হুমায়ুন কবীর রিন্টু , নড়াইল: নড়াইল সদর উপজেলার কালনা-যশোর সড়কের পাশের সরকারি গাছ নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১মে) হতে দু’পক্ষের মধ্যে মহড়া চলছে। জানা গেছে, নড়াইল শহরের দু’পাশে কালনা-যশোর সড়ক প্রশস্ত করনের জন্য নড়াইল শহরের দু’পাশে মিলে ৭ কিলোমিটার সড়কের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে কাজ হচ্ছে। গাছগুলি কেটে সড়কের পাশেই রাখা হচ্ছে। গাছের জ্বালানি অংশ বিক্রি করে গাছ কাটা সহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ করার কথা হয়েছে বলে জানান জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন সাহা। আর গাছের লগ গুলি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নিলামে বিক্রি করা হবে। মেহগিনি,বাবরা,রেন্ট্রি,গামারী সহ বিভিন্ন প্রকার ছোট বড় গাছ রয়েছে। এসব গাছ হতে কিছু গাছ বিক্রি করে নেয়ার আবদার করে কিছু উচ্ছৃংখল যুবক। কিন্তু তাতে আপত্তি জানান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন কুমার সাহা। তারা বলেন গাছগুলি সরকারি। তাই কোন ভাবে এ গাছ দেয়া যাবে না। আইনগত প্রক্রিয়ায় নিলামে বিক্রি করতে হবে। এ নিয়ে উচ্ছৃংখল যুবকেরা শুক্রবার (১২মে) দুপুরের দিকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন কুমার সাহার সাথে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করে। আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করে হুমকি দেয়। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন কুমার সাহা দু’জনেই নড়াইল শহর সংলগ্ন আউড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাদের সাথে খারাপ আচরনের ঘটনা মুহুর্তের মধ্যে আউড়িয়া এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। অল্প সময়ের মধ্যে কয়েক’শ নারী পুরুষ হাতে দেশিয় অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে শহরের দিকে ধাবিত হয়। এদিকে শহরের ও কিছু বহিরাগত উচ্ছৃংখল যুবকেরা রাসেল সেতুর পশ্চিম প্রান্তে নড়াইল পৌরসভার সামনে অবস্থান নেয়। আউড়িয়া এলাকা হতে আসা আক্রমনাত্নক গণমিছিল রাসেল সেতু’র পূর্ব প্রান্তে পৌছালে পুলিশ গিয়ে বাঁধা দেয়। পুলিশি বাঁধায় আউড়িয়া ইউনিয়নের জনগন শহরে প্রবেশ করতে না পারায় বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। এ সময় পুলিশিং এ্যাকশনের কারনে মারমুখি দু’টি পক্ষ চুপসে যায়। তবে একটি সূত্রের দাবি জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন সাহা গোপনে বেশ কিছু গাছ বিক্রি করেছেন। সে সব গাছ গোপনে সরিয়ে নেয়া হচ্ছিল। সেই গাছ সাজু ও রনি নামের যুবকেরা আটক করলে তাদের সাথে প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন সাহা’র হাতহাতির ঘটনা ঘটে। প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন সাহা বলেন, সাজু ও রণি উচ্ছৃংখল সন্ত্রাসী। তারা কিছু গাছ বিক্রি করে নিতে চায়। সে সুযোগ না দেয়ায় তারা ঝামেলা করছে। এ উচ্ছৃংখল যুবকদের প্রশ্রয় দেয় নড়াইল পৌর কাউন্সিলর কাজী জহিরুল হক। কাজী জহিরুল হক এ অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, তিনি কোন উর্চ্ছংখল যুবকদের প্রশ্রয় দেন না। বরং জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন সাহা গাছ নিয়ে কিছু যুবকের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে যায়। তাদের সাথে তার ঝামেলা হয়েছে। এটা তাদের মধ্যকার ব্যাপার। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, সড়কের পাশের কোন গাছ কাউকে বিনামূল্যে দেয়ার সুযোগ নেই। বিধি মোতাবেক বিক্রি করতে হবে। অথচ এ গাছ নেয়ার জন্য কতিপয় যুবক অদৃশ্য শক্তিবলে পেশি শক্তি ব্যবহার করে গাছ নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করেছে। সে কারনে ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ সুপার অবিহত হয়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন।
নড়াইল সদর থানার ওসি ওবায়দুর রহমান বলেন,দু’পক্ষকে বুঝিয়ে নিবৃত করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত।
নড়াইলে সরকারি গাছ নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে
Leave a comment