নড়াইলের চিত্রা নদীতে এসএম সুলতান নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত

হুমায়ুন কবীর রিন্টু, নড়াইল : বিশ্ব বরেণ্য চিত্র শিল্পী এসএম সুলতানের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নড়াইলের চিত্রা নদীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএম সুলতান নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা তিনটার দিকে নড়াইলের চিত্রা নদীর পুরাতন ফেরিঘাটের শেখ রাসেল সেতুর নীচে দাঁড়িয়ে এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন খুলনা রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশনস) মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান পিপিএম। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ বাইচ দেখতে পাশের জেলাগুলিসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে নানা শ্রেণীপেশার মানুষের ডল নামে। চিত্রা’র দুপাড়ে মানুষের ভীড়ে মুখরিত হয়ে উঠে। জেলা প্রশাসক ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধূরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার মোসা: সাদিরা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাশ্বতী শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আনোয়ার হোসেন, নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, নড়াইল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার,সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেলিম আহমেদ, নেজারত ডেপুটি (এনডিসি) আছিফ উদ্দিন মিয়া, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর রিন্টু । নড়াইল পুরাতন ফেরিঘাটের শেখ রাসেল সেতু হতে শুরু হয়ে মাছিমদিয়ার এসএম সুলতান সেতু পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার বাইচে অংশ নেয় কালাই নৌকা ১০টি, টালাইয়ের ৪টি নৌকা। মোট পাঁচটি টানে বাইচ শেষ হয়।
পুুরুষদের কালাই গ্রুপে গোপালগঞ্জের মা শীতলা প্রথম, যশোরের কোতয়ালির আব্দুল কাদের দ্বিতীয় ও ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গার নিছার এক্সপ্রেস তৃতীয় হয়েছে।
টালাই গ্রুপে মাগুরা সদরের আকরাম খানের নৌকা প্রথম, খুলনার তেরখাদা উপজেলার দিদার মোল্যার ভাই ভাই জলপরি দ্বিতীয় ও গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়ার জয় মা কালি তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
বিজয়ী টালাই ও কালাই গ্রুপের প্রথম স্থান অধিকারী নৌকার মালিককে ৬০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী নৌকার মালিককে ৪০ হাজার টাকা ও তৃতীয় স্থান অধিকারি নৌকার মালিককে ২০ হাজার টাকা করে পুরস্কার দেয়া হয়।
নারীদের প্রথম স্থান অধিকারী নৌকাকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়। নারীদের অন্যান্য বিজয়ীদের ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। এছাড়া অংশগ্রহণকারী সকল নৌকার মালিককে সান্তনা পুরস্কার হিসেেেব ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।
এছাড়া প্রতিটি অংশগ্রহণকারী নৌকাকে ৫ হাজার টাকা করে শান্তনা পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া নারী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিদের ১ম অধিকারীর জন্য ১০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য অংশগ্রহনকারী নৌকাকে ৫ হাজার টাকা করে পুরস্কারের প্রদান করা হয়েছে। এদিকে নৌকাবাইচকে ঘিরে বাঁধাঘাট, চরের ঘাট আর পঙ্কবিলা ঘাটে মেলা বসে। মেলায় নানা ধরনের পসরা, নাগরদোলা, চরকি এবং শিশুদের নানা ধরনের বিনোদনমুলক উপকরন দর্শকদের দৃষ্টি কাড়ে। বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধের আগমনে এ নৌকাবাইচ মিলন মেলায় পরিণত হয়।