হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল : নড়াইলে মন্দিরের সম্পত্তি রক্ষায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে হিন্দু অধ্যুষিত সিংগাশোলপুর ইউনিয়নের বড়কুলা এলাকাবাসি। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ওই এলাকায় গেলে স্থানীয়রা জানান নড়াইল সদর উপজেলার ঐহিত্যবাহী টেংরাখালি হাজরাতলা মন্দিরের জায়গা দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে একটি ভূমিদস্যু চক্র। জাল দলিলের মাধ্যমে তারা মন্দিরের জমি গ্রাস করতে চায় বলে স্থাণীয় হিন্দু নেতারা অভিযোগ করেন।
নিরুপায় হয়ে তারা শনিবার দুপুরে এলাকাবাসীর আয়োজনে মন্দির চত্বরে সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। হাজরাতলা মন্দির কমিটির সভাপতি তপন কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নড়াইল জেলা কমিটির আহবায়ক কল্যাণ মুখার্জী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন-কলেজ শিক্ষক প্রশান্ত সরকার, বিএনপি নেতা ওমর ফারুক, সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কবির হোসেন মোল্যা, বিছালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী হাসরাত, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম, ইউপি সদস্য মুশফিকুর রহমান, উৎপলেন্দু বিশ্বাস প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, মন্দিরের কোনো জায়গা-জমি কেউ দখল করে নিবে; সেটা আমরা মেনে নেবো না। আমরা সবাই মিলেমিশে থাকতে চাই। স¤প্রীতি বজায় রাখতে চাই। আশা করি টেংরাখালি হাজরাতলা মন্দিরের জায়গা দখলের অপচেষ্টা দ্রুত সমাধান হবে। আমরা সব ধর্মের লোক এবং রাজনৈতিক নেতারা কোনো জমি দখলের চেষ্টা মেনে নেবো না।
মন্দির কমিটির সভাপতি তপন কুমার বিশ্বাস জানান, সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের বড়গাতী-বড়কুলা মৌজার খাস খতিয়ানভূক্ত ৮৬৮ দাগে মোট জমির পরিমাণ ৪ দশমিক ২৪ একর। তৎকালীন জেলা প্রশাসক ভূমিহীন গোলক চন্দ্র সিকদারকে এক দশমিক ১৬ একর জমি বন্দোবস্ত দেন। বাকি জমি মন্দির কমিটি ভোগ দখল করে আসছেন। আমাদের অজান্তে এলাকার বাবু রাম রায় নামে জনৈক ব্যক্তি জমিদারদের কাছ থেকে দাখিলা মূলে জমি খরিদ করেন এই মর্মে দাবি করে ওই জমি দখল নিতে যান। তখন এলাকার মানুষ বাধা দেন। পরে বিমল কৃঞ্চ মল্লিক বাদী হয়ে সরকার পক্ষে মামলা করেন। মামলায় বাবু রাম হেরে যান। বাবু রাম রায়ের জীবদ্দশায় তার চাচাতো ভাই শরৎ চন্দ্র রায় পাশের ভদ্রবিলা ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা গ্রামের ফসিয়ার শেখ ও হালিম শেখকে ওই জমি লিখে দেন। তারা মামলায় হেরে গেলে উচ্চ আদালতে (হাইকোর্ট) আপিল করেন। আদালত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তদুপরি ভূমিদস্যুরা হাল ছাড়েনি। তারা ওই জমি দখলে নিতে তথা কথিত কতিপয় নামধারি বিএনপি নেতা-কর্মীকে বিশেষ কায়দায় ম্যানেজ করেছে। ওই চক্রটির অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে তারা জমি গ্রাস করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায় ওই এলাকার হিন্দ্র সম্প্রদায়ের মধ্যে অজানা আতংক বিরাজ করছে। তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নড়াইলে মন্দিরের সম্পত্তি রক্ষায় সমাবেশ
Leave a comment