By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: দেশের অর্থনীতিতে হাতছানি দি‌চ্ছে উপকূলের কাঁকড়া চাষ
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > দেশের অর্থনীতিতে হাতছানি দি‌চ্ছে উপকূলের কাঁকড়া চাষ
তাজা খবরসাতক্ষীরা

দেশের অর্থনীতিতে হাতছানি দি‌চ্ছে উপকূলের কাঁকড়া চাষ

Last updated: 2025/12/02 at 12:43 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সুন্দরবনের গা ঘেঁষা সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কাঁকড়া চাষ এখন আর কেবল বিকল্প আয়ের উৎস নয়। এটি এখন লাভজনক ও টেকসই শিল্প। ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত এ চাষাবাদে স্বাবলম্বী হচ্ছে শতশত পরিবার। কর্মসংস্থান হ হাতছানি দিচ্ছেয়েছে নারীদেরও।
এখন সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত গ্রামে গেলে দেয়া যায়, কাটা হচ্ছে হাজার হাজার তেলাপিয়া মাছ। যা খাঁচাবন্দি কাঁকড়াগুলোর খাবার। আর নিয়ম করে তিনবেলা লক্ষ্য রাখা কাঁকড়াগুলো খোলস পাল্টেছে কিনা। ২০ থেকে ২২দিনের মধ্যেই কাঁকড়ার ওজন বাড়লে কাঁকড়াগুলো রপ্তানি হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
কাঁকড়ার এমন সম্ভাবনা দেখে সরকারি-বেসরকারি নানা সংস্থা যেমন আগ্রহী, তেমনি বর্তমানে চাষিরাও হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন এ খাতে।
শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান। ৬বিঘা জমিতে কাঁকড়া চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি বলেন, প্রায় পাঁচ-ছয় বছর ধরে খাঁচায় কাঁকড়া পালন করছি। ভালো লাভ হয়। তবে সমস্যা একটাই-পানির সংকট। আর যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না। গাবুরা ইউনিয়নে একটি কোম্পানি কাজ করে। তারা নদীপথে বোট নিয়ে এসে নির্ধারিত স্থানে কাঁকড়া সংগ্রহ করে নিয়ে যায়।
সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এখনো কোনো সরকারি সহযোগিতা পাইনি। যদি প্রশিক্ষণ ও পানির সমস্যা সমাধানে কেউ এগিয়ে আসে, তাহলে এই পদ্ধতিতে আরও বেশি মানুষ যুক্ত হবে।
সাতক্ষীরার এই প্রকল্পে শুধু চাষিরাই নন, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে বহু শ্রমজীবী মানুষের জন্যও। তাদের একজন মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, সকাল ৭টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত ডিউটি। এর মধ্যে কাঁকড়ার খাঁচা চেক করতে হয় দিনে চারবার- সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যায়। এরপর রাত ১১টা ও রাত ৩টায় দেখতে হয় খোলস বদলেছে কি না।
তিনি জানান, সফটশেল কাঁকড়া আলাদা করে তোলা হয়। পরে কোম্পানি সেই কাঁকড়া বিভিন্ন গ্রেডে কিনে নেয়। খাদ্য হিসেবে তেলাপিয়া মাছ দেওয়া হয় প্রতি তিন দিন পরপর।
জানা যায়, এই প্রকল্পে নারীরাও সরাসরি যুক্ত। কেউ কাঁকড়ার খাবার হিসেবে তেলাপিয়া মাছ কেটে দেন, কেউ খাঁচা পরিষ্কারের কাজ করেন।
স্থানীয় যুবক জাফর সাদিক সোহাগ বলেন, এই চাষের কারণে গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থান বেড়েছে। নারীরাও আয় করছেন। এটা অনেক লাভজনক পদ্ধতি।
মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাতক্ষীরা জেলা থেকে ৬৪৪মেট্রিক টন সফটশেল কাঁকড়া রপ্তানি হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১০০কোটি টাকা। বর্তমানে ৩৬৪জন চাষি, জেলার ৩২১টি স্থানে এই চাষ করছেন। বছরে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিএম সেলিম বলেন, সাতক্ষীরায় চিংড়ির পাশাপাশি কাঁকড়া চাষ দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। এটি খুব সম্ভাবনাময় একটি খাত। আমরা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাচ্ছি, কিছু বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে।
তবে সমস্যার কথাও জানালেন তিনি। প্রতি বছর পাঁচ মাস সুন্দরবনে কাঁকড়া আহরণ বন্ধ থাকে এবং এখানে কাঁকড়ার হ্যাচারি নেই। হ্যাচারি হলে সারা বছর উৎপাদন সম্ভব হতো এবং কর্মসংস্থান অব্যাহত থাকত বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সরকারিভাবে কীভাবে এই বন্ধ সময়েও চাষিদের সহায়তা দেওয়া যায়। বনবিভাগের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। বাগদা বা গলদার পাশাপাশি কাঁকড়া চাষ আত্মকর্মসংস্থানের বড় মাধ্যম হতে পারে।
এক সময়ের উপেক্ষিত সুন্দরবনঘেঁষা জনপদ আজ স্বপ্ন দেখছে কাঁকড়াকে ঘিরে। সরকারি সহায়তা, হ্যাচারি ও রপ্তানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা হলে সাতক্ষীরা হতে পারে দেশের কাঁকড়া রপ্তানির কেন্দ্রস্থল- এমনই বিশ্বাস স্থানীয়দের।
বাজার থেকে কাকড়া কিনে ছোট ছোট খাচায় রেখে মোটাতাজা করা হচ্ছে। ২০ থেকে ২২ দিনেই একবার খোলস পরিবর্তন করে প্রতিটি কাকড়া। এতে প্রতিটি কাকড়ার ওজন বেড়ে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হয়। পরে এই কাকড়া রপ্তানি হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আর এতে লাভ বেশি ও রোগবালাই কম হওয়ায় সাতক্ষীরায় ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খাচায় কাকড়া পদ্ধতি। জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নের কলবাড়ি ব্রিজ সংলগ্ন খাস জমিতে বিশেষ এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থায়নে ইনোভেশন ইন পাবলিক সার্ভিসের আওতায় শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন গড়ে তুলেছে কাকড়া মোটাতাজাকরণ খামার। দুই বিঘা জমির এই খামারে সাড়ে পাঁচ হাজার খাচায় কাকড়া মোটাতাজা করা হচ্ছে। যার ব্যবস্থাপনায় রয়েছে স্থানীয় বাগদী সম্প্রদায়ের আদিবাসীরা। সমবায়ের ভিত্তিতে পরিচালিত এই খামার সম্পর্কে মালঞ্চ নৃ-তাত্ত্বিক আদিবাসী শ্রমজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি জয়ন্ত ম-ল বাগদী বলেন, প্রতিদিন বাজার থেকে ছোট সাইজের কাকড়া কিনে খাচায় রেখে মোটাতাজা করা হয়। হাতে থাকা কাকড়া দেখিয়ে তিনি বলেন, সকালে বাজার থেকে তিনি ১০ কেজি কাকড়া কিনেছেন। প্রতি কেজিতে ৫টি করে কাকড়া হয়েছে। এই কাকড়া ২০ থেকে ২২ দিন খাচায় লালনপালন করে মোটাতাজা করা হবে। এতে প্রতিটি কাকড়ার ওজন বাড়বে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। তখন ৫টি কাকড়ার ওজন হবে দুই কেজির চেয়ে বেশি। জয়ন্ত ম-ল জানান, এতে খরচও কম। শুধুমাত্র খাবার দিতে হয়। খাবার হিসেবে তারা প্রতিদিন ছোট ছোট একটি করে তেলাপিয়া মাছ খাচায় দেন। যা বাজার থেকে সস্তায় কেনা হয়। কয়েকদিনের মধ্যে খোলস পরিবর্তন করলেই কাক্সিক্ষত ওজন বেড়ে যায় কাকড়ার। এ সময় কাকড়ার খোলস নরম থাকে। এ কারণে বাজার চাহিদাও বেশি। পরে তা প্যাকেটজাত করে অস্ট্রোলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চিনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়। দামও পাওয়া যায় ভালো, কেজি প্রতি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। শুধু বাগদী সম্প্রদায়ের মানুষ নয়, চিংড়ি চাষের তুলনায় লাভ ও ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা না থাকায় অনেকেই ঝুঁকে পড়েছেন কাকড়া চাষে। যার ফলশ্রুতিতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ইতোমধ্যে জেলায় ৩৭০টি কাকড়া মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে উঠেছে। আর এ খাত থেকে ক্রমেই বাড়ছে রপ্তানি আয়। সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১০৪টি সরকারি ও ২৬৬টি বেসরকারি কাকড়া মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে উঠেছে। আরও কয়েকটি খামার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ খাতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে প্রায় ১১ হাজার মানুষ। সূত্র জানায়, জেলায় ২০১৩ সালে দুই হাজার তিনশ’ মেট্রিক টন, ২০১৪ সালে দুই হাজার চারশ’ মেট্রিক টন ও ২০১৫ সালে দুই হাজার আটশ’ ১৪ মেট্রিক টন কাকড়া উৎপাদন হয়। যার প্রায় সবটাই রপ্তানিযোগ্য। এরমধ্যে ২০১৫ সালে সদর উপজেলায় ৩ মেট্রিক টন, তালায় ৭ মেট্রিক টন, আশাশুনিতে ২০৫ মেট্রিক টন, দেবহাটায় ৩১১ মেট্রিক টন, কালিগঞ্জে ৭৪৫ মেট্রিক টন ও শ্যামনগরে এক হাজার পাঁচশ’ ৪৩ মেট্রিক টন কাকড়া উৎপাদন হয়। শ্যামনগরের কাকড়া চাষি বিশ্বজিৎ কুমার ম-ল জানান, মোটাতাজা করার জন্য প্রয়োজনীয় কাকড়া জোগান দেওয়া সম্ভব হলে রপ্তানি খাতে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হতে পারে। কিন্তু যতই মোটাতাজাকরণের খামার বাড়ছে ততই ছোট কাকড়ার প্রাপ্যতা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। এজন্য এ এলাকায় একটি কাকড়া প্রজনন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানান তিনি। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম জানান, শ্যামনগরে ইনোভেশন ইন পাবলিক সার্ভিসের আওতায় মৎস্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে খাচায় কাকড়া মোটাতাজাকরণের মাধ্যমে আদিবাসীদের দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ক্রমেই এই উদ্যোগ সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রমজান আলী জানান, লাভ বেশি হওয়ায় জেলায় কাকড়া চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মোট রপ্তানির একটি বড় অংশ সাতক্ষীরা থেকে যায়। এছাড়া রপ্তানি আয় বৃদ্ধির জন্য সরকার এই খাতকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়ে যাচ্ছে।
সুন্দরবনের গা ঘেঁষা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় এক সময়ের অবহেলিত ও ঝুঁকিপূর্ণ জনপদ এখন রূপ নিয়েছে সম্ভাবনার কেন্দ্রস্থলে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এই এলাকার মানুষের জীবনে এসেছে নতুন মোড়। তারা এখন কাঁকড়াকে ঘিরে গড়ে তুলেছেন একটি লাভজনক ও টেকসই শিল্প। শুধু বিকল্প আয়ের উৎস নয়, এখন কাঁকড়া চাষ হয়ে উঠেছে আত্মনির্ভরতার প্রতীক। এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শত শত পরিবার ফিরে পেয়েছে জীবনের গতি, কর্মসংস্থান হয়েছে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে।
শ্যামনগরের প্রত্যন্ত এলাকায় গেলে এখন দেখা মেলে খাঁচাবন্দি হাজার হাজার সফটশেল কাঁকড়ার। এসব কাঁকড়া দিনে তিন থেকে পাঁচবার পর্যবেক্ষণ করতে হয়। সফটশেল অবস্থায় কাঁকড়াগুলো সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয় আন্তর্জাতিক বাজারে। সফটশেল বলতে বোঝায়, যখন কাঁকড়া খোলস বদলায় এবং শরীর থাকে তুলনামূলক নরম। এ সময় কাঁকড়া সবচেয়ে বেশি রপ্তানিযোগ্য হয়। সাধারণত ২০ থেকে ২২ দিনের মধ্যেই কাঁকড়াগুলো এই অবস্থায় পৌঁছায়। প্রতিদিন সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা, এমনকি গভীর রাতেও খাঁচা পর্যবেক্ষণ করেন প্রশিক্ষিত কর্মীরা।
এই চাষে আধুনিক প্রযুক্তিরও ব্যবহার হচ্ছে। খাঁচাগুলোতে নিয়মিত নজরদারি, খাদ্য সরবরাহ এবং তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ সবই করা হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে। কাঁকড়ার খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয় তেলাপিয়া মাছ। স্থানীয় নারীরা এই মাছ কেটে খাদ্য প্রস্তুত করেন এবং খাঁচা পরিষ্কারের কাজেও অংশ নেন। ফলে নারীরাও এই শিল্পে সরাসরি যুক্ত হয়ে আয় করছে।
গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম এই চাষে সফলতার মুখ দেখেছেন। তিনি বলেন, “প্রায় পাঁচ-ছয় বছর ধরে খাঁচায় কাঁকড়া পালন করছি। ভালো লাভ হয়। তবে সমস্যা একটাই—পানির সংকট। আর যাতায়াত ব্যবস্থাও ভালো না।” তিনি জানান, একটি বেসরকারি কোম্পানি নদীপথে এসে নির্ধারিত স্থান থেকে কাঁকড়া সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। সরকারি প্রশিক্ষণ বা অর্থায়ন না পেলেও তার মত চাষিরা মনে করেন, যদি এই দুটি সমস্যা সমাধান করা যায়, তাহলে আরও অনেকে কাঁকড়া চাষে আগ্রহী হবেন।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সাতক্ষীরা জেলা থেকে ৬৪৪ মেট্রিক টন সফটশেল কাঁকড়া রপ্তানি হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। বর্তমানে জেলার ৩২১টি স্থানে ৩৬৪ জন চাষি এই পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষ করছেন। বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদন হচ্ছে এখান থেকে।
এই শিল্পের মাধ্যমে শুধু চাষিই নয়, কাজের সুযোগ পেয়েছেন অনেক শ্রমজীবী মানুষও। তাদের একজন মো. রবিউল ইসলাম, যিনি সকাল ৭টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত কাঁকড়ার খাঁচা পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকেন। রাতে আবার ঘুম ভেঙে দেখতে হয়, খোলস পাল্টেছে কিনা। কাঁকড়াগুলো যখন সফটশেল হয়, তখন আলাদা করে রাখা হয় এবং কোম্পানি সেগুলো গ্রেড অনুযায়ী কিনে নেয়।

এই চাষে নারীরাও পুরুষের পাশাপাশি কাজ করছেন। কেউ তেলাপিয়া মাছ কেটে খাবার তৈরি করছেন, কেউ খাঁচা পরিষ্কার করছেন, কেউ খাঁচার অবস্থান পর্যবেক্ষণ করছেন। স্থানীয় সাংবাদিক আবু সুফিয়ান (ফয়সাল) বলেন, “এই চাষের কারণে গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থান বেড়েছে। নারীরাও আয় করছেন। এটা অনেক লাভজনক পদ্ধতি।
এক সময়ের অবহেলিত উপকূলীয় জনপদ আজ কাঁকড়াকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছে। এই সম্ভাবনাময় শিল্প যদি যথাযথভাবে এগিয়ে নেয়া যায়, তাহলে শুধু সাতক্ষীরা নয়, গোটা দেশ লাভবান হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে।
পথে পথে হয়রানি, ভোগান্তি আর প্রশাসনের বিরূপ মনোভাব ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকার কারণে চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কাঁকড়া রপ্তানি। এসব কারণে খুলনার ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট মিলে বৃহত্তর খুলনায় শতকোটি টাকা মূল্যের রপ্তানিযোগ্য কাঁকড়া মাটিতেই পড়ে আছে। এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাজার হারানোর আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা এর জন্য পণ্য রপ্তানি নীতিমালা ও আইনের অপপ্রয়োগকে দায়ী করেছেন।
খুলনা ও বাগেরহাটের কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের সূত্র জানিয়েনে, গত ৩ বছর ধরে কাঁকড়া রপ্তানি দেশের অর্থনীতিতে সম্ভাবনার এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। শুধু কাঁকড়া রপ্তানি করে এখন প্রতিবছর গড়ে আয় হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা। রপ্তানি তালিকায় অপ্রচলিত এই পণ্যই বদলে দিচ্ছে লাখো মানুষের ভাগ্য। যে হারে চাহিদা বাড়ছে তাতে ‘সাদাসোনা’ হিসেবে পরিচিত গলদা চিংড়িকে অদূর ভবিষ্যতে হার মানাতে পারে এই জলজ সম্পদ। দেশের পাঁচ উপকূলীয় এলাকায় এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে কাঁকড়ার। মোটাতাজাকরণ ও পোনা পালন প্রকল্পে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় অন্তত শতাধিক কোটি টাকামূল্যের রপ্তানিযোগ্য কাঁকড়া মাটিতেই পড়ে আছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে প্রথম ১৯৭৭ সালে মাত্র ২ হাজার ডলারের কাঁকড়া রপ্তানি হয়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে বেড়ে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এসে দাঁড়ায় ২ হাজার ৯৭৩ টনে। ২০১১-১২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৪১৬ টনে। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সেই রপ্তানি হয়েছে ৮ হাজার ৫২০ টন। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১০ হাজার এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা ১০ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন ছাড়িয়েছে। কাঁকড়া রপ্তানির বড় অংশ যায় চীনে, তারপর রয়েছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, জাপান, সিংগাপুর, কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মিয়ানমার এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ মিলিয়ে মোট ১৮টি দেশে এই কাঁকড়া রপ্তানি হচ্ছে।
এ বিপুল পরিমাণ কাঁকড়া রপ্তানিতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চরম হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তাদের দাবি, প্রজনন মৌসুমে নদ-নদী থেকে কাঁকড়ার পোনা আহরণ নিষিদ্ধ থাকায় প্রশাসনের সদস্যরা নাজেহাল করে।
দিগরাজ কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান শেখ বলেন, প্রজনন মৌসুমে কোন কাঁকড়া নদী থেকে সংগ্রহ করা হয় না। এ মৌসুমে ঘেরের সংরক্ষিত কাঁকড়া বাজারজাত করা হয়। বিষয়টি পুলিশসহ প্রশাসনের অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা না জেনেই পথিমধ্যে পরিবহন আটকে দেয়। এ সময় হয়রানির শিকার হতে হয় ব্যবসায়ীদের। চালনা কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুর রহিম গাজী বলেন, ‘কোস্টগার্ড অনেক সময় না জেনে বুঝেই কাঁকড়া নষ্ট করে দেয়। পোনা কাঁকড়া কখনও এক দুই সপ্তাহের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয় না। এ জন্য এখন নদী থেকে আহরণ করে সেই পোনা বিক্রি করা সম্ভব নয়। এগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জানা না থাকায় তারা আচমকা অভিযান চালিয়ে সেগুলো বিনষ্ট করে দেয়। দাকোপ-বটিয়াঘাটা এলাকা এ অঞ্চলের সবথেকে বড় মোকাম’। আর এখানেই এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে বলে তিনি দাবি করেন। পাইকগাছা কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি অদিবাস কুমার বলেন, কাঁকড়া পানি থেকে ডাঙায় ওঠানোর পর ৪/৫ দিনের বেশি সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এর মধ্যে সেটা ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাতে হয়। না হলে মারা যায়। তবে স্থানীয় পর্যায় এবং হাইওয়েতে কোনভাবে যদি গাড়ি আটকে রাখা হয় তবে এগুলো মারা যাওয়ার আশংকা থাকে। তিনি এ ধরনের হয়রানি বন্ধের দাবি জানান। খুলনা বিভাগীয় মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকার জানান, বর্তমানে খুলনা অঞ্চল থেকে কত টাকার এবং কি পরিমাণ কাঁকড়া রপ্তানি হয় তার হিসাব নেই তাদের কাছে। মৎস্য অধিদপ্তর ঢাকায় পূর্ণাঙ্গ হিসাব আছে।
: আশির দশকের অপ্রচলিত পণ্য শিলা কাঁকড়া বর্তমানে একটি রপ্তানিযোগ্য অর্থকরী জলজ সম্পদ। উপকূলীয় অঞ্চলের ৭১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের কম-বেশী উপস্থিতি বিদ্যমান। তবে সেন্টামার্টিন স্বাতীত বৃহত্তর কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সাতক্ষীরা, খুলনা ও নোয়াখালীসহ মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সন্দ্বীপ, হাতিয়া এবং দুবলারচর এলাকায় উল্লেখযোগ্য হারে এদের পাওয়া যায়। আমাদের দেশে লোনা পানিতে ১২ প্রজাতির কাঁকড়া পাওয়া গেলেও মাড ক্র্যাব বা শিলা কাঁকড়াই (Seylla serrata) একমাত্র বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যা আকারে ও ওজনে বড় হয়। চিংড়ির ন্যায় আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর চাহিদা ও অধিক মূল্য প্রকৃতিতে পোনার প্রাচুর্য ও সহজলভ্যতা, সহজে ও অল্প সময়ে বাজারজাত যোগ্য করা যায় বলে চাষীদের কাছে কাঁকড়া চাষ ও ফ্যাটেনিং ক্রমেই জন প্রিয় হয়ে উঠছে। সুন্দরবনের প্যারাবন (Mangrove) বিধৌত মোহনা এলাকায় এদের বসবাস হলেও ডিম ছাড়ার জন্য গভীর সমুদ্রে চলে যায়। ডিম ছাড়ার পর বাচ্চা অবস্থায় অর্থাৎ জুইয়া ও মেগালোপা পর্যায়ে সমুদ্রের অগভীর এলাকায় চলে আসে। এরপর মোহনা ও প্যারাবন এলাকায় পরিপক্কতা লাভের পর পুনরায় গভীর সমুদ্রে চলে যায়। এভাবেই তাদের জীবনচক্র চলতে থাকে।

পুরুষ ও স্ত্রী কাঁকড়া চেনার উপায়
কাঙ্খিত দৈহিক ও জৈবিক গুণাবলি অর্জনের পর আন্তর্জাতিক বাজারে স্ত্রী ও পুরুষ উভয় প্রকার কাঁকড়ারই চাহিদা থাকে। স্ত্রী কাঁকড়ার বেলায় গোনাড ও পুরুষ কাঁকড়ার বেলায় আকৃতি বৃদ্ধিসহ দেহের খোলস শক্ত থাকা দরকার। চিমটা পা ও বুকের ফ্ল্যাপ দেখে স্ত্রী ও পুরুষ কাঁকড়া সহজে চেনা যায়।
স্ত্রী ও পুরুষ কাঁকড়া সনাক্তকারী উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
■ স্ত্রী কাঁকড়ার বুকের ফ্ল্যাপটি অর্ধগোলাকার, অপরদিকে পুরুষ কাঁকড়ার ফ্ল্যাপটি অপেক্ষাকৃত সরু ও ইংরেজী ইউ বা ভি আকৃতির।
■পুরুষ কাঁকড়ার চিমটা পা একই বয়সের স্ত্রী লঞ্চিতা চাইতে বড় ও ধারালো।

চাষাবাদ পদ্ধতি
বাংলাদেশে সারা বছর ধরে অঞ্চল ও ঋতুতে যান তার ও পরিমাণের কাঁকড়ার পোনা পাওয়া গেলেও জানুয়ারি হতে আগস্ট মাস পর বেশি দেখা যায়। কাঁকড়া অতি দ্রুত বর্ধনশীল রাক্ষুসে স্বভাবের জলজ প্রাণী। এলাকায় পানির লবণাক্ততা বেশি সেখানে উপযুক্ত খাদ্য প্রয়োগ ও ব্যবস্থাপনার দু’বার এর চাষ করা সম্ভব। যেসব এলাকায় লবণাক্ততা বেশি থাকে সেখানে এবং লবণাক্ততা কম হলে মার্চ মাসে কাঁকড়া মজুদ করতে হবে।

ঘেরের স্থান নির্বাচন ও প্রস্তুতকরণ
কাঁকড়া চাষের ক্ষেত্রে ঘেরের স্থান নির্বাচন, আকার ও আয়তনকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে ।। গবেষণায় দেখা গেছে যে, উপযুক্ত স্থানে খামার গড়ে না তুললে তা লাভজনক হয় না।

ঘের তৈরিতে বিবেচ্য বিষয়গুলো হচ্ছে:
> বেলে দো-আঁশ বা কাদা মাটি যুক্ত এলাকায় ঘেরের স্থান নির্বাচন করতে হবে। ঘেরের আয়তন ০.২-১.০ হেক্টর হওয়া বাঞ্ছনীয়, এতে ব্যবস্থাপনার সুবিধা হয়
> কাঁকড়া ধীরে ধীরে যখন পরিপক্কতা লাভ করে অর্থাৎ দেহে গোনাড বাড়তে শুরু করে তখন এরা স্রোতে সাঁতার কাটতে পছন্দ করে। তাই খেয়াল রাখতে হবে পুকুর যেন বেশি ছোট না হয়। না হলে কাঁকড়া সাঁতার কাটার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এমন স্থানে মের নির্বাচন করতে হবে যেখানে জোয়ার ভাটায় পানি পরিবর্তন করা যায়।
>অর্থাৎ সমুদ্র বা লোনা পানির উৎস আছে এমন নদী বা খালের সাথে ঘেরের সংযোগ থাকতে হবে।
> ঘেরের পানি ঢুকানো নির্গমনের জন্য নিয়ন্ত্রণযোগ্য আলাদা গেইট করতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কাঠের তৈরি ১৭-১৮ ফুট লম্বা (২.০ ফুট চওড়া ও ২.৫ ফুট উচ্চতা) সুইস গেইট ব্যবহার সর্বোত্তম। তাছাড়া পাকা করেও সুইস গেইট তৈরি করা যেতে পারে।
> ঘের শুকিয়ে ভালভাবে চাষ দিতে হবে যাতে উপরিস্তরের মাটি ঝুরঝুরে হয়ে যায় এবং তলদেশে যাতে কমপক্ষে ৪-৫ ইঞ্চি পরিমাণ কাদা থাকে।
> কাঁকড়া মাটির নিচে গর্ভ করে যাতে বেরিয়ে যেতে না পারে এবং এ ধরণের পর্যাতনে জন্য পুরুষের চতুর্দিকে নাইলন নোট বা বাঁশের বানা তৈরি করে ঘেরের পাড়ের চারদিকে পুঁতে (০.৫ মি. নিচে) বসাতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যে, বানার উচ্চতা কমপক্ষে ১৫ মিটার ও বানার ভেতরের কাঠির ফাঁক কোন ক্রমেই যেন ০.৫ সেন্টিমিটার এর বেশি না হয়। এরপর চাষকৃত পুকুরে খনন করে সামান্য পানি উঠিয়ে নিতে হবে যেন তলদেশে সামান্য কাদার সৃষ্টি হয়।
> মাটির পিএইচ এর ওপর ভিত্তি করে চুন দিতে হবে। তবে চুন ও সার প্রয়োগের পূর্বে ৩-৪ বার জোয়ারের পানি ০.৫ মিটার উচ্চ গভীরতা পর্যন্ত ঢুকিয়ে ফ্লাশিং করে পানি আবার বের করে দিতে হবে। এতে করে মাটির অসুত্ব নিয়ন্ত্রণ সহ ক্ষতিকর দ্রব্যাদি অপসারণের সুবিধা হবে। পিএইচ ৭-৭.৫ হলে প্রতি হেক্টরে ১২৫ কেজি পাথুরে চুন প্রয়োগ করতে হবে। নিম্ন মাত্রায় পিএইচ এর ক্ষেত্রে প্রতি ০.১ মান বৃদ্ধির জন্য ৩৫ কেজি/হেক্টর হিসেবে চুন প্রয়োগ করতে হবে। কাঁকড়া চাষের জন্য পিএইচ এর উৎস মাত্রা ৭.৫-৮.৫ উত্তম চুম ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই পানি প্রবেশ করাতে হবে এবং ৭ দিন পর ইউরিয়া ২৫ কেজি/হেক্টর, টি.এস.পি ১৫কেজি/হেক্টর ব্যবহার করতে হবে। সার প্রয়োগের ৩ দিন পর ৭৫০কেজি গোবর/হেক্টর ঘেরে ছিটিয়ে দিতে হবে। গোবর প্রয়োগের ৩ দিন পর পোনা ছাড়তে হবে।
পোনা বাছাই, সনাক্তকরণ ও মজুদ
বাংলাদেশে এখনও প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর কাঁকড়ার পোনা পাওয়া যায়। এরা খুবই শক্ত প্রকৃতির প্রাণী। প্রতিকূল অবস্থায় এমনকি পানি ছাড়াও বাতাসে কমপক্ষে ৪-৫ দিন স্বাভাবিকভাবে এবং বেঁচে থাকতে পারে সেজন্য পোনা ধরার পর হতে খামার পর্যন্ত পরিবহনে তেমন কোন সমস্যা হয় না। না নির্বাচনকালীন সময়ে যেসব বিষয় গুলো বিবেচনা করতে হবে, সেগুলো হলো
> সকল, সুস্থ পোনা এবং পুরুষ স্ত্রী বাছাই করে সঠিক অনুপাতে মজুদ করতে হবে (শ্রী: পুরুষ=৯:১) মজুদ কাঁকড়ার গড় ওজন কম পক্ষে ২৫-৩০ গ্রাম হতে হবে। গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে যে, হেক্টর প্রতি ১০,০০০ (দশ হাজার) পোনা এবং স্ত্রী পুরুষ অনুপাত ৯:১ হলে ভাল উৎপাদন পাওয়া যায়।
> কাঁকড়ার পোনা মজুদের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন মোটামুটি একই আকারের হয়। নতুবা খাদ্য প্রতিযোগীতার ফলে অপেক্ষাকৃত ছোট ও দূর্বল কাঁকড়া বড়দের খাবার হিসেবে ব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অথবা আঘাত প্রাপ্তির কারণে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। খাদ্য প্রয়োগ, ব্যবস্থাপনা ও আশ্রয়স্থল নির্মাণ চিংড়ির ন্যায় কাঁকড়াও নিশাচর প্রাণী। তবে এরা জোয়ারের সময় দিনেও সাঁতার কেটে খাদ্য শিকার করে এবং সক্রিয়ভাবে বিচরণ করে থাকে। ছোট অবস্থায় অর্থাৎ শৈশবে এরা ডায়াটিন, ফার, আর্টিমিয়া ইত্যাদি খেতে পছন্দ করে। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এদের অ্যাভ্যাসেরও পরিবর্তন ঘটে। এসময়ে কাঁকড়া তার চিমটা পা দিয়ে জীবন্ত খাদ্য শিকার করে খেয়ে থাকে। মেরে ২৫-৩০ গ্রাম ওজনের কাঁকড়া মজুদ করা হয় বলে এ সময়ে তাদেরকে জীবন্ত খাবার অথবা মাংসালো খাবার সরবরাহ করতে হবে। খাদ্য প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিজের বৈষয়গুলো খেয়াল রাখা অত্যাবশক। এমন ভাবে খাবার প্রয়োগ করতে হবে যেন তা চাহিদার তুলনায় কম না হয়। অন্যথায় এবং একে অন্যকে খেয়ে ফেলবে। এক্ষেত্রে একটি ফিডিং ট্রেতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিমাণ খাবার সরবারাহ করে মাঝে মাঝে খাবারের চাহিদা নিরূপন করে নিতে হবে।
> দ্রুত বৃদ্ধির জন্য শামুক, ঝিনুকের নরম মাংস, ট্রাশ ফিস (তেলাপিয়া), ছোট চিড়ি চিংড়ির মাথা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
> সাধারণত দৈনিক মোট দেহ ওজনের ৮-১০% হারে খাদ্য সরবরাহ করলেই যথেষ্ট।
সারণি ১. কাঁকড়া চাষে ব্যবহারোপযোগী বিভিন্ন খাবারের পুষ্টিমান (Dry Weight Basis)
কাঁকড়া চাষের বেলায় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সরবরাহকৃত খাবারের সূত্র
কাঁকড়া জীবন্ত খাবার পছন্দ করে। তাই খাদ্য হিসেবে ট্রাশ ফিশ (তেলাপিয়া), শামুক/ঝিনুকের মাংস, গরু/ছাগলের নাড়িভুঁড়ি ব্যবহার করতে হবে। তবে সরবরাহকৃত খাবারে যেন কমপক্ষে ৩০-৪০% আমিষ থাকে তা নিশ্চিত করা দরকার। নিম্নে কয়েকটি খাদ্য সূত্র দেয়া হলো।
সারণি ২. কাঁকড়া চাষে ব্যবহারোপযোগী বিভিন্ন খাদ্য উপাদান, হার ও আমিষের পরিমাণ আমিষ(%)

জন্মভূমি ডেস্ক December 3, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সরকারের অনাগ্রহে ক্ষুব্ধ সাতক্ষীরাবাসী
Next Article উপকূলীয় অঞ্চলের দুঃখ

দিনপঞ্জি

December 2025
S M T W T F S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
« Nov    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

উপকূলীয় অঞ্চলের দুঃখ

By জন্মভূমি ডেস্ক 7 minutes ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

দেশের অর্থনীতিতে হাতছানি দি‌চ্ছে উপকূলের কাঁকড়া চাষ

By জন্মভূমি ডেস্ক 1 hour ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সরকারের অনাগ্রহে ক্ষুব্ধ সাতক্ষীরাবাসী

By করেস্পন্ডেন্ট 3 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাতক্ষীরা

উপকূলীয় অঞ্চলের দুঃখ

By জন্মভূমি ডেস্ক 7 minutes ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সরকারের অনাগ্রহে ক্ষুব্ধ সাতক্ষীরাবাসী

By করেস্পন্ডেন্ট 3 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভোজন রসিকদের চুই ঝাল

By জন্মভূমি ডেস্ক 13 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?