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন বলেন, অত্যাধুনিকভাবে খাদ্য পণ্য বিশেষ করে চাল ও গম সংরক্ষণ করার কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। প্রতি বছর প্রায় ৪ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে থাকে সরকার। পৃথিবীর অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও আমাদের সুবিধাভোগীর সংখ্যা বেশি।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতার বাইরের মানুষের জন্য ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ চাল বিক্রয় কার্যক্রমকে বেগবান করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, খাদ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাব ১১ এর সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ আমির খসরু।
প্রিমিক্স কার্নেল ফ্যাক্টরি চালু হওয়ার ফলে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় বিতরণকৃত চালের পুষ্টি বৃদ্ধি পাবে। কার্নেল ফ্যাক্টরিতে প্রতি ঘণ্টায় ৪০০ কেজি চাল উৎপাদন সম্ভব হবে। কার্নেলে মানবদেহের অপরিহার্য ছয়টি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি ১২, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন (ফেরিকপাইরোফসফেট) এবং জিংক ইত্যাদি বিতরণকৃত চালে ফর্টিফাইড করা হবে। ফলে সরকারি সামাজিক নিরাপত্তার বিভিন্ন কর্মসূচিতে ভালোমানের ও পুষ্টিসমৃদ্ধ চাল সরবরাহ নিশ্চিত হবে।