
হারুন-অর-রশীদ
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা এই দেশ একবিংশ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গ্রামভিত্তিক জনজীবন হয়ে উঠছে নগর ভিত্তিক। নগর জীবনে মানুষের চলাফেরা হয়ে উঠছে বিপদ জনক। শহরের রাস্তঘাট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কেডিএর রাস্তা দিয়ে চলা একেবারে নিরাপদ নয়। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।
সূত্র জানায়, নগরীর শেখপাড়া এলাকাটি লোহা ব্যবসায়ীদের দখলে। সিটি কর্পোরেশন লাখ লাখ টাকা খরচ করে রাস্তা নির্মাণ করেছেন জনগণের সুবিধার জন্য। সেই রাস্তা পুরাতন লোহা ব্যবসায়ীরা দখল করে ব্যবসা করছেন। নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় ইটবালি রেখে ব্যবসা করা হচ্ছে। নগর জুড়ে রেন্ট এ গাড়ির ব্যবসা। মালিকরা রাস্তার ওপর গাড়ি পার্কিং করে রেখেছেন। বিশেষ করে শিববাড়ি থেকে রয়েল মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ পাশের্^ অনেক গাড়ি দাড় করিয়ে রাখা হয়ে থাকে। কর্তৃপক্ষের ভ‚মিকা রহস্য জনক। ফলে যানবাহন ও জনগনের চলাচল ব্যবহত হচ্ছে। করোনায় বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করার পর যানজট বৃদ্ধি পেয়েছে। নেই স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব। রাস্তাঘাট খানাকন্দে ভরা। নির্মিত ড্রেনগুলো পরিস্কার করা হচ্ছেনা। ড্রেন নির্মাণ করার পর রাস্তার ওপর রেখে দেয়া হয়েছে ইটের খোলা, বালি ও অবশিষ্ট অংশ। মানুষের চলাচলে মারত্মক দুর্ভোগ হচ্ছে। অনেক জায়গায় ড্রেন নির্মাণ করা হলেও ওপরের ¯øাব নির্মাণ করা হয়নি। খানজাহান আলী রোডের দু’ পাশের্^, কেডিঘোষ রোড ও সাবেক ওয়াসা কার্যালয় থেকে শুরু করে রূপসা পর্যন্ত রোডের দু’পাশের্^ ড্রেনের ¯øাব ভেঙ্গে ফাঁকা হয়ে গেছে। নিরাপত্তা হিনতার মধ্যে দিয়ে জনসাধারণের চলাচল করতে হয়। নির্মাণ সামগ্রী রাস্তার ওপর রেখে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। ঝুঁকির মধ্যে জনসাধারনকে চলাচল করতে হয়। ড্রেনের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য সয়লাভ হয়ে থাকে। ময়ুর নদের পানি পচে দুর্গান্ধ ছড়াচ্ছে। জোয়ার ভাটা নেই। ময়লা আবর্জনা বোঝাই। মশার প্রজনন খামারে পরিনত হয়েছে। খুলনা থানার মোড়ে বসে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবৈধ মাছ বাজার। ফলে সৃষ্টি হয়েছে যানজট। ২১নং ওয়ার্ডে রয়েছে বেদে পল্লী ও গ্রীণ ল্যান্ড আবাসন প্রকল্প এলাকা। এখানে রয়েছে অনেকগুলো ডোবা ও নর্দমা। আবাসিক এলাকায় রয়েছে বস্তি। এই বস্তি বাসিদের জীবনমান অনুন্নত। ডোবায় রয়েছে ময়লা আবর্জণা। মশার প্রজনন খামার। ক্লে রোডের ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করা হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারছেন। খানজাহান আলী রোডের ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে। পথচারীদের পথ চলতে নানামুখি সমস্যা হচ্ছে।
রূপসী রূপসা ও ভৈরব নদের নদীর তীর ঘেষে গড়ে ওঠছে নগরী। এই নদীর তলদেশ পালি পড়ে ভরে উঠছে। সামান্য জোয়ার এলেই নদীর পানি শহরে প্রবেশ করে নদী সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রূপসা, বটিয়াঘাটা ও দিঘলিয়ার নি¤œ এলাকা তলিয়ে যায়। শহরে নির্মাণ করা হচ্ছে উচু ভবন হচ্ছে। পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনটি রয়েছে অরক্ষিত। রাতের আধারে হচ্ছে অসামাজিক কর্মকান্ড। শিশুদের বড় একটি অংশ রয়েছে সুবিধা বঞ্চিত। এদের অনেক সময় টোকাই বলা হয়। এরা রাতে রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট, বাস টার্মিনালে ও ফুটপাতে খোলা আকাশের নিচে ঘুমায়। এদের পুনর্বাসন করা প্রয়োজন। নগরীতে ৪৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ভবন রয়েছে। এতে অনেকে জেনে শুনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। এই সব ভবনে রয়েছে ধর্মীয় ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। এই ভবনের মালিক জেলা প্রশাসক ও ব্যক্তি মালিকানাধিন। অনেকে মালিক দাবি করে আদালতে মামলা করে রেছেন। ফলে আইনের জটিলতায় এই পুরাতণ ভবন অপসরণ করা হচ্ছেনা। বস্তিগুলোর জীবন যাত্রার মান অনুন্নত। উপক‚লীয় অঞ্চল হতে অনেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে শহরে এসে নানা পেশায় যুক্ত হয়েছেন। ফলে বাড়ছে মানুষের চাপ।
মানুষের জীবন যাত্রায় পরিবর্তন আসায় শহর মুখি হয়ে পড়ছে। গল্লামারী থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগী নিয়ে আসা মো. আ. হাকিম বলেন, কেডিএর রাস্তাগুলো ব্যবহরের অনুপযোগি। অনেক সুস্থ লোকও রোগী হয়ে যায়। এই রাস্তাগুলো সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করলে দ্রæত উন্নয়ন হতো। করোনা সংক্রমণের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বন্ধী জীবন যাপন করছে। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে এখনো ঝুলছে তালা।
সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা নূরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ময়ূর নদ খননেন পরিকল্পনা রয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই ফুটপাত ও রাস্তা অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আভিযান পরিচালনা করা হবে। আইনের জটিলতার কারণে পুরনো ভবন অপসরণ করা যাচ্ছেনা।